বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫, ১৯ আষাঢ় ১৪৩২

সরকারের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে: বুলবুল

যাযাদি ডেস্ক
  ০২ জুলাই ২০২৫, ১৯:২৭
সরকারের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে: বুলবুল
ছবি : যায়যায়দিন

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, সরকারের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে। তবে তার আগে সংস্কার, গণহত্যার বিচার নিশ্চিতের পাশাপাশি স্থানীয় সরকার নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার না করে যেনতেন ভাবে একটি নির্বাচন দিলে আবার ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটবে। ফ্যাসিবাদের পথ বন্ধ করতে হলে পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের বিকল্প নেই।

বুধবার (২ জুলাই) কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকীতে শহীদ ও আহত-পঙ্গুত্ব বরণকারীদের স্মরণে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে মতিঝিলে এতিম, দরিদ্র, অসহায় ও দুঃস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ পূর্বক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

যখন যারা ক্ষমতায় বসেছে, তারা তাদের স্বার্থে সংবিধানকে কাটাছেঁড়া করে বারবার সংশোধন করেছে উল্লেখ করে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, জুলাই আগস্ট আন্দোলনের চেতনা ছিল বৈষম্যহীন বাংলাদেশ। এই বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গঠন করতে হলে রাষ্ট্রীয় সকল ব্যবস্থার সংস্কার করতে হবে। আওয়ামী লীগ, বিরাজনীতি করণের লক্ষ্যে বিরোধী দলমতকে দমন করেছে, দলীয় লোকদের দিয়ে বিচার বিভাগ সহ রাষ্ট্রের সব স্তর নিজেদের মতো করে সাজিয়েছে। নতজানু প্রশাসনের জন্য পিলখানা হত্যাকান্ড চালিয়ে ৫৭ জন শীর্ষ সেনাকর্মকর্তাকে হত্যা করেছে। রাষ্ট্রের প্রতিটি সেক্টর ধ্বংস করে দিয়েছিলো। জুলাই গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্র মেরামতের জন্য সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। জামায়াতে ইসলামী সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সংস্কারে সহযোগিতা করলেও একটি রাজনৈতিক দল ও তাদের মিত্ররা সহযোগিতার পরিবর্তে নিজেদের দলীয় স্বার্থে নিজেদের মতো করে সংস্কার চায়। জুলাই গণঅভ্যুত্থান কোন একক ব্যক্তি বা দলকে সুবিধা দেওয়ার জন্য হয়নি। দেশ ও জাতির কল্যাণে বৈষম্যহীন একটি কল্যাণ ও মানবিক রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে রূপ দেওয়ার জন্য জুলাই গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে আধিপত্যবাদের সহযোগিতায় ফ্যাসিবাদ কায়েম করে। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দলগুলো আন্দোলন করলে রাষ্ট্রীয় শক্তি ব্যবহার করে গণতান্ত্রিক আন্দোলন দমন করা হয়। জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় বিচারিক হত্যা করা হয়। আলেম-উলামাদের উপর জুলুম নির্যাতন চালানো হয়। একজন মুসলিম হিসেবে দাঁড়ি, টুপি থাকলেই তাকে জামায়াত-শিবির আখ্যায়িত করে রাষ্ট্রীয় বাহিনী দিয়ে ধরে নিয়ে নির্যাতন চালানো হতো। দেশের মানুষের কন্ঠরোধ করে মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। পুরো দেশকে তারা কারাগারে পরিণত করেছে। ছাত্ররা সরকারি চাকুরিতে কোটা সংস্কারের যৌক্তিক দাবিতে গণতান্ত্রিক আন্দোলন করলে আওয়ামী লীগ ঐ যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার পরিবর্তে ছাত্রদের রাষ্ট্রীয় বাহিনী দিয়ে হত্যা করে। রাষ্ট্রীয় বাহিনীর সাথে যুক্ত হয় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা। ছাত্র-জনতাকে গণহত্যার প্রতিবাদে মানুষ শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে ৫ আগস্ট রাজধানীতে একত্রিত হয়ে গণভবনের দিকে ছুটলে শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে যায়। জাতি পায় এক নতুন বাংলাদেশ। এখন জাতির প্রত্যাশা নতুন বাংলাদেশ হবে, বৈষম্যহীন একটি কল্যাণ রাষ্ট্র। জামায়াতে ইসলামীর জাতির প্রত্যাশা বাস্তবায়নে কাজ করবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে