সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
কঠোর অবস্থানে ব্রিটিশ সরকার

নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে পরোয়ানায় আপত্তি নেই যুক্তরাজ্যের

যদি নেতানিয়াহু অন্য কোনো দেশে যান, তাহলে তিনি গ্রেপ্তার হতে পারেন যুদ্ধাপরাধী হিসেবে নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তার করা উচিত : হামাস
যাযাদি ডেস্ক
  ২৭ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে পরোয়ানায় আপত্তি নেই যুক্তরাজ্যের

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারিতে নিজেদের আপত্তি প্রত্যাহার করে নিয়েছে যুক্তরাজ্য। এতে করে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) পরোয়ানা জারির পথ সুগম হয়েছে। যুক্তরাজ্যের নতুন সরকার যে ইসরাইলের প্রতি কঠোর অবস্থান নেবে- আপত্তি তুলে নেওয়ার মাধ্যমে সেটিরও ধারণা পাওয়া গেছে। তথ্যসূত্র : গার্ডিয়ান, আনাদলু নিউজ

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ১০ নং ডাউনিং স্ট্রিট শুক্রবার আপত্তি প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। দপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেছেন, পরোয়ানা জারির ক্ষেত্রে আইসিসির এখতিয়ার থাকা নিয়ে তারা যে আপত্তি করেছিলেন, সেটি তুলে নিচ্ছেন।

গাজায় বর্বরতা চালানোয় ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার সহযোগী ইয়োভ গালান্তের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন জানান আইসিসির প্রধান প্রসিকিউটর করিম খান। এছাড়া হামাসের তিন নেতার বিরুদ্ধেও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে পরোয়ানা জারির আবেদন করেন তিনি।

যুক্তরাজ্য আপত্তি প্রত্যাহার করার অর্থ হলো, আইসিসি নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করতে পারে। এতে করে যদি নেতানিয়াহু অন্য কোনো দেশে যান, তাহলে তিনি গ্রেপ্তার হতে পারেন।

গত মে মাসে সদ্য বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক আইসিসির প্রসিকিউটর করিম খানের সমালোচনা করেন এবং জানান আদালতের এখতিয়ার নিয়ে চ্যালেঞ্জ জানাবেন তিনি।

ইসরাইল এবং আমেরিকা কেউই আইসিসির সদস্য নয়। তবে যুক্তরাজ্য এটির অংশ। ফলে আমেরিকা ও ইসরাইল যুক্তরাজ্যের ওপর চাপ দিচ্ছিল- তারা যেন আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানার ক্ষেত্রে আপত্তি অব্যাহত রাখে। কিন্তু নতুন প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার চাপ উপেক্ষা করে আপত্তি তুলে নিয়েছেন।

এর আগে, যুদ্ধাপরাধী হিসেবে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তার করা উচিত বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। একইসঙ্গে নেতানিয়াহুকে মার্কিন কংগ্রেসে ভাষণের সুযোগ দেওয়ারও সমালোচনা করেছে গোষ্ঠীটি। নেতানিয়াহুকে আমেরিকান কংগ্রেসে ভাষণ দেওয়ার সুযোগের নিন্দা করে হামাস বৃহস্পতিবার বলেছে, তাকে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে গ্রেপ্তার করা উচিত ছিল।

উলেস্নখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরাইল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরাইলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, গাজায় চলমান আগ্রাসনে প্রায় ৩৯ হাজার ২০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। এছাড়া আরও ৯০ হাজারের বেশি মানুষ এই আগ্রাসনে আহত হয়েছেন।

ইসরাইলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখের বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখন্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরাইল এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে। গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরাইল অবরুদ্ধ এই ভূখন্ডে তার নৃশংস হামলা অব্যাহত রেখেছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে