শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১
পাল্টা হামলা

রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও সাফল্য দাবি করেছে ইউক্রেন

বাখমুতের আরেকটি গ্রাম এখন কিয়েভ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে সব উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরখাস্ত
যাযাদি ডেস্ক
  ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০
বাখমুত শহরের দক্ষিণে ক্লিশচিভকা গ্রাম পুনরুদ্ধারের পর ইউক্রেন ও বিভিন্ন বাহিনীর পতাকা প্রদর্শন করছে সেনারা। ছবিটি ইউক্রেনীয় স্থলবাহিনীর প্রধান ওলেক্সান্ডার সিরস্কি শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করেছেন -রয়টার্স অনলাইন

পাল্টা হামলা চালিয়ে রাশিয়ার হাত থেকে অধিকৃত এলাকা পুনরুদ্ধার এবং ২০১৪ সালে দখল করা ক্রিমিয়া উপদ্বীপে হামলা চালানোর ক্ষেত্রে ইউক্রেন আরও কিছু সাফল্য দাবি করেছে। রোববার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি তার দৈনিক ভিডিও বার্তায় বলেন, বাখমুত শহরের দক্ষিণে ক্লিশচিভকা গ্রাম ইউক্রেনের সেনাদের নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। তার মতে, ধাপে ধাপে গোটা বাখমুত শহরও আবার শত্রম্নমুক্ত করা হবে। জেলেনস্কি আরও বলেন, কিয়েভ ইউক্রেনের জন্য নতুন প্রতিরক্ষা সমাধান প্রস্তুত করছে। এই বিষয়ে বিস্তারিত আর কিছু না জানিয়ে তিনি বলেন, আকাশ প্রতিরক্ষা ও আর্টিলারি এ ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার হিসেবে থাকবে'। সংবাদসূত্র : রয়টার্স, এএফপি, ডিডাবিস্নউ নিউজ, আল-জাজিরা

ইউক্রেনের স্থলবাহিনীর প্রধান ওলেক্সান্ডার সিরস্কি সেই গ্রামে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের একটি ভিডিও প্রকাশ করেন। যদিও নিরপেক্ষভাবে সেই দাবি যাচাই করা এখনো সম্ভব হয়নি। মস্কোও বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযানে ইউক্রেন এখনো তেমন উলেস্নখযোগ্য সাফল্য না পেলেও বাখমুত শহরের কাছে কিছু এলাকা পুনর্দখলের মাধ্যমে দেশের দক্ষিণে রুশ বাহিনীকে তাড়ানোর কাজ সহজ হবে বলে অনেক সামরিক বিশ্লেষক মনে করছেন। ইলিয়া ইভলাশ নামের এক সামরিক মুখপাত্র বলেন, এই সংঘাতে রুশ বাহিনীর এয়ারবোর্ন ইউনিট এবং চেচেন নেতা রমজান কাদিরভের 'আখমাত' বাহিনীর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সেইসঙ্গে রুশ অপরাধীদের ইউনিট 'স্টর্ম জেড', সামরিক গোয়েন্দা বাহিনী ও মোটোরাইজড রাইফেল ইউনিটও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। টেলিগ্রাম চ্যানেলে সেই দাবি করে ইভলাশ লেখেন, যে এই সাফল্যের ফলে হানাদার বাহিনীর হাত থেকে দেশের অনেক অংশ পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে আরও সুবিধা হবে।

রোববারই ক্রিমিয়া উপদ্বীপে কমপক্ষে ৯টি ড্রোন হামলার কথা জানিয়েছে রাশিয়া। মস্কোর উপকণ্ঠে এবং দুটি সীমান্ত এলাকায়ও এমন হামলা ঘটেছে। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় টেলিগ্রাম চ্যানেলে অবশ্য সব ড্রোন হামলা বানচাল করা হয়েছে বলে দাবি করেছে। মোট ১৩টি হামলার উলেস্নখ করেছে রাশিয়া। তবে কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের উলেস্নখ করেনি মস্কো। শুধু ইউক্রেনের পূর্বে খারকিভ শহরে এক সামরিক যান মেরামতের কারখানায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ক্ষতির কথা স্বীকার করা হয়েছে।

ইউক্রেন ও রাশিয়ার সংঘাত শুধু যুদ্ধক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ নেই। জাতিসংঘের মানবাধিকার আদালতেও সোমবার থেকে দুই দেশ নিজস্ব অবস্থান তুলে ধরছে। গত বছর ইউক্রেনের ওপর হামলার অজুহাত হিসেবে রাশিয়া ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে গণহত্যার দাবি তুলেছিল। দুই পক্ষের বক্তব্য শুনে আদালতের রাশিয়ার চলমান সামরিক পদক্ষেপ বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়ার এক্তিয়ার আছে কিনা, সেদিকে সবার নজর থাকবে।

২০২২ সালের ২৪ ফেব্রম্নয়ারি রাশিয়ার হামলা শুরু হওয়ার দুই দিন পর ইউক্রেন জাতিসংঘের আদালতের দ্বারস্থ হয়। ওই বছরের মার্চ মাসে আদালত ইউক্রেনের পক্ষে অবস্থান নিয়ে অবিলম্বে সামরিক অভিযান বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু সেই 'প্রাথমিক রায়' সত্ত্বেও আদালতের এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তাছাড়া জাতিসংঘের রায় কার্যকর করা বাধ্যতামূলক হলেও সেটি নিশ্চিত করতে আদালতের হাতে কোনো পুলিশ বাহিনী নেই। রাশিয়ার মতে, এ ক্ষেত্রে আদালতের কোনো এখতিয়ার নেই।

ইউক্রেনের সব উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরখাস্ত

কিয়েভের সব উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে বরখাস্ত করেছে ইউক্রেন। এসব উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রীর মধ্যে রয়েছেন হান্না মালিয়ার, ভলোদিমির হ্যাভ্রিলোভ, রোস্তিসস্নাভ জামলিন্সকি, ডেনিস শারাপোভ, আন্দ্রি শেভচেঙ্কো ও চিতালি দেইনেহা।

গত ৬ সেপ্টেম্বর দেশটিতে নতুন প্রতিরক্ষামন্ত্রী নিয়োগের ঘোষণা দেওয়া হয়। এরপরই সোমবার এই ঘোষণা এলো।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে