বুধবার, ০৭ মে ২০২৫, ২৪ বৈশাখ ১৪৩২

এবার ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে মার্কিন উদ্যোগ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
এবার ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে মার্কিন উদ্যোগ
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে রণসাজে সৈন্যরা -ইন্টারনেট

গাজায় যুদ্ধ বিরতির ব্যাপারে হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে মধ্যস্থতা করার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র গুরুত্বপূূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ ব্যাপারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যক্তিগত অবদানও কম নয়। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করার আগে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের ব্যাপার প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছিলেন। আর দায়িত্ব গ্রহণের পর ই্‌উক্রেন যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্র আনেকটা নড়েচড়ে বসেছে। গাজায় যুদ্ধবিরতির পর এখন আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সামনে একটি বড় চ্যালেঞ্জ ইউক্রেনে যুদ্ধ থামানো। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ট্রাম্প প্রশাসন একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির নথি তৈরি করছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।

সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন রুবিও। এর মাধ্যমে দেশটির বিদায়ী পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি বিস্নংকেনের উত্তরসূরি হন তিনি। শপথ গ্রহণের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে রুবিও বলেন, 'আমাদের প্রেসিডেন্ট আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইসু্যর মধ্যে ইউক্রেনে যুদ্ধের অবসানকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছেন। এ লক্ষ্যে শিগগিরই দাপ্তরিক তৎপরতা শুরু করবেন তিনি। একটি খসড়া যুদ্ধবিরতি চুক্তির নথি তৈরির কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। এই যুদ্ধটি খুবই জটিল হয়ে উঠেছে এবং গত প্রায় ৩ বছরে প্রচুর রাক্তপাতও হয়েছে এ যুদ্ধে। এটা শেষ হওয়া প্রয়োজন।'

সম্ভাব্য সেই যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে কী কী ধারা থাকছে, সাংবাদিকদের এ প্রশ্ন এড়িয়ে রুবিও বলেন, 'নথিটি এমনভাবে তৈরি করা হচ্ছে যে আমাদের বিশ্বাস, মস্কো এবং কিয়েভ উভয়েই অন্তত এর কয়েকটি ধারার সঙ্গে একমত হবে। সম্পূর্ণ নথিটি প্রস্তুত করা হবে দুই দেশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে।'

'কারণ এ যুদ্ধের প্রধান দু'টি পক্ষ রাশিয়া এবং ইউক্রেন। তাই এ ইসু্যতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া এক্তিয়ারও একমাত্র রয়েছে এ দু'টি দেশেরই।' গত বছর নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর মার্কিন সাংবিধানিক বিধি মেনে গত ২০ জানুয়ারি শপথ গ্রহণ করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। নির্বাচনে জয়ের পর ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছিলেন, শপথ গ্রহণের আগেই গাজা এবং ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি চান তিনি। ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের এক দিন আগে, ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে গাজায়। এখন বাকি ইউক্রেন।

মঙ্গলবারের মতবিনিময় সভায় রুবিওকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেছিলেন কবে নাগাদ শেষ হতে পারে এই যুদ্ধবিরতি চুক্তির নথি তৈরির কাজ। তবে রুবিও এ প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে গেছেন। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, রাশিয়ার ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করা হবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের প্রধান নীতি। তিনি আরও জানান, এই পদক্ষেপ শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। মঙ্গলবার শপথ নেওয়ার আগে এনবিসির টুডে অনুষ্ঠানে রুবিও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের আনুষ্ঠানিক নীতি হবে এই যুদ্ধ বন্ধ করা এবং আমরা তা সম্ভব করতে সব কিছু করব।

রুবিও আরও বলেন, এই সংঘাতের অবসান ঘটাতে মস্কো এবং কিয়েভ উভয়কেই কিছু ছাড় দিতে হবে। তিনি ইঙ্গিত দেন যে, ইউক্রেনকে রাশিয়া দখল করা সব অঞ্চল পুনরুদ্ধারের লক্ষ্য থেকে সরে আসতে হতে পারে। সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেনকে বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র সহায়তা দিয়েছিলেন। বাইডেন বলেছিলেন, রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনা কখন এবং কীভাবে হবে তা ইউক্রেনের ওপর নির্ভর করবে।

\হট্রাম্প তার নির্বাচনি প্রচারণায় দ্রম্নত যুদ্ধ শেষ করার প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছিলেন। যদিও কীভাবে তা করবেন তা স্পষ্ট করেননি। রুবিও বলেন, এটি জটিল হবে, কারণ প্রত্যেক পক্ষকে কিছু না কিছু ছাড় দিতে হবে। তিনি আরও বলেছেন, এ ধরনের সংঘাত কেবল কূটনৈতিক পথে শেষ হয়। যুক্তরাষ্ট্র এমন কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালাবে, যা ইউক্রেন ও আঞ্চলিক অংশীদারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং সংঘাতের ধ্বংসযজ্ঞ বন্ধ করে। ৫৩ বছর বয়সি রুবিও দীর্ঘদিন যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটের পররাষ্ট্র সম্পর্ক ও গোয়েন্দা কমিটির সদস্য ছিলেন। কিউবার অভিবাসী পরিবারের সন্তান রুবিও চীনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান এবং ইসরায়েলের সমর্থক হিসেবে পরিচিত।

তিনি ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো এবং কিউবার কমিউনিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের পক্ষে ছিলেন। হোয়াইট হাউজে শপথ নেওয়ার পর রুবিও বলেন, আমরা ট্রাম্প প্রশাসনের পররাষ্ট্রনীতি এমনভাবে পরিচালনা করব, যা যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থকে এগিয়ে নেবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে