সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট যথাযথ বাস্তবায়ন হোক

নতুনধারা
  ০৩ জুন ২০২৩, ০০:০০

বৈশ্বিক বাস্তবতা আর নানামুখী চাপের কথা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। আর এরই মধ্যেও 'উন্নয়নের অভিযাত্রার দেড় দশক পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা' শিরোনামে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। যা চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের চেয়ে এক লাখ এক হাজার ২৭৮ কোটি টাকা বেশি।

প্রসঙ্গত উলেস্নখ্য, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার এর আগের অর্থবছরের চেয়ে ১২ দশমিক ৩৪ শতাংশ বড়। বাজেটটি ৫০ লাখ ৬ হাজার ৬৭২ কোটি টাকার প্রাক্কলিত জিডিপির ১৫ দশমিক ২১ শতাংশ। এবারের বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা, যা মোট জিডিপির ৫ দশমিক ২ শতাংশ। ঘাটতি মেটাতে বৈদেশিক উৎস থেকে ১ লাখ ২ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা এবং অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা সংগ্রহের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। অন্যদিকে রাজস্ব হিসেবে ৫ লাখ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। লক্ষ্যমাত্রা অনুসারে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সংগ্রহ করবে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা এবং অন্যান্য উৎস থেকে সংগ্রহ করা হবে আরও ৭০ হাজার কোটি টাকা।

আমরা বলতে চাই, এবার যখন বাজেট প্রস্তাব করা হলো তখন নানামুখী সংকট সারা বিশ্বেই। ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ চলমান। পণ্যর দাম বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ বিদ্যমান। ফলে সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ ও বাজেট বাস্তবায়নে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা জারি রাখতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই।

জানা যাচ্ছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বেশকিছু পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক/ভ্যাট) এবং শুল্ক বাড়ানোর সুপারিশ করেছেন। এতে এসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে। মুঠোফোন, গ্যাস, সিলিন্ডার, সিগারেট, তরল নিকোটিন, গাড়ি, বিদেশি সাবান ও ফেসওয়াশ, বাসমতি চাল, কাজুবাদাম, বাইসাইকেলসহ বিভিন্ন পণ্যর দাম বাড়তে পারে, অন্যদিকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বেশকিছু পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক/ভ্যাট) ও শুল্ক কমানোর সুপারিশ করেছেন। এতে যেসব পণ্যের দাম কমতে পারে- এলইডি বাল্ব ও সুইস-সকেট, ই-কমার্সের ডেলিভারি চার্জ, কৃষি যন্ত্র, পানি প্রক্রিয়াকরণ যন্ত্র, হাতে তৈরি বিস্কুট-কেক, মিষ্টি, ম্যালেরিয়া ও যক্ষ্ণার ওষুধ, পশুখাদ্য, অপটিক্যাল ফাইবার, উড়োজাহাজ ইজারা, কনটেইনারসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম কমতে পারে।

আমরা বলতে চাই, বাজেট বাস্তবায়নে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের বিষয় সামনে আসছে সেগুলো আমলে নিয়েও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। নতুন অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এমনটি সামনে এসেছে। সরকার যেভাবেই হোক আগামী অর্থবছরে মূল্যস্ফীতির লাগাম ৬ শতাংশের মধ্যে টেনে রাখতে চায়। নতুন অর্থবছরের জিডিপি হার নির্ধারণ করা হয়েছে ৭.৫ শতাংশ। মোট জিডিপির পরিমাণ ধরা হয়েছে ৫০ লাখ ৬ হাজার ৭৮২ কোটি টাকা।

এ ছাড়া লক্ষণীয়, চলতি অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৮ হাজার ৬৭১ কোটি টাকা বেশি বৈদেশিক ঋণ আগামী অর্থবছরে নেওয়া হবে। ঋণগ্রস্ত বেশি হওয়ায় অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধের জন্য বেশি টাকা গুণতে হবে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে। আগামী অর্থবছরে বৈদেশিক ঋণ নেওয়া হবে ১ লাখ ২ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে বৈদেশিক ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ৮৩ হাজার ৮১৯ কোটি টাকা। এ ছাড়া অভ্যন্তরীণ খাত থেকে নেওয়া হবে ১ লাখ ১৫ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা। ফলে সামগ্রিক এ পরিস্থিতি আমলে নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ অব্যাহত রাখতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত হোক। এছাড়া নানা ধরনের চ্যালেঞ্জে রয়েছে সেগুলো মোকাবিলা করে দেশ এগিয়ে যাক এবং সংকট নিরসনে সর্বাত্মক উদ্যোগ অব্যাহত থাকুক। সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে বাজেটের যথাযথ বাস্তবায়ন হোক এমনটি প্রত্যাশিত।

\হ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে