অভিন্ন চাকুরিবিধি বাস্তবায়ন এবং দমন-পীড়ন বন্ধ, কর্মপরিবেশ অস্থিতিশীলকরার দায়ে আরইবি চেয়ারম্যানের অপসারণসহ ৭ দফা দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে দেশের ৮০ টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কয়েক হাজার কর্মকর্তা কর্মচারী। বুধবার সকালে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচীর আলোকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জরো হন কর্মকর্তা কর্মচারীরা।
বৈষম্য বিরোধী কর্মকর্তা কর্মচারীদের ব্যানারে কর্মসূচিতে অভিন্ন সার্ভিস কোড বাস্তবায়ন, চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরিতে পূনর্বহাল ও মামলা প্রত্যাহার,অনিয়মিতদের নিয়মতকরনসহ বিভিন্ন দাবি দাওয়া নিয়ে বক্তব্য ও স্লোগান দেয়।
- তাদের ঘোষিত ৭ দফা দাবিগুলো হলো......
১. পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীদের ফ্যাসিবাদি কায়দায় দমন-পীড়নের মাধ্যমে কর্মপরিবেশ অস্থিতিশীলকারী, অত্যাচারী আরইবি চেয়ারম্যানের অপসারণ।
২. “এক ও অভিন্ন চাকুরিবিধি বাস্তবায়নের মাধ্যমে আরইবি-পবিস একীভূতকরণ” অথবা দেশের অন্যান্য বিতরণ সংস্থার ন্যায় পুনর্গঠন।
৩. মিটার রিডার কাম মেসেঞ্জার, লাইন শ্রমিক এবং পৌষ্য কর্মীদের চাকরি নিয়মিতকরণ।
৪. মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারপূর্বক চাকরিচ্যুতদের স্বপদে পুনর্বহাল।
৫. গ্রাহক সেবার স্বার্থে লাইনক্রুসহ সকল হয়রানি ও শাস্তিমূলক বদলি আদেশ বাতিল এবং বরখাস্ত ও সংযুক্ত কর্মীদের অবিলম্বে পদায়ন।
৬. জরুরি সেবায় নিয়োজিত কর্মীদের আন্তর্জাতিক নিয়মানুযায়ী নির্দিষ্ট কর্মঘন্টা/শিফটিং ডিউটি বাস্তবায়নের জন্য অতিদ্রুত জনবলের ঘাটতি পূরণ করতে হবে।
৭. পূর্ণাঙ্গ সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্র্বতীকালীন বোর্ড গঠন করে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কার্যক্রম পরিচালিত করতে হবে।
কর্মসূচিতে এনসিপি শ্রমিক উইং, জুলাই অধিকার পরিষদ, সার্বভৌমত্ব আন্দোলন ও নাগরিক ঐক্য সংহতি প্রকাশ করেছে।
বক্তারা অভিযোগ করেন, শহর ও গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ বৈষম্য দূর করতে মানসম্মত বিদ্যুৎ সেবা প্রদানে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিসমূহের বিদ্যমান সংকট নিরসনপূর্বক যৌক্তিক সংস্কার চাওয়ায় জুলাই কর্মকর্তা কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ঢালাওভাবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। গত চার মাসে প্রায় চার সহস্রাধিক কর্মকর্তা কর্মচারীর বিরুদ্ধে চাকরিচ্যুতি, বদলি সংযুক্তিসহ হয়রানি মুলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।তাছাড়া, নিম্ন মানের মালামাল দিয়ে ভঙ্গুর বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা নির্মাণ করে গ্রাহক হয়রানি এবং গ্রাহক বনাম সমিতির কর্মরত কর্মচারীদের মুখোমুখি দাঁড়া করিয়ে দেওয়া, আরইবির ব্যার্থতার দায়ভার সমিতিগুলোর উপর চাপানো, নানান আর্থিক অনিয়ম; কর্মক্ষেত্রে বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে অকালে মৃত্যুবরণ করা কর্মীর দায় না নিয়ে বরং সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিভিন্নভাবে হয়রানি ও জুলুম ইত্যাদি কারণে দীর্ঘকালের অসন্তোষের প্রেক্ষিতে গত বছরের জানুয়ারি থেকেই সমিতিগুলোতে অসন্তোষ বিরাজ করছে।
মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ কর্তৃক “এক ও অভিন্ন চাকুরিবিধি বাস্তবায়নের মাধ্যমে আরইবি-পবিস একীভূতকরণ” সিদ্ধান্ত স্বল্পমেয়াদে বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও বাপবি বোর্ডের অনাগ্রহে তা বাস্তবায়ন হয়নি। উল্টো সমিতির কর্মীদের উপর স্বৈরাচারী পন্থায় আরইবি’র জুলুম-নির্যাতনের মাত্রা চরমভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। আন্দোলনের অজুহাতে এখন পর্যন্ত ২৯ জনকে বিনা নোটিশে চাকরিচ্যুত, মামলা-গ্রেফতার-কারাবন্দী, অর্ধশতাধিক কর্মীকে বরখাস্ত, স্ট্যান্ড রিলিজপূর্বক সংযুক্ত এবং নিজ জেলা থেকে গড়ে ৪০০-৫০০ কি.মি. দূরে শাস্তিমূলক বদলি করা হচ্ছে।
এছাড়া স্মারকলিপির জন্য গণস্বাক্ষর কার্যক্রম করায় ০৭ জনকে বরখাস্ত করা হয়েছে। গত চার মাসে সাড়ে চার হাজারের অধিক কর্মীকে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছে। সর্বশেষ গত এক সপ্তাহে দেড় হাজারের অধিক লাইনক্রুকে নিয়ম বহির্ভূতভাবে (নিয়োগপত্র অনুযায়ী চাকরি বদলিযোগ্য না) হয়রানিমূলক বদলি আদেশ জারি করা হয়েছে।