রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যুদ্ধ শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিলেও এই সংঘর্ষ থামেনি। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে। সোমবার ট্রাম্প শপথ নেওয়ার পরপরই কিয়েভ ও মস্কো পাল্টাপাল্টি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। মঙ্গলবার রাতেও দুই পক্ষ হামলা অব্যাহত রেখেছে। রাশিয়া জানিয়েছে, তারা ৫৫টি ইউক্রেনীয় ড্রোন ভূপাতিত করেছে, যার মধ্যে অর্ধেকের বেশি সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ধ্বংস করা হয়েছে।
ইউক্রেনের দাবি, তারা ভোরোনেজ অঞ্চলের লিসকি শহরের কাছে একটি তেল ডিপোতে হামলা চালিয়েছে। এতে ডিপোতে আগুন ধরে যায়। এক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় হামলার ঘটনা এটি। অঞ্চলটির গভর্নর আলেক্সান্ডার গুসেভ বলেছেন, ভূপাতিত ড্রোনের ধ্বংসাবশেষ থেকে আগুন লাগে, তবে কেউ হতাহত হয়নি। ইউক্রেন আরও জানিয়েছে, তারা পশ্চিম রাশিয়ার স্মলেনস্ক শহরের একটি বিমান কারখানায় হামলা চালিয়ে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। এখানে যুদ্ধবিমান উৎপাদন হয়। ইউক্রেনের বিমান বাহিনীর দাবি, তারা রাশিয়ার ছোড়া ১৪১টি ড্রোনের মধ্যে ৯৩টি ধ্বংস করেছে। কয়েকটি ড্রোন দিক হারিয়েছে এবং দুটি ফিরে গেছে রাশিয়ায়।
অন্যদিকে, রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাস জানিয়েছে, তাদের সেনারা ডোনেস্ক অঞ্চলের ভোভকোভ গ্রাম দখল করেছে। এটি পোক্রভস্ক শহর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত। তবে কিয়েভ এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। সোমবার ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি তাকে শান্তিচুক্তি করতে ইচ্ছুক বলে জানিয়েছেন। ট্রাম্প আশা প্রকাশ করেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও এই পথে হাঁটবেন।
ট্রাম্প বলেন, পুতিন যদি চুক্তি না করেন তবে তিনি রাশিয়াকে ধ্বংস করবেন। কারণ দেশটি অর্থনৈতিক সংকটে রয়েছে। এদিকে পুতিন একই দিন বলেছেন, মস্কো ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনায় আগ্রহী, তবে রাশিয়ার স্বার্থকে অবশ্যই সম্মান জানাতে হবে।
ট্রাম্প একাধিকবার বলেছেন, তিনি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যুদ্ধ শেষ করবেন। তবে তিনি তার পরিকল্পনার বিস্তারিত কোনও দিক তুলে ধরেননি। তার দলের সূত্রে জানা গেছে, ট্রাম্প হয়তো রাশিয়াকে ক্রিমিয়া এবং ২০১৪ সালে দখলকৃত চারটি ইউক্রেনীয় অঞ্চল ধরে রাখার অনুমতি দিতে পারেন। রাশিয়ার পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ মঙ্গলবার বলেছেন, ইউক্রেন সংকট সমাধানে ওয়াশিংটন থেকে এখনও কোনও নির্দিষ্ট প্রস্তাব আসেনি। ট্রাম্পের শপথের পরপরই পুতিন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দীর্ঘ ফোনালাপ করেন। মঙ্গলবারের আলোচনায় উভয় নেতা বহুমুখী ভূ-রাজনৈতিক পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানোর অঙ্গীকার করেন। পুতিন বলেন, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে রাশিয়া ও চীনের যৌথ উদ্যোগ একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থিতিশীল ভূমিকা পালন করছে। চীনের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম সিসিটিভি জানায়, শি বলেছেন উভয় পক্ষকে কৌশলগত সমন্বয় আরও গভীর করতে হবে। একে অপরকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করতে এবং উভয় দেশের বৈধ স্বার্থ রক্ষায় মনোযোগ দিতে হবে।