আজকের যায়যায়দিন

ভারতে আন্দোলনরত কৃষক নেতারা শুক্রবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনায় সরাসরি অভিযোগ তুলেছিলেন, আন্দোলনে যারা নানা ভাবে সাহায্য করছেন, তাদের বিরুদ্ধে ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি-এনআইএকে কাজে লাগানো হচ্ছে। এবার আর আন্দোলনে সাহায্যকারী নয়। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা যে সংগঠনের প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনায় বসছেন, তার নেতাকেই তলব করেছে এনআইএ। সংবাদসূত্র : পিটিআই, এবিপি নিউজ

'লোক ভালাই ইনসাফ ওয়েলফেয়ার সোসাইটির' (এলবিআইডবিস্নউএস) নেতা বলদেব সিং সিরসাকে রোববার এনআইএর সদর দপ্তরে তলব করা হয়েছে। শুক্রবারই কৃষক সংগঠনগুলোর সঙ্গে বিজ্ঞান ভবনে কেন্দ্রের নবম বৈঠকে সিরসার সংগঠনের প্রতিনিধি পূর্ণ সিং হাজির ছিলেন। সিরসার বিরুদ্ধে আন্দোলনের নামে দিলিস্ন সীমানায় বিশৃঙ্খলা তৈরির অভিযোগ উঠেছে। সিরসার অবশ্য বক্তব্য, কৃষক আন্দোলন থেকে নজর ঘোরানোর জন্যই নরেন্দ্র মোদির সরকার এমন অভিযোগ এনেছে।

কৃষক নেতাদের জন্য বাসের বন্দোবস্ত বা অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করছেন, এমন চার জন পঞ্জাবের ব্যবসায়ীকেও এনআইএ আগেই তলব করেছে। শুক্রবার কৃষক নেতারা কেন্দ্রের দিকে অভিযোগ তুললে মন্ত্রীরা কোনো জবাব দিতে চাননি। এনআইএর অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্রে 'সন্ত্রাসী' গুরপতওয়ান্ত সিং পান্নুর তৈরি 'শিখস ফর জাস্টিস' সংগঠনের সঙ্গে এসব ব্যক্তিদের যোগাযোগ রয়েছে। সেই মামলায় নাম জড়িয়ে সিরসাকেও তলব করা হয়েছে। কৃষক নেতাদের অভিযোগ, এখন পর্যন্ত অন্তত ১০ জনকে নোটিশ পাঠিয়েছে এনআইএ।

কিন্তু সিরসা জানিয়েছেন, তাদের সঙ্গে 'শিখস ফর জাস্টিস'র সম্পর্ক নেই। সিরসা বলেছেন, 'এর আগে সুপ্রিম কোর্টের মাধ্যমে আমাদের আন্দোলন বানচালের চেষ্টা করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। এবার এনআইএর সাহায্য নিচ্ছে তারা।'

আমেরিকায় বিক্ষোভ / ফিলিস্তিনপন্থি শিক্ষার্থীরা অনড়

দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল আগেই সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছেন, আন্দোলনকারী কৃষকদের মধ্যে খলিস্তানি অনুপ্রবেশ ঘটেছে। সিরসার বক্তব্য, 'কৃষক আন্দোলনকে সাহায্য করছেন, এমন অনেককেই এনআইএ ডেকে পাঠাচ্ছে। ২৬ জানুয়ারির কিষাণ প্যারেড ওরা আটকাতে চায়। ভয় দেখিয়ে আমাদের দমিয়ে রাখা যাবে না।'

এরই মধ্যে রোববার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়ন 'লোকশক্তি' নামে একটি কৃষক সংগঠন। এরাও দিলিস্ন সীমানায় নয়ডায় নতুন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। লোকশক্তির অনুরোধ, কৃষকদের ক্ষোভ শোনার জন্য আদালত যে চার সদস্যের প্যানেল গড়ে দিয়েছিল, সেটি যেন নতুন করে গঠন করা হয়। সম্প্রতি ওই প্যানেলের সদস্য ভুপেন্দ্র সিং মান নিজের নাম সরিয়ে নিয়েছেন। সংগঠনটির বক্তব্য, প্যানেলের বাকি তিন সদস্য এরই মধ্যে নতুন কৃষি আইনকে সমর্থন জানিয়েছেন। তাই কৃষকদের পক্ষে ন্যায়বিচার পাওয়া সম্ভব নয়। ২৬ তারিখ কৃষকদের ট্র্যাক্টর প্যারেড যাতে না করতে দেওয়া হয়, সে জন্য এরই মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের কাছে আবেদন জানিয়েছে কেন্দ্র। প্রধান বিচারপতি এস এ বোবডের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ আগামী ১৮ জানুয়ারি সেই মামলা শুনতে রাজি হয়েছে। তবে কেন্দ্রের সেই আর্জি খারিজ করার আবেদন জানিয়েছে লোকশক্তি।

এদিকে, রোববার দিলিস্নর টিকরি সীমানায় বাহের সিং নামে ৩৫ বছরের এক কৃষকের মৃতু্য হয়েছে। বাহের রাতে কৃষকদের ট্র্যাক্টর পাহারা দিতেন। শুক্রবার রাত ৩টা নাগাদ তিনি ঘুমোতে গিয়ে আর ওঠেননি। গাজিপুর সীমানায় তিরথ সিং নামে এক প্রবীণ কৃষকেরও মৃতু্য হয়েছে। গত ১৫ দিন ধরে তিনি বিক্ষোভে ছিলেন।