সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা

টিএফপি'র যথাযথ বাস্তবায়ন হোক
নতুনধারা
  ২৯ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

শারীরিক সুস্থতার পাশাপাশি মানসিক সুস্থতারও কোনো বিকল্প নেই। আর এ জন্যই বলা হয় যে, অন্য অসুস্থতার মতো মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে এবং সচেতন হতে হবে। এ প্রসঙ্গে বলা দরকার, সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, দেশের মাধ্যমিক স্তরের ১২৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে 'টোটাল ফিটনেস প্রোগ্রাম (টিএফপি) বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি, এই সিদ্ধান্ত অত্যন্ত ইতিবাচক। যার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা।

তথ্য মতে, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এই উদ্যাগ নেওয়া হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে লক্ষণীয় যে, বৃহস্পতিবার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (বিশেষ শিক্ষা) সৈয়দ মইনুল হাসান স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনাও প্রকাশ করা হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে- মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীন শিক্ষক/শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে 'টোটাল ফিটনেস প্রোগ্রাম (টিএফপি) বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া এর পরিপ্রেক্ষিতে পাইলটিং ভিত্তিতে সব জেলার একটি সরকারি বালক ও একটি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়সহ মোট ১২৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এক দিনব্যাপী একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালা আয়োজনের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়েছে।

যেখানে জেলা শিক্ষা অফিসাররা স্থানীয় সমন্বয়ক এবং উপজেলা/থানা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসাররা সহকারী স্থানীয় সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করবেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানরা কর্মশালা আয়োজনের ব্যাপারে মুখ্য ভূমিকা পালন করবেন এবং প্রতিষ্ঠান সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। প্রতিষ্ঠান প্রধানের নেতৃত্বে সব শিক্ষক স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানে এই প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজনে সহযোগিতা করবেন এবং প্রশিক্ষণে অংশ নেবেন (পরবর্তী সময়ে অংশগ্রহণকারী শিক্ষকরা এ কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশনার আলোকে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাস্তবায়ন করবেন)। প্রতিটি প্রতিষ্ঠান নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করবে এবং প্রতিষ্ঠানগুলো স্ব স্ব ভেনু্যতে কর্মশালার আয়োজন করবে। স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী প্রশিক্ষকরা এ কর্মশালা পরিচালনা করবেন বলেও জানা গেছে।

প্রসঙ্গত আমরা বলতে চাই, পরিপার্শ্বিক নানা কারণে সারা বিশ্বেই মানসিক স্বাস্থ্য এখন চরম উদ্বেগের বিষয়। শারীরিক রোগের প্রতি অতিরিক্ত মনোযোগ দিতে গিয়ে প্রায়শই মানসিক স্বাস্থ্যর বিষয়টি উপেক্ষিত হয়। অথচ মনও শরীরের অংশ, একে ভালো রাখতে না পারলে কেবল শরীরের রোগ সারিয়ে সুস্বাস্থ্য অর্জন সম্ভব নয়। তাই মনের যত্ন নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। এ ক্ষেত্রে যখন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে উদ্যোগ গ্রহণের বিষয়টি সামনে আসছে- তখন তা আশাব্যঞ্জক। কেননা, যদি মাধ্যমিক স্তর থেকেই মানসিক স্বাস্থ্যর বিষয়ে শিক্ষার্থীরা সচেতন হয়- একইসঙ্গে শিক্ষক/শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়ে অগ্রগতি হয় তবে তার ফল অত্যন্ত সুখকর হবে বলেই প্রতীয়মান হয়।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে- তার যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের সব ধরনের পদক্ষেপ অব্যাহত রাখতে হবে। এই উদ্যোগের সফলতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ ও সচেতনতা বৃদ্ধির কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে। শারীরিক রোগের প্রতি অতিরিক্ত মনোযোগ দিতে গিয়ে মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি যেন উপেক্ষিত না হয়- সেটি নিশ্চিত করতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে