বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ২৬ আশ্বিন ১৪৩১

পঞ্চম শ্রেণির বিজ্ঞান

রোমানা হাবিব চৌধুরী, সহকারী শিক্ষক, ব্রাইট ফোর টিউটোরিয়াল হোম, চট্টগ্রাম
  ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
পঞ্চম শ্রেণির বিজ্ঞান

দশম অধ্যায়

প্রশ্ন : তথ্য কী? বর্তমান পৃথিবীতে তথ্য যোগাযোগ এত প্রয়োজনীয় কেন?

উত্তর : উপাত্ত যখন বিশেষ প্রয়োজনে ব্যবহৃত হয় তখন তাকে তথ্য বলে। যে জাতি যত সহজে এবং যত তাড়াতাড়ি একে অন্যের সঙ্গে তথ্য বিনিময় করতে পেরেছে সে জাতি তত দ্রম্নত সামনে এগিয়ে গেছে। এ জন্য একটি জাতির সব পেশাজীবী মানুষের মধ্যে তথ্য যোগাযোগ জরুরি। শিক্ষাব্যবস্থায় উন্নতির জন্য শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী ও সংশ্লিষ্ট সবার মধ্যে তথ্য যোগাযোগের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। কৃষকের চাষাবাদ করার জন্য, শ্রমিকের কলকারখানার কাজের জন্য, ডাক্তারের রোগব্যাধি ও চিকিৎসার জন্য, কৃত্রিম উপগ্রহ ব্যবহার করে যথাযথ সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রভৃতি নানারকম কাজের জন্য তথ্য যোগাযোগের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

প্রশ্ন : তোমার বাবা তোমাকে একটি কম্পিউটার কিনে দিলে তা দিয়ে তুমি কী করবে? ৫টি বাক্যে লেখো।

উত্তর : আমার বাবা আমাকে একটি কম্পিউটার কিনে দিলে তা দিয়ে আমি নিম্নবর্ণিত কাজগুলো করব-

\হআমার প্রয়োজনীয় পড়ার শিটগুলো টাইপ করব।

আমার অঙ্কগুলো করার ক্ষেত্রে কম্পিউটারের সহযোগিতা নেব।

ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকার অজানা তথ্য সংগ্রহ করব।

কম্পিউটারে গেম খেলব।

ই-মেইলে বন্ধুদের চিঠি পাঠাব।

প্রশ্ন : বর্তমান যুগ তথ্যপ্রযুক্তির- তোমার জীবনে এর কোনো প্রভাব পড়েছে কী? ৫টি বাক্যে লেখো।

উত্তর : আমার জীবনে তথ্যপ্রযুক্তির প্রভাব ৫টি বাক্যে নিচে উপস্থাপন করা হলো-

১. প্রযুক্তির কারণে আমি এখন ঘরে বসে ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের তথ্য সংগ্রহ করতে পারি।

২. বিভিন্ন প্রকার শিক্ষাপ্রযুক্তির কারণে বর্তমানে পড়াশোনা আমার কাছে অধিক সহজ মনে হচ্ছে।

৩. প্রযুক্তির কল্যাণেই আমি ঘরে বসে বিভিন্ন দেশের খেলাধুলা ও কৃষ্টি সম্পর্কে জানতে পারছি।

৪. মোবাইলনামক প্রযুক্তিটি আমার জীবনে বৈপস্নবিক পরিবর্তন এনেছে। কারণ এর সাহায্যে আমি যেকোনো সময়ে যেকোনো লোকের সঙ্গে কথা বলতে পারছি।

৫. আমার প্রতিদিন সকাল বেলায় পত্রিকা পড়া, বাসে করে স্কুলে যাওয়া, কলম দিয়ে লেখা, বাইকে যেখানে-সেখানে যাওয়া- প্রতিটি কাজই সম্ভব হয়েছে প্রযুক্তির কল্যাণে।

প্রশ্ন : একজন শিক্ষার্থী হিসেবে তুমি কীভাবে শিক্ষায় ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারো। ৫টি বাক্যে লেখো।

উত্তর : শিক্ষার্থী হিসেবে আমি নিম্নলিখিতভাবে শিক্ষায় ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারি-

ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের লাইব্রেরির বইপুস্তক, জার্নাল ও ম্যাগাজিনের সন্ধান পাওয়া যায় এবং সেগুলো পড়তে পারি। ক্লাসে না গিয়েও ইন্টারনেটের মাধ্যমে ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে পারি। ইন্টারনেট ব্যবহার করে শিক্ষকের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় উত্তরটি জানতে পারি। ইন্টারনেটের মাধ্যমে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারি। শিক্ষাবিষয়ক যেকোনো তথ্য ও উপাত্ত ইন্টারনেটে সংরক্ষণ করে রাখতে পারি।

প্রশ্ন : ইন্টারনেট কী কী কাজে লাগে?

উত্তর : ইন্টারনেটের সাহায্যে তথ্য যোগাযোগের নানারকম কাজ করা যায়। যেমন-

১. তথ্যের আদান-প্রদান করা যায়।

২. তথ্য খোঁজা, তথ্য সংগ্রহ করা বা তথ্য পাঠানো যায়।

৩. বাস, ট্রেন বা পেস্ননের টিকিট বুকিং দেওয়া যায়।

৪. কেনাকাটা করা যায়, কোনো জিনিসের অর্ডার দেওয়া যায়।

৫. বিভিন্ন দেশের লাইব্রেরির লাখ লাখ বই-পুস্তক, জার্নাল ও ম্যাগাজিনের সন্ধান পাওয়া এবং পড়া যায়।

৬. বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় অর্জিত অভিজ্ঞতা লাভ করা যায়।

প্রশ্ন : আমাদের জীবনে তথ্যপ্রযুক্তির প্রভাব কী?

