বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
করোনা সংক্রমণ

নিজের বিয়ে পেছালেন জেসিন্ডা

ম যাযাদি ডেস্ক
  ২৪ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০

করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় বাতিল হচ্ছে একের পর এক অনুষ্ঠান। এমনকি, বিয়ের নিমন্ত্রিতদের তালিকাও কাটছাঁট করতে হচ্ছে। কে থাকবেন আর কে বাদ পড়বেন, তা বাছাই করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। গত দুই বছরে এটাই চেনা ছবি হয়ে গেছে। এবার মহামারির কোপে পিছিয়ে গেল খোদ নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্নের বিয়েও। বলা ভালো, নিজেই পিছিয়ে দিয়েছেন বিয়ের অনুষ্ঠান। সংবাদসূত্র : বিবিসি

নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডার দীর্ঘদিনের সঙ্গী ক্লার্ক গেফর্ড। তারা নিজেদের বিয়ের দিনক্ষণ এখনো ঘোষণা করেননি। তবে তাদের ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে খবর, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই তাদের বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নিউজিল্যান্ডে হঠাৎ করেই মাথাচারা দিয়েছে ওমিক্রন আতঙ্ক। এমন পরিস্থিতিতে বিয়ে পিছিয়ে দেওয়ার ঘোষণা দিলেন প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা।

ওমিক্রনের সংক্রমণ রুখতে সে দেশে নতুন বিধিনিধেষ আরোপ করা হয়েছে। রোববার স্থানীয় সময় মধ্যরাত থেকে নতুন নিষেধাজ্ঞাগুলো কার্যকর হয়। এতে বলা হয়েছে, যেকোনো অনুষ্ঠানে উদযাপনের স্থানে টিকা দেওয়া থাকলে ১০০ জন এবং টিকার সনদ না থাকলে সর্বোচ্চ ২৫ জন উপস্থিত থাকতে পারবেন। এই স্থানগুলোর মধ্যে ব্যায়ামাগার এবং বিয়ের ভেনু্যও রয়েছে। চার বছর বা এর বেশি বয়সি শিক্ষার্থীদের স্কুলে মাস্ক পরতে হবে বলে নির্দেশনায় বলা হয়। এই নিয়ম কার্যকর করার পরই নিজের বিয়ে পিছিয়ে দেন জেসিন্ডা আরডার্ন।

জেসিন্ডা রোববার সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন, টেলিভিশন উপস্থাপক ক্লার্ক গেফোর্ডের সঙ্গে তার বিয়ে নির্ধারিত সময় হচ্ছে না। তিনি বলেন, 'আমাকে সাহস করে বলতে হচ্ছে, হাজার হাজার নিউজিল্যান্ডের বাসিন্দা যাদের জীবনে মহামারি মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে, তাদের থেকে আমি আলাদা নই। এই প্রভাবের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর হলো, কেউ যখন গুরুতর অসুস্থ হয়, তখন প্রিয়জনের সঙ্গে থাকতে না পারা। এর বেদনা আমার অন্য যেকোনো দুঃখজনক ঘটনাকে ছাড়িয়ে যাবে।'

উলেস্নখ্য, নিউজিল্যান্ডে ওমিক্রন আতঙ্কে 'রেড অ্যালার্ট' জারি করা হয়েছে। বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য কয়েকজন এক শহর থেকে অন্য শহরে পাড়ি দিয়েছিলেন। এরপরই ওই পরিবারের ৯ সদস্য ওমিক্রন আক্রান্ত হন। এমনকি, যে বিমানে তারা যাতায়াত করেছেন, এর এক কর্মীও ওমিক্রন পজিটিভ। কর্মকর্তারা বলছেন, ওই গ্রম্নপ থেকে কমিউনিটি ট্রান্সমিশনের (গোষ্ঠী সংক্রমণ) মাধ্যমে সংক্রমণের মাত্রা আরও বেশি হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এরপরই রাতারাতি বিয়ের অনুষ্ঠানে কড়া বিধিনিষেধ জারি করা হয়। আর সেই বিধিনিষেধে পিছিয়ে গেল প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডার বিয়ের অনুষ্ঠান।

করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে নিউজিল্যান্ড কঠোর কোভিড নিয়মের মধ্যে ছিল। যার কারণে দেশটি মৃতু্যর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছে। বিশ্বের যে দেশগুলো কোভিডের বিস্তার রুখতে সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছিল এবং লকডাউন দিয়েছিল, নিউজিল্যান্ড তাদের মধ্যে একটি। কিন্তু ডেল্টা ভেরিয়েন্টের আবির্ভাবের পর থেকে জেসিন্ডা একটি সম্পূর্ণ কোভিড নির্মূল কৌশল থেকে সরে এসে টিকা দেওয়ার হার বাড়ানো এবং ভাইরাসটিকে স্থানীয়ভাবে মোকাবিলার চেষ্টা শুরু করেন। ধারণা করা হয়, ১২ বছরের বেশি বয়সি জনসংখ্যার প্রায় ৯৪ শতাংশকে সম্পূর্ণরূপে টিকা দেওয়া হয়েছে এবং তাদের মধ্যে ৫৬ শতাংশ বুস্টার ডোজ পেয়েছে।

গত বছর, দেশটি পর্যায়ক্রমে সীমান্ত খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছিল। এর আওতায় বিদেশি ভ্রমণকারীরা ৩০ এপ্রিল থেকে দেশটিতে প্রবেশের অনুমতি পাবে বলে কথা রয়েছে। কিন্তু ওমিক্রনের কারণে পরিকল্পনায় পরিবর্তন আসতে পারে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে