সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রেসিডেন্ট উৎখাত

নাইজার : আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতা দখলে নিল সেনাবাহিনী

ক্ষমতাসীন দলের দপ্তরে হামলা চালিয়েছে অভু্যত্থানপন্থিরা
যাযাদি ডেস্ক
  ২৯ জুলাই ২০২৩, ০০:০০
জেনারেল আব্দুররহমান চিয়ানি

প্রেসিডেন্টকে আটক ও উৎখাতের দুইদিন পর আনুষ্ঠানিকভাবে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজারের ক্ষমতা দখল করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ডের প্রধান জেনারেল আব্দুররহমান চিয়ানি অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকারপ্রধানের দায়িত্ব নিয়েছেন। সংবাদসূত্র : আল-জাজিরা, বিবিসি, এএফপি

গত বুধবার প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ডের সদস্যরা ক্ষমতাচু্যত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজোমকে অবরুদ্ধ করে। এরপর অভু্যত্থানের মাধ্যমে তাকে উৎখাতের ঘোষণা দেয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। পরবর্তী সময়ে সেনাবাহিনীও এই অভু্যত্থানে সমর্থন জানায়। শুক্রবার রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে ক্ষমতা দখলের ঘোষণা দিয়ে বলা হয়, 'জেনারেল চিয়ানিকে ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর সেফগার্ড অব দ্য হোমল্যান্ড-এর প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করা হয়েছে।'

৬২ বছর বয়সি জেনারেল চিয়ানিকে ২০১৫ সালে প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ডের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি নাইজারের পূর্বাঞ্চল ইলাবেরির বাসিন্দা। ওই অঞ্চল থেকেই সেনাবাহিনীর বেশির ভাগ সদস্য নিয়োগ পেয়ে থাকে। তিনি সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মাদু ইসুফুর ঘনিষ্ঠ লোক ছিলেন। মোহাম্মাদু ইসুফু ২০২১ সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেছেন।

২০২১ সালে গণতান্ত্রিক উপায়ে সাধারণ মানুষের ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন মোহাম্মদ বাজোম। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার আগেই তার বিরুদ্ধে অভু্যত্থান চেষ্টা চালায় সেনাবাহিনীর একটি অংশ। ওই সময় জেনারেল চিয়ানি সেই অভু্যত্থান প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেন। কিন্তু তিনিই আবার দুই বছর পর ক্ষমতা দখল করলেন।

প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজোমকে আটকের পর পশ্চিমা দেশ ও আফ্রিকার জোটগুলো এর নিন্দা জানায়। তারা নির্বাচিত প্রেসিডেন্টের কাছে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানায়। কিন্তু সেসব আহ্বানে সাড়া না দিয়ে দুইদিন পর আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী।

নাইজারের প্রতিবেশী দেশ মালি এবং বুরকিনা ফাসোতেও অভু্যত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেছে সেনাবাহিনী। মালিতে ক্ষমতা দখলের পর ফ্রান্সের সেনাবাহিনীকে বের করে দেন সেনা কর্মকর্তারা। এরপর নাইজারে অবস্থান নেয় তারা। এখন সেখানেও সেনাবাহিনীর অভু্যত্থান হওয়ায় আফ্রিকায় ফ্রান্স ও পশ্চিমা দেশগুলোর প্রভাব এবং ক্ষমতা প্রায় শূন্যের কাছে চলে এসেছে।

ক্ষমতাসীন দলের দপ্তরে হামলা

এদিকে, নাইজারে অভু্যত্থান ঘটিয়ে প্রেসিডেন্টকে উৎখাতের পর রাজধানীতে ক্ষমতাসীন দলের সদর দপ্তরগুলোতে হামলা করেছে অভু্যত্থানের সমর্থকরা। তারা ভবনে আগুন দিয়েছে, পাথর ছুড়ে মেরেছে এবং দপ্তরের বাইরে গড়িও পুড়িয়ে দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট গার্ডের সেনা সদস্যদের ঘটানো অভু্যত্থানে সেনাবাহিনী সমর্থন ঘোষণা করার পর বৃহস্পতিবার এই হামলার ঘটনা ঘটে।

আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো বলছে, অভু্যত্থানকারী নেতাদের সমর্থনে শত শত মানুষ পার্লামেন্টের সামনে জড়ো হয়ে ক্ষমতাসীন দলের দপ্তরের দিকে যায়। পুলিশ টিয়ারগ্যাস ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করেছে। অভু্যত্থানের সমর্থকরা সেনাবাহিনীপন্থি সঙ্গীত বাজিয়েছে। অনেকে উড়িয়েছে রাশিয়ার পতাকা। আবার কেউ কেউ ফ্রান্সবিরোধী স্স্নোগানও দিয়েছে। অভু্যত্থানপন্থিরা ক্ষমতাসীন দলের (পিএনডিএস-তারায়া) বিরুদ্ধে দুর্নীতি এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতি উন্নয়নে যথেষ্ট কাজ না করার অভিযোগ করেছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে