বিজয়ের মাস ডিসেম্বর, এ শব্দটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে আমাদের গর্ব, অহংকার আর গৌরব। বিজয় শব্দটা শুনলেই আনন্দে বুক ভরে উঠে। তবে আমাদের বিজয়ের পেছনে লুকিয়ে আছে অসংখ্য তারুণ্যের আত্মত্যাগ, যারা পাকিস্তানের অন্যায়, অত্যাচার, দুঃশাসন থেকে জাতির মুক্তির জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন। প্রতিটি বিজয়ের পেছনে থাকে বৃহৎ সংগ্রামের ইতিহাস।
দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে পরাভূত হয় পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী। যার ফলে আমরা পেয়েছি এই লাল-সবুজের পতাকা। বিশ্বের বুকে আবির্ভূত হয় একটি নতুন রাষ্ট্র বাংলাদেশ। মুক্তিযুদ্ধে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছিল দেশের তরুণ সমাজ। মুক্তিযুদ্ধের মূলনীতি ছিল সাম্য, সবার অধিকার রক্ষা, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা। এই দেশের আছে নানা অর্জন, সফলতা। তবুও যেন কিছু প্রশ্ন থেকেই যায়। আমরা কী পেরেছি ৩০ লাখ শহীদের সম্মান রক্ষা করতে? পেরেছি কী সাধারণ মানুষের অন্ন, বস্ত্র, চিকিৎসা, বাসস্থানের মতো মৌলিক চাহিদাগুলোকে পূরণ করতে?
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আমরা আজও পারিনি পাল্টাপাল্টি রেশারেশি পরিত্যাগ করে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে স্বাধীনতা রক্ষার্থে কাজ করতে। রাজনৈতিক রোষানলে প্রাণ হারিয়েছে হাজারো সাধারণ জনতা। দেশ স্বাধীনের ৫০ বছর পূরণের ক্রান্তিলগ্নে এসেও দেশকে সাক্ষী হতে হচ্ছে হত্যা, ধর্ষণের মতো জঘন্য ঘটনার। নিরাপত্তাহীনতায় আজও ভুগছে দেশের সব স্তরের মানুষ। প্রতিষ্ঠিত হয়নি মানুষের অধিকার।
তবুও বিজয়ের আনন্দ আর স্বাধীনতাকামী আত্মত্যাগী শহীদদের লাখ অর্জনে স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ার আশা ও প্রচেষ্টা থাকবে তারুণ্যের অন্তরে সার্বক্ষণিক। গভীর শ্রদ্ধা জানাই সেই সব বীরের প্রতি। আমরা সেই বীরদের আত্মত্যাগের কথা কোনো দিন ভুলব না।
হোসনে সাদিয়া নিতু
মনোবিজ্ঞান বিভাগ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
সদস্য, জেজেডি ফ্রেন্ডস ফোরাম।