উত্তর : আমাদের জীবনের সব ক্ষেত্রেই তথ্যপ্রযুক্তির প্রভাব অপরিসীম। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে আমরা কীভাবে দৈনন্দিন জীবন পরিচালনা করি তার কয়েকটি উদাহরণ নিচে দেওয়া হলো-

১. আবহাওয়া বিভাগের তথ্য থেকে আমরা জানতে পারি বৃষ্টি বা ঝড় হবে কিনা, শীত কী রকম পড়বে। এ তথ্যের ভিত্তিতে আমরা ছাতা নিয়ে বাইরে বের হই। শীতের কাপড় কিনি।

২. স্কুলের শিক্ষক ও নোটিশ বোর্ডের তথ্য থেকে জানতে পারি পরীক্ষা বা অন্য কোনো বিষয়ের সময়সূচি। সে অনুযায়ী আমরা প্রস্তুতি গ্রহণ করি।

৩. সংবাদপত্র, রেডিও, টেলিভিশনের মাধ্যমে দেশ-বিদেশের অনেক তথ্য পেয়ে থাকি। এসব তথ্য আমাদের জ্ঞানভান্ডারকে বৃদ্ধি করে।

৪. কৃষিবিষয়ক তথ্যের ভিত্তিতে কৃষক তাদের চাষাবাদ কাজ ঠিক করে নেয়।

৫. কারও জ্বর হলে থার্মোমিটার দিয়ে শরীরের তাপমাত্রার তথ্য জেনে নিই। এ তথ্য জেনে ডাক্তার ওষুধ দেন।

৬. কখন পোলিও টিকা খাওয়ানো হবে সে তথ্য জেনে বাচ্চাদের টিকা খাওয়াতে নিয়ে যাই।

এভাবে আমাদের জীবনের প্রতিটি কাজই আমরা তথ্যের সাহায্য নিয়ে করে থাকি। তাই আমাদের জীবনযাত্রা তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতা ছাড়া অচল হয়ে পড়বে।

প্রশ্ন :শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তি কীভাবে কাজে লাগে?

উত্তর : শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির প্রভাব অত্যন্ত ব্যাপক ও গভীর। তথ্যপ্রযুক্তি আজকাল শিক্ষাব্যবস্থাকে করেছে গতিশীল, দক্ষ ও পরিপূর্ণ। নিচে এর কয়েকটি উদাহরণ দেওয়া হলো-

১. ঘরে বসেই আজ পৃথিবীর যে কোনো দেশের খ্যাতনামা লাইব্রেরির বই পড়া যায়।

২. শিক্ষার্থীরা ক্লাসে না গিয়েও ইন্টারনেটের মাধ্যমে পারে ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে। শিক্ষককে প্রশ্ন করে প্রয়োজনীয় উত্তরটি জানতে পারে।

৩. শিক্ষাসংক্রান্ত মাল্টিমিডিয়া সিডির মাধ্যমে লেখাপড়ার অসংখ্য চমকপ্রদ বিষয় দেখানো যায়।

৪. কম্পিউটার, ইন্টারনেট, ডিভিডি, মেমোরি কার্ড বা পেনড্রাইভ ব্যবহার করে শিক্ষাবিষয়ক যে কোনো তথ্য সংগ্রহ বা সংরক্ষণ করে রাখা যায়।

৫. ই-বুক ব্যবহার করে পাঠ্যবইয়ের ব্যবহার কমানো সম্ভব।

৬. মোবাইল বা ইন্টারনেট ব্যবহার করে যে কোনো পরীক্ষাসংক্রান্ত তথ্য পাওয়া সম্ভব।

এভাবে শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তিকে কাজে লাগানো যায়। এতে শিক্ষা লাভ হয়ে উঠবে আরও সহজ ও আনন্দদায়ক।

প্রশ্ন : তথ্য সংরক্ষণের উপায়গুলো লেখো।

উত্তর : বর্তমান সময়ে তথ্য সংরক্ষণ করার অনেক ভালো উপায় আছে। যেমন-

১. কাগজে লিখে বা ছাপিয়ে তথ্য সংরক্ষণ করা যায়।

২. টেপ রেকর্ডারে কথা রেকর্ড করার মাধ্যমে তথ্য সংরক্ষণ করা যায়।

৩. সিডিতেও তথ্য সংরক্ষণ করা যায়।

৪. ক্যামেরা দিয়ে ছবি তুলে, ভিডিও করেও তথ্য সংরক্ষণ করা যেতে পারে।

৫. কম্পিউটারে টাইপ করে ও স্ক্যান করে তথ্য সংরক্ষণ করা যেতে পারে।

৬. কম্পিউটারে রেকর্ড, ভিডিও, ছবি এগুলোও সংরক্ষণের ব্যবস্থা আছে।

৭. পেনড্রাইভ, সিডি, ভিসিডি এগুলোরও মধ্যে অনেক তথ্য সংরক্ষণ করা যায়।

হ পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে