রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যা : তারুণ্যের ভাবনা

আত্মহত্যার একটি প্রাচীন ও মনস্তাত্ত্বিক বিষয়। তবে একবিংশ শতাব্দীতে এসে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দিন যতই যাচ্ছে শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার পরিসংখ্যানও বাড়ছে। এভাবে চলতে থাকলে আত্মহত্যা মহামারি আকারে পরিণত হবে। আজকের শিক্ষার্থীরাই দেশ ও জাতীয় আগামীর কর্ণধার। শিক্ষার্থীদের রয়েছে অপার সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ। তারপরও কেন তারা আত্মহত্যার মতো মারাত্মক অপরাধে ক্রমেই ঝুঁকছে! এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের মতামত তুলে ধরেছেন শিক্ষার্থী মো. সাইফুল মিয়া ও আয়েশা সিদ্দিকা মেঘলা
নতুনধারা
  ২২ জুলাই ২০২৩, ০০:০০

জীবনের জন্য স্বপ্ন, স্বপ্নের জন্য জীবন নয়

সেলিম রেজা, কৃষি অনুষদ, শেরেবাংলা কৃষিবিশ্ববিদ্যালয়

আমাদের দেশের বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় তরুণদের আত্মহত্যার প্রধান কারণ ক্যারিয়ার নিয়ে হতাশা। বিশ্বের অন্যান্য দেশের শিক্ষার্থীরা যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয় জ্ঞানার্জন ও গবেষণার জন্য সেখানে আমাদের দেশের একজন তরুণ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয় একটি ভালো চাকরির আশায়। বর্তমান সমাজ আমাদের মধ্যে সরকারি চাকরির প্রতি যে উচ্চাকাঙ্ক্ষা তৈরি করেছে তার জন্য ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে এক অসুস্থ প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি অনেক শিক্ষার্থী মাদকের সঙ্গে জড়িত। তারা মাদকাসক্তির এতটা গভীরে চলে যায় যে এর থেকে ফেরার পথ হিসেবে মৃতু্যকে শেষ অবলম্বন হিসেবে গ্রহণ করে নেয়। এ ছাড়া অনেক ক্ষেত্রে দরিদ্রতা, পরীক্ষায় ব্যর্থতা, পারিবারিক কলহ, প্রেমে ব্যর্থতা আত্মহত্যার কারণ হিসেবে দেখা দেয়। এ সমস্যা থেকে মুক্তির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পদক্ষেপ নিতে হবে। ছাত্র-শিক্ষকদের মধ্যে সম্পর্ক উন্নত করতে হবে। শিক্ষক যেন একজন ছাত্রের স্বপ্ন গড়ার কারিগর হন।

কৌশলী হতে হবে

মাসিয়াত জাহিন, পুরকৌশল বিভাগ, বুয়েট

১৯৮৭ সালে এমিল ডুর্খেইম তার 'সুইসাইড' বইতে প্রথম দেখিয়েছিলেন আত্মহত্যার কার্যকারণ কীভাবে ব্যক্তির অনুভূতিনির্ভর না হয়ে সমাজনির্ভর হতে পারে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তরুণদের আত্মহত্যা নিয়ে কথা বলতে হলে এই বিষয়টার দিকে নতুন করে আলোকপাত করতে হয়। আমাদের দেশে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটলে সেখানে আত্মহত্যাকে ব্যক্তির মানসিক শক্তি থাকা না থাকার একটি ফলাফল হিসেবে দেখা হয়। তরুণদের প্রধান করে যদি আলোচনা করা হয় তবে ডুর্খেইমের প্রকারভেদগুলোর মধ্যে এনোমিক সুইসাইডের বিষয়টি প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠে। ব্যক্তিগত সাফল্যকে সমাজে অতি উৎসাহিত করার ফলে এর মাধ্যমে তৈরি হয় ব্যক্তিকেন্দ্রিক দর্শন। ব্যক্তির সঙ্গে সমাজের বিচ্ছিন্নতা তৈরির ফলে যে কোনো ব্যর্থতায় সে অভিভূত হয়ে জীবনের অর্থ ও গতি হারিয়ে ফেলতে পারে। আমাদের দেশে তরুণদের আত্মহত্যার ক্ষেত্রে মানসিক শক্তিকে দায়ী করার প্রবণতা যেমন- সমস্যাজনক, তেমনিভাবে ব্যক্তির প্রতি সহনশীলতা হওয়া ও তার ব্যক্তিগত হতাশা কাটিয়ে ওঠার জন্য পাশে থাকাকে এ সমস্যার সমাধান ভাবাও বোকামি। আত্মহত্যার মতো জটিল সমস্যা সমাধানের জন্য এর কার্যকারণের ব্যাপারে কৌশলী হওয়া জরুরি।

