যোগ করা অতিরিক্ত সময়ে গড়ানো ম্যাচ দেখল পাঁচ গোল, যাতে হারটা হলো বার্সেলোনার। এক সপ্তাহের এদিক ওদিকে টানা দুটো ম্যাচে এমন হার দেখল কোচ জাভি হার্নান্দেজের দল। তবে ম্যাচে মিলটা এ পর্যন্তই। সুপারকোপা দে এস্পানার সেমিফাইনালে যেখানে বার্সেলোনা সাজিয়ে বসেছিল দারুণ আক্রমণাত্মক ফুটবলের পসরা, সেখানে কোপা দেল রের শেষ ষোলয় দলটি কি-না হারিয়ে খুঁজল নিজেদের! আর তাই পাঁচ গোলের এই থ্রিলারে যোগ্য দল হিসেবেই শেষ হাসি হেসেছে অ্যাথলেটিক বিলবাও।
বার্সা নিজেদের কিছুটা অভাগাও ভেবে বসতে পারে। গেল মৌসুমে যেখানে ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল বিলবাওয়ের, সেখানে এই মৌসুমে দলটা বাস্ক দলটিকে মুখোমুখি হলো শেষ ষোলতেই।
এস্তাদিও সান মামেসে বৃহস্পতিবার রাতের এই ম্যাচে স্থানীয় দর্শকরা তখনো ধাতস্থ হয়ে বসতেই পারেননি। তখনই এগিয়ে যায় বিলবাও। ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটে ডান পাশ থেকে জর্দি আলবাকে পরাস্ত করে বক্সে পাস বাড়ান নিকো উইলিয়ামস। বক্সের ডান পাশে বলটা পেয়ে দুর্দান্ত এক কোণাকুণি শটে বার্সা রক্ষণকে পরাস্ত করেন ইকার মুনিয়াইন।
স্বাগতিকরা অবশ্য ব্যবধানটা ধরে রাখতে পারেনি। শুরুর ১৯ মিনিটে নিজেদের হারিয়ে খুঁজে বেড়ানো বার্সা সমতা ফেরায় ২০ মিনিটে। চলতি দলবদল মৌসুমে ৫৩৫ কোটি টাকা খরচ করে কেনা ফেররান তরেস বক্সে বল পেয়ে ডান পায়ের বাঁকানো এক শটে পান বার্সার জার্সি গায়ে প্রথম গোলের দেখা।
বিরতির আগ পর্যন্ত পুরোটা সময় ধরে বার্সা রক্ষণে চাপ দিয়েই গেছে বিলবাও। ভাগ্যিস গোলরক্ষক মার্ক আন্দ্রে টের স্টেগেন ছিলেন, নাহয় যে শুরুর অর্ধেই ম্যাচটা শেষ হয়ে যেতে পারত বার্সার!
দৃশ্যটা বিরতির পরেও বদলায়নি। খেলাটা যেন ছিল বিলবাও আক্রমণভাগ আর স্টেগেনের মধ্যে! ৮৫ মিনিটে অবশেষে ভাঙে জার্মান গোলরক্ষকের বাঁধ। ফ্রি কিক পেয়েছিল বিলবাও, তাতে আলেহান্দ্রো রামিরোর হেডার শুরুতে রক্ষা পেয়েছিল স্টেগেনের কোমরে লেগে; তবে শেষ রক্ষা হয়নি, জেরার্ড পিকের চ্যালেঞ্জে শট নিতে না পারলেও শেষমেশ বলটা ঠিকই ইনিগো মার্টিনেজের পায়ে লেগে জড়ায় বার্সার জালে।
এরপর যোগ করা সময়ে আবারও ম্যাচে সমতা ফেরায় বার্সা। বক্সের ডান পাশ থেকে দানি আলভেস দারুণ এক ওভারহেড কিকে বলটা ফেলেন বক্সের মাঝে, সেখান থেকে পেদ্রি গনজালেসের আগুনে এক শটে গোল পেয়ে যায় কাতালানরা। ম্যাচটা তাতে গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।
নির্ধারিত সময়ে যেমন হয়েছে, বিলবাওয়ের আক্রমণের বিপরীতে বার্সার ত্রাহি মধুসূদন দশা, চিত্রটা পাল্টায়নি যোগ করা অতিরিক্ত সময়েও। তাতেও উতরেই যাচ্ছিল দলটা, যদি না জর্দি আলবা ১০৫ মিনিটে সে ভুলটা করে বসতেন! নিকো উইলিয়ামসের শটে হাত লাগিয়ে বসেন স্প্যানিশ লেফট ব্যাক, তাতেই ভিএআর দেখে এসে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। পেনাল্টি থেকে মুনিয়াইন করে বসেন গোল।
সুপারকোপায় রিয়ালের বিপক্ষে নির্ধারিত সময়ে দুই বার পিছিয়ে পরেও সমতা ফেরায় বার্সা, তবে অতিরিক্ত সময়ের গোলের জবাবটা আর দিতে পারেনি শেষমেশ, কোপা দেল রে-তেও হলো একই দৃশ্যের পুনর্মঞ্চায়ন। তাতে বার্সা ম্যাচটা হারল ৩-২ গোলে। বিদায়ও নিশ্চিত হলো কোপা দেল রে থেকে। দুই ম্যাচে দুই শিরোপার সম্ভাবনা শেষ, এখন চলতি মৌসুমে শিরোপাখরাই রীতিমতো চোখ রাঙাচ্ছে দলটিকে।
যাযাদি/এসআই
Copyright JaiJaiDin ©2022
Design and developed by Orangebd