সম্প্রতি ইলন মাস্কের কোম্পানি টেসলা বাজারে এনেছে সাইবার ট্রাক। ব্যতিক্রমী ডিজাইনের এই গাড়ির তিনটি সংস্করণ বাজারে এসেছে। সর্বনিম্ন ৬০ হাজার মার্কিন ডলার থেকে শুরু হবে এর দাম। ব্যাটারিচালিত এবং শক্তিশালী এই গাড়ি নিয়ে মানুষের মনে তৈরি হয়েছে কৌতূহল। তাই ব্যতিক্রমী এই গাড়ি সম্পর্কে

জানব আজকে।

সাইবার ট্রাক কী? : টেসলার সাইবার ট্রাক এক ধরনের ব্যাটারিচালিত বৈদু্যতিক পিকআপ ট্রাক। ২০১৯ সালে ঘোষণা দেওয়া এই গাড়ি কোল্ড-রোল্ড স্টেইনলেস স্টিলের এক্সোস্কেলটন এবং সাঁজোয়া কাচ দিয়ে তৈরি। গাড়িতে ছয়জন যাত্রীবহন করতে পারে এবং তাদের লাগেজ বসাতে পারে।

সাইবার ট্রাকের অন্যতম আকর্ষণ এর ডিজাইন। এর ত্রিভুজাকৃতির ধারালো কোনার স্টেইনলেস স্টিল ডিজাইন সচরাচর গাড়িগুলোতে দেখা যায় না। সাইবারট্রাকের দরজায় হাতল দেননি ইলন মাস্ক। তার বদলে গাড়ির বি-পিলারের জানালার প্রান্ত বরাবর একটি ছোট বোতাম রয়েছে, সেখানে ক্লিক করে দরজা খোলা যাবে।

ভাসমান পানির কণা থেকে বিদু্যৎ

যা যা থাকছে :

স্টেইনলেস-স্টিল এক্সোস্কেলটন ডেন্ট : সাইবার ট্রাকে ব্যবহার করা হয়েছে অতি শক্তিশালী স্টেইনলেস-স্টিল। অত্যন্ত টেকসই এই ধাতু শক্তিশালী আঘাতের বিরুদ্ধেও টিকে থাকতে পারে।

আর্মার গস্নাস : টেসলার ট্রাকে ব্যবহার করা গস্নাসগুলোও অত্যন্ত শক্তিশালী। আর্মার গস্নাস ৭০ মাইল বেগে আসা শিলাবৃষ্টিতে অথবা বেসবলের আঘাত সহ্য করতে পারে। তবে গাড়ির চালকের দৃষ্টিতে কোনো প্রকার বাধাগ্রস্ত হবে না। যদিও এর আগে টেসলার সাইবার ট্রাকের গস্নাস জনসম্মুখে পরীক্ষা করার সময় ভেঙে পড়েছিল।

অ্যাডাপটিভ এয়ার সাসপেনশন : সাইবার ট্রাক প্রয়োজন অনুসারে সাইবারট্রাকের রাইডের উচ্চতা সামঞ্জস্য করতে দেয়। উঁচু-নিচু রুক্ষ ভূখন্ডে গাড়ি চালাতে গাড়ির উচ্চতা বাড়ানো এবং কমানো যায়। ট্রাকটিতে সর্বোচ্চ ১৬ ইঞ্চি গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স আছে।

উচ্চ গতি : সাইবারট্রাক ২.৬ সেকেন্ডে প্রায় ০-৬০ মাইল ঘণ্টায় যেতে পারে। গাড়িটির তিনটি মোটর ৮০০ হর্স পাওয়ার পর্যন্ত শক্তি তুলতে পারে। তবে গাড়িটির ব্যাটারি সংখ্যা বৃদ্ধি করলে গতি আরও বাড়ানো যাবে।

ধারণক্ষমতা : টেসলার এই সাইবার ট্রাকের ধারণক্ষমতা ১১৩৪ কেজি। ১১,০০০ পাউন্ড পর্যন্ত সর্বোচ্চ ভর বহন করতে পারবে গড়িটি। টেসলার সাইবার ট্রাকের কার্গো বেডটি অন্য ট্রাকগুলোর মতো খোলা নয়। ওপরে কারের মতো দরজা আছে, যা সরালেই কার্গো বেডটি দেখা যাবে। এখানে ট্রলার, নৌকাসহ ভারী ভারী বস্তু বহন করা যাবে। তাছাড়া গাড়িতে ছয়জন প্রাপ্তবয়স্ক বসতে পারবে।

জৈব অস্ত্র প্রতিরক্ষা মোড : সাইবার ট্রাকের এই ফিচার বায়ু থেকে ক্ষতিকারক দূষক অপসারণ করতে একটি ঐঊচঅ ফিল্টার ব্যবহার করে, এটি দূষিত এলাকায় বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় গাড়ি চালানোর জন্য ব্যবহার করা যাবে।

অটো পাইলট মোড : টেসলার অটোপাইলট প্রযুক্তির জন্য সাইবারট্রাক ড্রাইভ করতে সক্ষম।

ভাঁজ করা সিট : গড়ির ভেতরের ভাঁজ করা সিট প্রশস্ত করে ব্যবহার করা যাবে। বিশেষ করে ক্যাম্পিংয়ের জন্য উপযোগী।

টাচস্ক্রিন ড্যাশবোর্ড : বাইরের ডিজাইনের মতো ভেতরের ডিজাইনও বেশ পরপাটি করা হয়েছে। সম্পূর্ণ সফটওয়্যার-নিয়ন্ত্রিত সাইবারট্রাকের ড্যাশবোর্ডে একটি টাচস্ক্রিন রয়েছে, যার মাধ্যমেই গাড়ির সব ফিচার নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এতে রয়েছে টাইপ-সি চার্জিং পোর্ট এবং ১২০ ভোল্টের অ্যাডাপ্টার পোর্ট। ভেতরের কেবিনের লেগ স্পেসও যথেষ্ট বড়।

চমৎকার সব ফিচার এবং শক্তিশালী এই সাইবার ট্রাকের দাম শুরু হবে ৬০ হাজার ডলার থেকে। ২০১৯ সালে ঘোষণা দেওয়া এই গাড়ি বাজারে ছাড়ার কথা ছিল ২০২১ সালে। তবে চার বছর পর ২০২৩ সালে ছাড়া হলে ইতিমধ্যে টেসলা জানিয়েছে তারা দশ লাখ ট্রাকের প্রি অর্ডার পেয়েছে। প্রি অর্ডার করতে আগে থেকে জমা দিতে হবে ২৫০ ডলার।