হতাশ হওয়া যাবে না

নিশাত জাহান বর্ষা, ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

আত্মহত্যার পেছনে সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ পাওয়া যায় না। করোনা মহামারিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০১ জন শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ছাত্রদের আত্মহত্যার কারণ বাইরে থেকে যা দেখা যায় সমস্যা তার চেয়েও গভীর। তরুণদের হতাশার পেছনে মাদকাসক্তি, প্রেমে ব্যর্থতা, পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হওয়া, প্রতারণা, ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তাকে কারণ হিসেবে দেখা হয়। এগুলো একপর্যায়ে মৃতু্যর দিকে ঠেলে দেয়। এ থেকে পরিত্রাণের জন্য সাইকোথেরাপি প্রয়োজন। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে কথা বলার ও আবেগ ভাগাভাগির পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে। আত্মহত্যাপ্রবণ ব্যক্তিকে অবহেলা না করে তার কথা শুনে সমস্যার সমাধান করতে হবে। এ ছাড়া স্কুলের পাঠ্যক্রমে মানসিক স্বাস্থ্যের কথা উলেস্নখ করতে হবে। ব্যর্থতার পরেই সফলতা আসে তাই অল্পতেই হতাশ হওয়া যাবে না।

মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে

মোস্তফা মাহমুদ সৈকত, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার অন্যতম কারণ আত্মতুষ্টির অভাব। এ সময় শিক্ষার্থীদের মধ্যে নানা রকমের মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়। সম্প্রতি কিছু গবেষণায় দেখা যায় তরুণরা পরিবার থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সময় বেশি প্রদান করে। এতে পরিবারের সঙ্গে মানসিক চাপ ভাগাভাগি করা সম্ভব হয় না। এ মানসিক চাপ থেকেই হতাশা তৈরি এবং পরবর্তীতে আত্মহত্যার প্রবণতা গড়ে ওঠে। এ ছাড়া সামাজিক মাধ্যমের অপব্যবহার, নৈতিক অবক্ষয়, ধর্মীয় অনুশাসন মেনে না চলাও আত্মহত্যার প্রবণতার অন্যতম কারণ।

এ থেকে বাঁচতে হলে পারিবারিক বন্ধন মজবুত করতে হবে। একাকিত্ববোধ রোধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর ব্যবহার কমিয়ে পরিবারকে সময় দেওয়ার পাশাপাশি ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলতে হবে। জীবনের সফল হতে হলে পরিশ্রমী হতে হবে। পাশাপাশি মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে হবে। শারীরিক স্বাস্থ্যের মতো মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।

আত্মহত্যা কোনো সমাধান নয়

মবিন খান জয়, হিসাববিজ্ঞান বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

কেউ স্বেচ্ছায় আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় না। সবাই নিজেকে সর্বোচ্চ ভালোবাসে। তারপরও যখন মানুষ হতাশার চরম পর্যায়ে পৌঁছে যায়, তখন জীবনের প্রতি ভালোবাসা কমে যায়। মনে হয়, সব প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়, জীবনের যোগফলও মেলে না। আত্মহত্যাকেই একমাত্র সমাধান মনে হয়। কিন্তু আত্মহত্যা কোনো সমাধান নয়। তাই আত্মহত্যা রোধে আমাদের সবার সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। চারপাশের কেউ যেন হতাশার চরম পর্যায়ে না পৌঁছায় সেদিকে তার নিকটজনদের খেয়াল রাখতে হবে। কঠিন পরিস্থিতিতে মানসিক সাহস ও সহযোগিতা করতে হবে। সবাইকে বাল্যকাল থেকে সফলতার পাশাপাশি হতাশাকে মেনে নিতে শিখতে হবে এবং যে কোনো পরিস্থিতিতে জীবনকে উপভোগ করতে হবে। আত্মহত্যার হাজারো কারণ থাকতে পারে কিন্তু না করার একটাই কারণ তা হচ্ছে- বাঁচতে হবে এবং বেঁচে থেকেই সব সমস্যার সমাধান করতে হবে।

