মানবজাতি বিজ্ঞানের সহায়তায় বিশ্বকে হাতের মুঠোয় এনেছে। মহাকাশ অভিযান, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ডিজিটাল বিপ্লব সবকিছু মিলিয়ে এ সময়টি হতে পারত মানবতার শ্রেষ্ঠ স্বর্ণযুগ। অথচ দুঃখজনক হলেও সত্য, মানুষ আজও যুদ্ধকে কেন্দ্র করেই নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণে ব্যস্ত।
কারা জিতল, কারা হারল— এই নিয়ে চলে আলোচনার ঝড়। অথচ কেউ ভাবে না, কেন এই যুদ্ধ? কারা হারাল জীবন, কে দিল চোখের জল?
মানবতার বদলে এখনো অস্ত্রের গর্জনই সভ্যতার মুখ্য ভাষা। যুদ্ধের জন্য তৈরি হচ্ছে আধুনিক মারণাস্ত্র। ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে যাচ্ছে শিশুদের ভবিষ্যৎ, মায়ের কান্না আর বৃদ্ধের দীর্ঘশ্বাস। বিশ্ব যখন আরও মানবিক ও সহনশীল হওয়ার কথা, তখন আরও বর্বর, রক্তাক্ত ও স্বার্থান্ধ হয়ে উঠছে।
আজকের বিশ্বে একদিকে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য দেয়া হচ্ছে নোবেল পুরস্কার, অন্যদিকে সেই পুরস্কারপ্রাপ্ত রাষ্ট্র কিংবা প্রতিষ্ঠানই অন্য দেশে সংঘাত ছড়াতে, অস্ত্র রপ্তানি করতে বা সরাসরি যুদ্ধে জড়াতে পিছপা হচ্ছে না। মানবতার এই ভণ্ডামি এক গভীর চিন্তার অবকাশ রাখে।
“মানুষ যখন নিজের বিবেককে উপেক্ষা করে অস্ত্র তুলে নেয়, তখন সভ্যতা এক ধাপে পশ্চাৎমুখী হয়ে পড়ে।”
পৃথিবীর দরিদ্র, পীড়িত মানুষের মুখে খাবার নেই, মাথায় ছাদ নেই, নিরাপত্তার নিশ্চয়তা নেই। অথচ উন্নত রাষ্ট্রগুলো যুদ্ধের পেছনে খরচ করছে হাজার হাজার কোটি কোটি ডলার। মানবতার প্রয়োজন যেখানে অন্ন, শিক্ষা, চিকিৎসা— সেখানে পাওয়া যাচ্ছে বোমা, ড্রোন আর মিসাইল।
এই দ্বিচারিতার অবসান দরকার। বিশ্বকে দরকার এক নতুন বোধ— যেখানে মানুষ মানুষকে আপন মনে করে।
যেখানে বৈজ্ঞানিক উন্নতি মানবিক কল্যাণে ব্যবহৃত হবে, ধ্বংসের খেলায় নয়।
পৃথিবী জয় করার চেয়ে বেশি জরুরি পৃথিবীকে রক্ষা করা।
শেষকথা:
মানবতা জাগুক- যুদ্ধ থামুক।
সংঘাত নয়,
সহমর্মিতা হোক আগামী পৃথিবীর মৌলিক আদর্শ।
শান্তির চেয়ে বড় জয় আর নেই।