অবশেষে ১৭ দিন পর ভারতের উত্তরাখণ্ডের সিল্কিয়ারার টানেলে আটকা পড়া ৪১ শ্রমিককে উদ্ধার করা গেছে সফলভাবে। উদ্ধারকারীদের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় সবাইকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এ দিকে শ্রমিকদের উদ্ধারের ঘটনায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন তাঁদের স্বজনরা।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামী। সুড়ঙ্গ থেকে প্রথমে উদ্ধার করা হয় ঝাড়খণ্ডের বিজয় হোরো।
এত দিন ধরে তাঁদের বের করার জন্য নানাভাবে চেষ্টা করা হচ্ছিল। কিন্তু ধ্বংসস্তূপ খুঁড়ে শ্রমিকদের কাছে পৌঁছনো সম্ভব হচ্ছিল না কিছুতেই। খোঁড়ার সময় গত শুক্রবার বাধা আসে। ধ্বংসস্তূপের ভেতরের লোহার কাঠামোয় ধাক্কা খেয়ে ভেঙে যায় মার্কিন খননযন্ত্র।
উদ্ধারকাজ থমকে যায়।আটকে পড়া শ্রমিকদের উদ্ধারের বিষয়ে অনবরত খোঁজ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি মুখ্যমন্ত্রী ধামীকে একাধিকবার ফোন করেছেন।
উদ্ধার করার আগপর্যন্ত সুড়ঙ্গের শ্রমিকদের সঙ্গে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অব্যাহত যোগাযোগ রাখা হয়েছিল। পাইপের মাধ্যমে তাঁদের সঙ্গে কথা চলছিল।
পৌঁছে দেওয়া হচ্ছিল খাবার, পানি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। সুড়ঙ্গে থাকাকালীন উত্তরকাশীর শ্রমিকদের প্রথম ভিডিও প্রকাশ্যে আসে গত মঙ্গলবার। পাইপের মাধ্যমে ক্যামেরা পাঠান উদ্ধারকারীরা। সেখানেই দেখা যায় সুড়ঙ্গের ভেতর কিভাবে, কী অবস্থায় তাঁরা রয়েছেন।
খননযন্ত্র ভেঙে যাওয়ায় দুইভাবে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ নতুন করে শুরু হয়েছিল। খননযন্ত্রের সবগুলো টুকরো সুড়ঙ্গ থেকে বের করে আনা হয়। এরপর সেখানে ঢুকে যন্ত্র ছাড়াই খোঁড়া শুরু হয়। ১০-১২ মিটার পথ সেভাবে খুঁড়ে ফেলার পরিকল্পনা ছিল। এই প্রক্রিয়াকে বলে ‘ইঁদুর-গর্ত’ প্রক্রিয়া। ইঁদুরের কায়দায় গর্ত খুঁড়ে সুড়ঙ্গ থেকে শ্রমিকদের বের করার পরিকল্পনা করা হয়।
এ ছাড়া সুড়ঙ্গের ওপর দিক থেকে উল্লম্বভাবে খোঁড়ার কাজও শুরু হয়েছিল। ৮৬ মিটারের মধ্যে মঙ্গলবার সকালের মধ্যেই খোঁড়া হয়ে গিয়েছিল ৪২ মিটার।
পর্যাপ্ত অ্যাম্বুল্যান্স, ওষুধপত্র আগে থেকেই শ্রমিকদের জন্য ঘটনাস্থলে মজুত করা হয়েছিল। প্রস্তুত রয়েছে অস্থায়ী হাসপাতালও। প্রয়োজন অনুযায়ী তা ব্যবহার করা হবে। দরকার হলে অ্যাম্বুল্যান্সে করে তাঁদের ঋষিকেশ এমসে নিয়ে যাওয়া হতে পারে। ৪১ জনের অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
সূত্র: এনডিটিভি
যাযাদি/ এসএম