সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১

আবারও রাজধানীতে সুন্নতে খতনা করাতে গিয়ে মৃত্যু

যাযাদি ডেস্ক
  ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৬:৫৪
আপডেট  : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২০:০৩
আবারও রাজধানীতে সুন্নতে খতনা করাতে গিয়ে মৃত্যু

রাজধানীর মালিবাগের জেএস ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিকেল চেকআপ সেন্টারে সুন্নতে খতনা করাতে এসে আবারও এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ওই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় জেএস ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিকেল চেকআপ সেন্টারে তালা ঝুলিয়ে সিলগালা করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

একই সঙ্গে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে অধিদপ্তর।

জানা গেছে, মালিবাগের জে এস ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিকেল চেকআপ সেন্টারে অর্থোপেডিক ও ট্রমা সার্জন ডা. এস এম মুক্তাদিরের তত্ত্বাবধানে মঙ্গলবার রাতে সন্তানকে সুন্নতে খতনা করাতে নিয়ে আসেন শিশু আয়হামের বাবা ফখরুল আলম ও মা খায়কুন নাহার চুমকি। রাত ৮টার দিকে খতনা করানোর জন্য অ্যানেস্থেসিয়া দেওয়ার পর আর ঘুম ভাঙেনি আহনাফের। এর ঘণ্টাখানেক পর হাসপাতালটির পক্ষ থেকে শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

স্বজনদের অভিযোগ, লোকাল অ্যানেস্থেসিয়া দেওয়ার কথা থাকলেও তারা ফুল অ্যানেস্থেসিয়া দিয়েছে। যে কারণে আহনাফের আর জ্ঞান ফেরেনি। মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টায় আহনাফকে সুন্নতে খতনা করাতে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। এর ঘণ্টাখানেক পর তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

এ বিষয়ে আহনাফের বাবা ফখরুল আলম বলেন, আমরা চিকিৎসককে বলেছিলাম যেন ফুল অ্যানেস্থেসিয়া না দেওয়া হয়। তারপরও আমার ছেলের শরীরে সেটি পুশ করেন ডা. মুক্তাদির। আমি বারবার তাদের পায়ে ধরেছি। আমার ছেলেকে যেন ফুল অ্যানেস্থেসিয়া না দেওয়া হয়।

তিনি বলেন, আমার সন্তানকে অ্যানেস্থেসিয়া দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এই মৃত্যুর দায় মুক্তাদিরসহ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সবারই। আমি তাদের কঠোর শাস্তি চাই।

অভিযুক্ত চিকিৎসক মুক্তাদির বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) অর্থোপেডিক বিভাগের জয়েন্ট ব্যথা, বাতব্যথা, প্যারালাইসিস বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরিচয় দিয়ে চিকিৎসা দিতেন বলে জানা গেছে।

এ ঘটনায় শিশুটির বাবা হাতিরঝিল থানায় মামলা করেন। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দুই চিকিৎসককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার দুই চিকিৎসক হলেন এস এম মুক্তাদির ও মাহবুব।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে জে এস ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিকেল চেকআপ সেন্টার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কাউকে পাওয়া যায়নি।

এ ঘটনায় বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জেএস ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিকেল চেকআপ সেন্টার পরিদর্শনে আসেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. আবু হোসেন মো. মইনুল আহসান।

মইনুল আহসান জানান, জেএস ডায়াগনস্টিকের লাইসেন্স ছিল কিন্তু হাসপাতালের লাইসেন্স আছে কি না সেটি দেখা হবে। আর লাইসেন্স না থাকলে অপারেশন করতে পারবে না। সে বিষয়গুলোই খতিয়ে দেখা হবে। এছাড়া হাসপাতালটি এখন সিলগালা করে রাখা হয়েছে।

সিলগালা শেষে সেন্টারটির মূলফটকে লিখিত এক নির্দেশে বলা হয়, আহনাফ তাহমিন আয়হাম নাসেরের সুন্নতে খতনার সময়ে মৃত্যু সংক্রান্ত- অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত জে এস ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিকেল চেকআপ সেন্টার ও জে এস হাসপাতালের সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।

প্রসঙ্গত, গত ৮ জানুয়ারি রাজধানীর বাড্ডা সাতারকুলে ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সুন্নতে খতনা করাতে গিয়ে লাইফ সাপোর্টে থাকা শিশু আয়ান মারা যায়। টানা সাত দিন লাইফ সাপোর্টে ছিল আয়ান।

যাযাদি/এসএস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে