সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

তিস্তা প্রকল্পে অর্থায়ন করতে চায় ভারত : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

যাযাদি ডেস্ক
  ১০ মে ২০২৪, ০৯:৫৫
ছবি-সংগৃহীত

তিস্তা প্রকল্পে ভারত অর্থায়ন করতে চায় বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ঢাকা সফররত ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াত্রা হাছান মাহমুদের সঙ্গে বৈঠক করে তিস্তায় দেশটির অর্থায়নে আগ্রহের কথা জানান।

ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে তিস্তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না- জানতে চান এক সাংবাদিক। জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তিস্তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তিস্তায় আমরা একটা বৃহৎ প্রকল্প নিয়েছি। ভারত সেখানে অর্থায়ন করতে চায়। আমি বলেছি, তিস্তায় যে প্রকল্পটি হবে সেটা আমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী হবে। আমাদের প্রয়োজন যেন পূরণ হয়।’

তিস্তায় ভারতের মতো চীনও অর্থায়ন করতে চাচ্ছে- এ বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারত যে এক্ষেত্রে সহায়তা করতে চাইছে সে বিষয় নিয়েই আলোচনা হয়েছে।

ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে ড. হাছান বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে আমাদের বহুমাত্রিক সম্পর্ক। অত্যন্ত চমৎকার সম্পর্ক। যে সম্পর্ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। আমরা কানেক্টিভিটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।’

বাংলাদেশিদের জন্য ভারতীয় ভিসা সহজ করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘প্রতি বছর বাংলাদেশির জন্য ১৬-১৭ লাখ মানুষকে ভিসা ইস্যু করে ভারত। বিশ্বে সর্বোচ্চ ভিসা ইস্যু করে বাংলাদেশে। অনেক সময় ভিসা পেতে অপেক্ষা করতে হয় সেটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেছেন এখানকার (বাংলাদেশে ভারতীয় ভিসা কেন্দ্রে) সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য তারা আরও লোকবল নিয়োগ করছেন এবং কোনো উদ্ভাবনী প্রক্রিয়ায় করা যায় কি না তা দেখছেন। আমি অনলাইনের কথা বলেছি। অনলাইনে আবেদন করার কথা বলেছি, যেন সহজে মানুষ ভিসা পায়। তারা এ বিষয়ে অত্যন্ত আন্তরিক।’

ভারতের ওপর দিয়ে নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ফিজিক্যাল কানেক্টিভিটি নিয়ে আলোচনা করেছি। সেটা অনেক দূর এগিয়েছে। বিশেষ করে, নেপাল এবং ভুটানকে ট্রানজিট দেওয়া এবং এ দুই দেশ থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানি করার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করা। ইতোমধ্যে নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানি করার ক্ষেত্রে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘ট্যারিফ নিয়েও আলোচনা অনেকটা চ‚ড়ান্ত হয়েছে। সেটি আমাদের ক্রয় কমিটিতে যাবে। সেটি হলে ভারতের ওপর দিয়ে আমরা নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করতে পারব।’

সীমান্ত হত্যা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রাণঘাতী নয় এমন অস্ত্র ব্যবহার করার ওপর আমরা গুরুত্ব আরোপ করেছি। তিনি (কোয়াত্রা) জানিয়েছেন তাদের বর্ডার সিকিউরিটি গার্ডকে নির্দেশনা দিয়েছেন এবং তারা সেটি অনুসরণও করেন। তাদের আন্তরিকতার অভাব নেই। এটি নিয়ে দুদেশের সরকারি এবং রাজনৈতিক পর্যায়ে আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি নেই।’

‘ওয়াজেদ মিয়া ক্ষমতা প্রদর্শন করেননি’

এদিকে, বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘ড. ওয়াজেদ মিয়া দুই টার্মে পরমাণু কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি সৎ, সাধারণ, অমায়িক মানুষ ছিলেন। যখন প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে কাজ করেছি, তাকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী, এই পরিচয় কখনো দিতেন না। তিনি বাংলাদেশের বৃহত্তর রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের পরিচয় দেওয়ার প্রয়োজন মনে করেননি। ক্ষমতাধর পরিবারের সদস্য হয়েও তিনি ক্ষমতা প্রদর্শন করেননি।’

ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক সোসাইটি ও সাপ্তাহিক গণবাংলা।

তিনি আরও বলেন, ‘ড. ওয়াজেদ ও শেখ হাসিনার সবচেয়ে বড় সাফল্য হলো তারা সন্তানদের শিক্ষিত করেছেন। সজীব ওয়াজেদ জয় হার্ভার্ড থেকে মাস্টার্স করেছেন। আজ তিনি প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা। আজ বাংলাদেশ ডিজিলাইজড। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ থেকে আমরা পিছিয়ে পড়িনি। এর একমাত্র কারণ হলো এই পরিবারের বিজ্ঞানমনস্কতা। শেখ হাসিনা নিজেও বিজ্ঞানমনস্ক। তিনি গবেষণা করে কাজ করতে পছন্দ করেন। বঙ্গবন্ধুর পরিবারই বিজ্ঞানমনস্ক। আর এর পেছনে অবদান ড. ওয়াজেদ মিয়ার।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ওয়াজেদ মিয়া একজন অনুকরণীয় মানুষ। ১৯৭৫-এর সময় বিধ্বস্ত অবস্থায় শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানাকে আগলে রাখার ক্ষেত্রে তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। অসীম সাহস আর ধৈর্য না থাকলে একটা পরিবারকে আগলে রাখা সহজ কাজ না। এখন অনেকেই তাকে ভুলে গেছেন। আমি আয়োজকদের ধন্যবাদ জানাই। আপনারা ওয়াজেদ মিয়াকে ভোলেন নাই।’

আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য উপকমিটির সদস্য লায়ন মশিউর আহমেদের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার, আওয়ামী লীগ নেতা এম এ করিম, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব সফিকুল বাহার মজুমদার টিপু, সাবেক এমপি ও স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু, বাংলাদেশ কৃষক লীগের সহ-সভাপতি শেখ মো. জাহাঙ্গীর আলম।

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
X
Nagad

উপরে