আজকের যায়যায়দিন

গত শনিবার দিবাগত রাতে ইরান থেকে ইসরাইলে যে তিন শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করা হয়, সেগুলো যেন ইসরাইল পর্যন্ত না পৌঁছে সেই চেষ্টা করেছে জর্ডান। এর প্রতিবাদে ব্যাপক বিক্ষোভ করেছে দেশটির মানুষ। তথ্যসূত্র : ডিডাবিস্নউ নিউজ

কয়েক সপ্তাহ ধরে ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা জর্ডানের নাগরিকরা তাদের সরকারের এমন কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করেছে। হুসেইন নামে দেশটির একজন রাজনৈতিক অ্যাক্টিভিস্ট বলেন, 'জর্ডান যেভাবে ইসরাইলকে রক্ষা করেছে তাতে আমি খুবই বিরক্ত।' বিপদের আশঙ্কা থাকায় তিনি তার পুরো নাম উলেস্নখ করতে চাননি।

আত্মরক্ষার জন্য এটি করা হয়েছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে জর্ডান সরকার। বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, 'এগুলো আমাদের জনগণ ও জনবহুল এলাকার জন্য হুমকিস্বরূপ ছিল।'

কিন্তু হুসেইন বলেন, 'এখানকার অনেকেই এটা মেনে নিচ্ছে না। আমরা ইরানকে সমর্থন করি না এবং গাজায় এখন যা ঘটছে, তার পেছনে ইরানের বড় ভূমিকা আছে বলে মনে করি। কিন্তু গাজায় ইসরাইলের কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করে এমন যেকোনো পদক্ষেপের সঙ্গে আমরা আছি।'

আমেরিকায় শিক্ষার্থী বিক্ষোভ / হার্ভার্ডে উড়ল ফিলিস্তিনি পতাকা

মরিয়াম নামে আম্মানের এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী বলেন, 'জর্ডানে ইরানের জনপ্রিয়তা নেই। কিন্তু আমি ইরানের নিক্ষেপ করা ক্ষেপণাস্ত্র জর্ডানের বাধা দেওয়া ও অনিচ্ছাকৃতভাবে এই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া প্রত্যাখ্যান করি।' উলেস্নখ্য, জর্ডানের রানিসহ প্রতি পাঁচজনের একজন ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত।

আম্মানের সামরিক বিশ্লেষক মাহমুদ রিদাসাদ বলেন, সপ্তাহান্তে যে ঘটনা ঘটেছে, তাকে 'কখনো ইসরায়েলকে রক্ষার জন্য করা হয়েছে তেমনটা বলা যাবে না, বরং জর্ডানের সার্বভৌমত্ব এবং আকাশসীমা রক্ষার জন্য করা হয়েছে।' কারণ ড্রোন বা ক্ষেপণাস্ত্র কোথায় পড়বে, তা জানা যায় না বলে মন্তব্য করেন তিনি। এদিকে জর্ডান সহায়তা করেছে বলে ইসরাইলের গণমাধ্যমে খুশির খবর প্রকাশ সম্পর্কে রিদাসাদ বলেন, 'এটা ইসরাইলের প্রপাগান্ডা ছাড়া কিছু নয়।'

ব্রাসেলসভিত্তিক 'থিংক ট্যাংক ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রম্নপের ফিলিস্তিন বিষয়ক বিশ্লেষক তাহানি মুস্তফা জানান, সপ্তাহান্তের ঘটনা নিয়ে জর্ডানের নাগরিকরা বিভক্ত। কারণ 'আমেরিকা ও ইসরাইলের সঙ্গে জর্ডানের অর্থনৈতিক, কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা সম্পর্ক নিয়ে মানুষ বিস্তারিত জানে না, কারণ এসব বিষয় নিয়ে এখানে বেশি লেখা হয় না।'

২০২১ সালে আমেরিকা ও জর্ডানের মধ্যে একটি প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি সই হয়েছিল। কিন্তু এক্ষেত্রে জর্ডানের পার্লামেন্টের অনুমোদন নেওয়া হয়নি বলে সমালোচনা রয়েছে। এই চুক্তির আওতায় মার্কিন সামরিক বাহিনীর সদস্য, পরিবহণ এবং বিমান বাধা ছাড়াই জর্ডানে ঢুকতে ও ঘুরে বেড়াতে পারবে।