বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে দেওয়া নির্বাচন নিবন্ধন অবৈধ বলে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে দলটির লিভ টু আপিলের শুনানির দিন পিছিয়ে ১৯ নভেন্বর ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে জামায়াতের নিবন্ধন নিয়ে চলা মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত দলটির রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদনের শুনানিও একই দিনে হবে। এছাড়া জামায়াত নেতাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদনের শুনানিও ১৯ নভেম্বর।
রোববার (১২ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চে এ দিন ধার্য করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর ও অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম।
এর আগে গত ৬ নভেম্বর জামায়াতে ইসলামীর করা লিভ টু আপিলের শুনানির জন্য ১২ নভেম্বর দিন ধার্য করেন আপিল বিভাগ। একই দিন জামায়াতের নেতাদের বিরুদ্ধে করা আদালত অবমাননার আবেদন এবং দলটির সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞার আবেদনেরও শুনানির দিন ধার্য করা হয়। সে অনুযায়ী আজ আবেদনগুলো আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় আসে।
জামায়াতে ইসলামীর পক্ষের আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলীর আজ ব্যক্তিগত সমস্যা থাকায় তার পক্ষ থেকে আট সপ্তাহ সময় চেয়ে আবেদন করেন আইনজীবী মো. জিয়াউর রহমান। এ সময় জামায়াতের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে নিষেধাজ্ঞা ও আদালত অবমাননার অভিযোগের আবেদনের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর ও আইনজীবী আহসানুল করিম। এ সময় আদালতে রাষ্ট্র পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
গত ২৬ জুন জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন নিয়ে চলা মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত দলটির মিছিল-সমাবেশসহ সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়। মাওলানা সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীর পক্ষে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে এ আবেদন করেন আইনজীবী তানিয়া আমীর। এ ছাড়া আদালতে মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় সমাবেশ করে রেজিস্ট্রেশন দাবি করায় আদালত অবমাননার অভিযোগ এনে পৃথক আরেকটি আবেদন করেন মাওলানা রেজাউল হক চাঁদপুরী। এটিও দাখিল করেন ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর।
এই আবেদনের পর ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর বলেছিলেন, ‘আমরা দুটি আবেদন করেছি। একটা হচ্ছে হাইকোর্টের রায় বলবৎ থাকার পরও ১০ বছর পরে জামায়াত কর্মসূচি পালন করেছে। আমরা জামায়াতের সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়েছি। আরেকটি আদালত অবমাননার। কারণ তারা রাজনৈতিক কর্মসূচির মাধ্যমে নিবন্ধন ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি করেছে, যেখানে আদালত অবমাননার বিষয় আছে। অথচ হাইকোর্টের রায়ে তাদের নিবন্ধন অবৈধ।’
রাজনৈতিক দল হিসেবে ২০০৮ সালের ৪ নভেম্বর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে নিবন্ধন দেয় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০০৯ সালে রিট আবেদন করেন তরীকত ফেডারেশনের তৎকালীন মহাসচিব সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীসহ ২৫ ব্যক্তি। রিটের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট রায় দেন হাইকোর্টের তিন সদস্যের বেঞ্চ। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার সনদ দেওয়া হয়। পরে ওই বছরই হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে লিভ লিভ টু আপিল করেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল। ২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন।
যাযাদি/ এসএম