বেঁচে থাকাই বড় সফলতা

মাহবুবা পারভীন রিতু, সমাজতত্ত্ব বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

নিজের জীবনকে নিজেই বিসর্জন দেওয়ার নাম আত্মহত্যা। পৃথিবীতে মানুষ জন্মগ্রহণ করে, তার উদ্দেশ্য থাকে সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার, সফলতা অর্জন করা, নিজের জীবনকে সাফল্যের স্বর্ণশিখরে পৌঁছানো। তবে এই বেঁচে থাকার পথ মসৃণ নয়। জীবনে নানা প্রতিকূলতা আসে, মানুষ নানা ঘাত-প্রতিঘাতের সম্মুখীন হয়। তবে এ কারণে সব থেকে বেশি আত্মহত্যার প্রবণতা দেখা যায় তরুণদের মধ্যে। পড়াশোনার চাপ, ব্যক্তিগত, সামাজিক ও পারিবারিক জীবনে সমস্যা, প্রেম, পরকীয়া, বেকারত্ব ইত্যাদির কারণে মানুষ বিষাদগ্রস্ত হয়ে পড়ে। হতাশা তাদের গ্রাস করে তারা ভাবতে থাকে পৃথিবীতে তাদের প্রয়োজন নেই তখনই মাথায় আত্মহত্যার চিন্তা আসে এবং তারা আত্মহত্যা করে। নিজের সুন্দর জীবনের ইতি টানে। আত্মহত্যা কোনো সমাধান নয়। বেঁচে থাকাই বড় সফলতা। জীবনে চরম হতাশার মধ্যদিয়ে গেলেও আত্মহত্যার চিন্তা মাথায় আনা যাবে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ে মানসিক স্বাস্থ্য কাউন্সিল গঠন করা জরুরি

শাহাবুদ্দিন হৃদয়, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য একটি ক্রমবর্ধমান গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আগের চেয়ে অধিক উদ্বেগ, বিষণ্নতা এবং অন্যান্য মানসিক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। অনেকে বিষণ্নতায় ভুগে পড়ালেখা থেকে ছিটকে যাচ্ছে, আবার কেউ কেউ বেঁচে নিচ্ছে আত্মহত্যার পথ। কিন্তু আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের বিকাশে তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। এতে শিক্ষার্থীরা হতাশা, মানসিক অবসাদ, বিষণ্নতা ইত্যাদিতে ভুগলে তা প্রতিরোধে উপযুক্ত সেবা ও পরিবেশ কোনোটিই পায় না। তাই প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে মানসিক স্বাস্থ্যের বিকাশে কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা ও এর জন্য অবকাঠামো গঠন এখন সময়ের দাবি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মানসিক স্বাস্থ্য কাউন্সিল গঠন করে নিয়মিত ক্যাম্পেইন, ওয়ার্কশপ, সেমিনার ইত্যাদির মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্য ও কাউন্সেলিংয়ের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিশেষজ্ঞ সাইকোলজিস্ট নিয়োগ করতে হবে।

