দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জ জেলার ৩টি সংসদীয় আসনে সংসদ সদস্য প্রার্থী হয়েছিলেন ২০ জন। এর মধ্যে গনফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি মফিজুল ইসলাম কামালসহ ১৫ জনই হারালেন তাদের জামানত।

রোববার ৭ই জানুয়ারি ভোট গ্রহণ শেষে রিটানিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ঘোষিত ফলাফল বিশ্লেষণ করে এ চিত্র পাওয়া গেছে।

নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী, নির্বাচনে কোনো আসনে প্রদত্ত ভোটের ৮ ভাগের ১ ভাগ ভোট কোনো প্রার্থী যদি না পান, তাহলে তার জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।

রিটানিং কর্মকর্তা জেলা প্রশাসক রেহেনা আকতার স্বাক্ষরিত বেসরকারী ঘোষিত ফলাফল সূত্রে জানা যায়, মানিকগঞ্জ-১ (শিবালয়, ঘিওর ও দৌলতপুর) আসনে প্রার্থী ছিলেন ৪জন। এর মধ্যে ২ জনের জামানত হারাচ্ছেন। এ আসনে ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৩৬ হাজার ১৯৭ টি। তবে ভোট পড়েছে ১ লাখ ২৯ হাজার ৫২২টি। এর ৮ ভাগের ১ ভাগ হচ্ছে ১০ হাজার ৩৬১ টি, যা পাননি ২ জন প্রার্থী। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী সালাউদ্দিন মাহমুদ(এসএম জাহিদ) ৮৬ হাজার ৯৪১টি ভোট পেয়ে বেসরকারী ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী জহিরুল আলম রুবেল পেয়েছেন ৩৮ হাজার ৯৪২ টি ভোট। এছাড়া গনফন্টের মাছ প্রতিকের প্রার্থী মোহাম্মদ সাজাহান খান পেয়েছেন ১ হাজার ৮৭ টি ভোট। আর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের প্রার্থী মোনায়েম খান পেয়েছেন মাত্র ৬শত ৩৩ টি ভোট।

মানিকগঞ্জ-২ ( সিংগাইর-হরিরামপুর ও সদরের একাংশ)) আসনে প্রার্থী ছিলেন ১০ জন। তাদের আট জনেই জামানত হারাচ্ছেন। এ আসনে ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৬৬ হাজার ৯৮৯ টি। মোট ভোট পড়েছে ১ লাখ ৯৪ হাজার ৭৫২টি। ভোট প্রয়োগের হার ৪১.৭০ ভাগ। প্রদত্ত ভোটের ৮ ভাগের ১ ভাগ হচ্ছে ১৫ হাজার ৫৮০টি। তবে এখানে এই পরিমাণ ভোট পাননি ৮ জন প্রার্থীর কেউ ই।

এ আসনে ট্রাক প্রতীকের প্রার্থী দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলু ৮৮ হাজার ৩০৯ টি ভোট পেয়ে বেসরকারী ভাবে জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সংসদ সদস্য কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম পেয়েছেন ৮২ হাজার ১৩৮ টি ভোট।

এখানে ফলাফল বিশ্লেষন করে দেখা গেছে জামানত হারানো প্রার্থীরা হলেন- স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মুশফিকুর রহমান খান হান্নান। তিনি কেটলী প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ৯ হাজার ৭১১ টি ভোট। সাবেক এমপি পুত্র সাহাবুদ্দিন আহমেদ চঞ্চল ঈগল প্রতীকে পেয়েছেন ৬ হাজার ১২৫ টি ভোট, সাবেক ফুটবলার দেওয়ান শফিউল আরেফিন টুটুল মোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ৪ হাজার ৬৩১ টি ভোট, তরিকত ফেডারেশনের ফুলের মালা প্রতীকের প্রার্থী ফেরদৌস আহমেদ আশিফ পেয়েছেন ৫ শত ৩৬ টি ভোট, কংগ্রেস পার্টির মো. জাকির হোসেন ডাব প্রতীকে পেয়েছেন ২ শত ৫২ টি ভোট, সুপ্রীম পার্টির একে নাহিদ একতারা প্রতীকে পেয়েছেন ১ শত ৯২ টি ভোট, একেএম ইকবাল হোসেন নোঙর প্রতীকে ৮৯ টি ভোট ও গামছা প্রতিকের তানভীর হাসান পেয়েছে সর্বনিম্ন ১৯ টি ভোট।

মানিকগঞ্জ-৩ ( মানিকগঞ্জ সদর ও সাটুরিয়া) আসনে প্রার্থী ছিলেন ছয়জন। তাদের মধ্যে নৌকা প্রতিকের প্রার্থী স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন ছাড়া সবাই জামানত হারাচ্ছেন। এ আসনে ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৫৮ হাজার ৪৫৯। মোট ভোট পড়েছে ১ লাখ ৪১হাজার ৬৫২টি। প্রদত্ত ভোটের ৮ ভাগের ১ ভাগ হচ্ছে ১১ হাজার ৩৩২টি।

এ আসনে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন ১ লাখ ২৬ হাজার ৭২০ টি ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার সাথের প্রতিদ্বন্দ্বী সবাই জামানাত হারাচ্ছেন। তারা হচ্ছেন-গনফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি মফিজুল ইসলাম খান কামাল। তিনি পেয়েছেন ৫ হাজার ৩৯১ টি ভোট, জাতীয় পার্টির জহিরুল আলম রুবেল। তিনি পেয়েছেন ৪ হাজার ৫৮৬ টি ভোট, গামছা প্রতীকের প্রার্থী এম হাবিবুল্লাহ। তিনি পেয়েছেন ১ হাজার ১০ টি ভোট, সোনালী আশ প্রতীকের প্রার্থী মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম আলী খান মজলিশ। তিনি পেয়েছেন ৬ শত ১৫ টি ভোট এবং নোঙর প্রতীকের প্রার্থী এম খালেক দেওয়ান। তিনি পেয়েছেন ৪ শত ৭১ টি ভোট।

যাযাদি/ এস