শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

ইসলামপন্থী দলগুলোর ভরাডুবির কারণ কী?

যাযাদি ডেস্ক
  ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:৫১
ইসলামপন্থী দলগুলোর ভরাডুবির কারণ কী?

পাকিস্তানে সদ্য অনুষ্ঠিত হওয়া জাতীয় নির্বাচনে কোনো দলই সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি। সবচেয়ে বেশি আসনে জয়লাভ করেছে তেহরিক ই ইনসাফ পাকিস্তান (পিটিআই) সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। আর দ্বিতীয় ও তৃতীয় দল হিসেবে রয়েছে পাকিস্তান মুসলিম লীগ- নওয়াজ (পিএমএলএন) এবং পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি)। তবে দেশটিতে ইসলামপন্থী দলগুলোর ভরাডুবি হয়েছে।

পিএমএল-এন এবং পিপিপির মতো শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে নির্বাচনী লড়াইয়ে পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা চমক দেখালেও ধরাশায়ী হয়েছে ইসলামিক দলগুলো। ২০১৮ সালে যেখানে মাত্র ১২টি ধর্মপন্থি দল নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। সে তুলনায় এবার ২৩টি দল নির্বাচনে অংশ নেয়। এবার ভোটের ফলাফলে তাদের গ্রহণযোগ্যতা অবনতির চিত্র আরও স্পষ্ট হয়েছে।

পাকিস্তানে পার্লামেন্ট নির্বাচনে ইসলামপন্থী দাবি করা এমকিউএম সবচেয়ে বেশি ১৭টি আসনে জয়লাভ করেছে। কেন্দ্রে কোনো আসন পায়নি জামাতে ইসলামি ও জমিয়াতে উলামায়ে ইসলাম।

নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় ইসলামপন্থী দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম প্রধান মাওলানা ফজলুর রহমান পিটিআই সমর্থিত প্রার্থির কাছে হেরেছেন। এছাড়া জামায়াতে ইসলামীর প্রধান সিরাজুল হকও হেরেছেন পিটিআই সমর্থিত আরেক প্রার্থীর কাছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন যে, ২০১৩ সালের পর থেকে দেশটিতে ধীরে ধীরে ইসলামপন্থী দলগুলোর ভোটার কমেছে। ২০১৩ সালে নির্বাচনে ইসলামপন্থী ছয়টি দল অংশ নেয়। ওই নির্বাচনে জামাত–ই–ইসলামী পাকিস্তান (জেআইপি) তিনটি ও জামায়াতে উলামায়ে ইসলাম (ফজল, জেইউআইএফ) আলাদাভাবে নির্বাচন করে ১০টি আসন পেয়েছিল। সবকটি আসন ছিল খাইবার পাখতুনখাওয়া ও বেলুচিস্তান প্রদেশের পশতুনের বেশির ভাগ এলাকায়।

২০১৮ সালের নির্বাচনে ইসলামপন্থী এসব দল ৫ কোটি ৪৩ লাখ ভোটারের মধ্যে মাত্র ৫২ লাখ ভোট পেয়েছিল। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের নির্বাচনে তেহরিক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তান পাঞ্জাবে অন্তত ১৫টি জাতীয় পরিষদের আসনে পাকিস্তান মুসলিম লীগকে (এন) হারিয়েছিল।

কী কারণে ইসলামপন্থী দলগুলোর ভরাডুবির অন্যতম একটি কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, ইমরান খানকে প্রধানমন্ত্রী থেকে সরাতে বিশাল মার্চ করেছিলেন মাওলানা ফজলুর রেহমান। এটি সাধারণ মানুষ ভালোভাবে নেয়নি। ব্যাপকভাবে পিটিআইবিরোধী হওয়ার কারণে ক্ষতি হয়েছে দলগুলোর।

২০১৩ সালের পর থেকে দেশটিতে ধীরে ধীরে ইসলামপন্থী দলগুলোর ভোটার কমেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এবার ইসলামপন্থীদের গ্রহণযোগ্যতা হারানোর পেছেনে ৫ কোটি ৬৮ লাখ তরুণ ভোটারের ভূমিকা রয়েছে। যা মোট ভোটারের ৪৫ শতাংশ।

এরই মধ্যে সিন্ধ প্রদেশে দুই আসন পাওয়া জামায়াতে ইসলামী তাদের আসন ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

পাকিস্তানের নির্বাচনের ফল পাকিস্তানে নির্বাচনের পর এখন পর্যন্ত আসন সংখ্যা অনুযায়ী ইমরান খানের পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র সদস্য ৯৩ জন, পিএমএল-এন ৭৫, পিপিপি ৫৪, এমকিউএম ১৭, অন্যান্য স্বতন্ত্র ৯, পিএমএল ৩, আইপিপি ২, বিএনপি ২টি আসন পেয়েছে। এছাড়া একটি করে পেয়েছে পিএমএল-জেড, পিএনএপি, বিএপি, পিকেএমএপি, এনপি একটি করে আসন।

পাঞ্জাবে পিএমএলএন পেয়েছে ১৩৮টি আসন, পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্ররা পেয়েছে ১১৬টি, অন্যান্য স্বতন্ত্র ২২টি, পিপিপি ১০টি, পিএমএল ৭টি, টিএলপি ১টি।

সিন্ধুতে পিপিপি ৮৩টি, এমকিউএম ২৮টি, পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র ১১টি, অন্যান্য স্বতন্ত্র ৩টি, জিডিএ ৩টি, জেআই ২টি।

খাইবার পাকতুনখাওয়ায় পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র ৮৪টি, স্বতন্ত্র ৮টি, জেইউআইএফ ৭টি, পিএমএলএন ৫টি, পিপিটি ৪টি, জেআই২টি, পিটিআই-পি ২টি, এএনপি ১টি।

বেলুচিস্তানে পিপিপি ১১টি, পিএমএলএন ১০টি, জেইউআই-এফ ১০টি, স্বতন্ত্র ৫টি, বিএপি ৪টি, এনপি ৩টি, বিএনপি ২টি, এএনপি ২টি, এইচডিটি ১টি, জেআই ১টি, আরএইচ হক ১টি, বিএনটি-এ ১টি।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
X
Nagad

উপরে