নৈতিক শিক্ষার গুরুত্ব দিতে হবে

সাবিনা চৌধুরী, রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

ধর্মীয় জ্ঞানহীন, নৈতিকতা বিবর্জিত ছলনাময় প্রেম ভালোবাসার মুখোশে আধুনিকতার অন্তরালে ভোগ-বিলাসের পাতানো ফাঁদের ভয়ংকর রূপ হিসেবে প্রকট আকার ধারণ করে তরুণ ও ছাত্রসমাজকে আত্মহত্যার পথে ধাবিত করছে। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের মেধাবী শিক্ষার্থীরাও আজ এই করাল গ্রাসে পতিত যার ফলে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী অচিরেই হারিয়ে যাচ্ছে পরিবার-পরিজনকে নিঃস্ব করে। আত্মহত্যা অনেক কারণের পিছনে সমকালীন সম্পর্ক অন্যতম। আত্মহত্যার কখনোই প্রেম-ভালোবাসার পরিণতি হতে পারে না। ভালোবাসায় স্নিগ্ধ হৃদয় মানব চরিত্রের উৎকর্ষতা সাধন করে, সামনে এগিয়ে চলার অনুপ্রেরণা জোগায়। ভালোবাসা বাঁচতে এবং বাঁচাতে শেখায়। আদি মানব আদম-হাওয়ার ভালোবাসার স্রোতধারায় মানবসভ্যতার বিস্তার। প্রেম-ভালোবাসাহীন মানুষ পশুর নামান্তর। তাই কোমল, শান্ত, স্বস্তি ও মায়াময় ভালোবাসায় উজ্জীবিত হোক আমাদের জীবন।

হতাশামুক্ত থাকতে হবে

ইউনুছ আলী, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার সংবাদ অহরহ দেখা যাচ্ছে। সর্বশেষ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের এক ছাত্রীর আত্মহত্যা সারা দেশে আলোচিত। শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার পিছনে প্রধান কারণ হতাশা। বিভিন্ন এটি মানুষকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যায়। একপর্যায়ে আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দেয়। ব্যক্তিগত হতাশার পিছনে অন্যতম কারণ হলো প্রেম-ভালোবাসায় ধোঁকা। বর্তমান সমাজে প্রেম-ভালোবাসা একটা স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু এসব প্রেম-ভালোবাসার বেশির ভাগই একপর্যায়ে গিয়ে টেকে না। ফলে তারা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে এসব কষ্ট হতাশা সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। সুতরাং আত্মহত্যা রোধে আমাদের হতাশামুক্ত জীবন পরিচালনা করতে হবে। দুঃখ-কষ্ট জীবনের অংশ। সব প্রতিকূল মুহূর্ত সাহসের সঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে। প্রয়োজনে পরিবার কিংবা নিকটাত্মীয় কারও পরামর্শ দেওয়া যেতে পারে। তবুও হতাশ হওয়া যাবে না।

শিক্ষকদের শিক্ষার্থীবান্ধব হতে হবে

নাসরিন সুলতানা হিরা, বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

শিশুকালে বাচ্চাদের উপর বাবা-মায়ের প্রভাব যেমন বেশি থাকে, কৈশোরে সেই দায়িত্ব বর্তায় শিক্ষকদের ওপর। তাই শিক্ষার্থীদের মানসিক গঠনে তাদের দায়িত্ব এবং কর্তব্যও বেশি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উচিত ছেলেমেয়েদের প্রতি আরও বেশি যত্নবান হওয়া, খোঁজখবর রাখা। ভালোমন্দ যাই ঘটুক, সেটি জীবনেরই অংশ। আত্মবিশ্বাস না হারিয়ে ধৈর্যশীল হতে হবে, জীবনটা অনেক মূল্যবান। শ্রেণি শিক্ষকের পাঠদানের পাশাপাশি আত্মহত্যা থেকে বাঁচতে বিভিন্ন সেমিনারের আয়োজন করার দিকে বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন। তাছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের প্রতি শিক্ষক কর্মচারীদের আচরণ ও পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নে কৌশলী ও সহানুভূতিশীল হওয়া প্রয়োজন। বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক সাংঘর্ষিক না হয়ে সহযোগিতামূলক ও আদর্শিক করে তুলতে হবে। উপরোক্ত বিষয়গুলো যথাযথ প্রয়োগ করতে পারলে, আমাদের শিক্ষার্থীদের অকালে ঝরে পড়া

রোধ করা সম্ভব।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে