সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
সা ক্ষা ৎ কা র

মানসম্পন্ন সুরকারের অভাব

দিঠি আনোয়ার- দেশের প্রখ্যাত গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ারের কন্যা। বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে তিনিও হয়ে উঠেছেন সময়ের আলোচিত কণ্ঠশিল্পী। বর্তমানে তিনি বাবা গাজী মাজহারুল আনোয়ারের ১৭টি গান নিয়ে মিউজিক ভিডিও করছেন। এ নিয়ে দেশাত্মবোধক গান, মিউজিক ভিডিও প্রভৃতি নিয়ে এ শিল্পী সঙ্গে কথা বলেছেন মাতিয়ার রাফায়েল
নতুনধারা
  ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০

কেমন চলছে আপনার গান-বাজনা?

চলছে ভালোই। লাইভ প্রোগ্রামের পাশাপাশি কিছু নতুন গান রেকর্ড করছি। আব্বুর কিছু পুরনো গানও নতুন করে রেকর্ড করছি। আব্বু আমার জন্য আলাদাভাবে মৌলিক কিছু গান লিখেছিলেন। 'দিঠির খাতা' নামে একটা খাতায় ১৭টি গান ছিল। সেগুলোও রেকর্ড করছি। এর মধ্যে পাঁচটি গানের রেকর্ড করা হয়ে গেছে। আব্বু থাকতেই রেকর্ড করে আসছি। এতে অপু সুর দিয়েছেন। এর মধ্যে দেশের গান হিসেবে একটি ইতোমধ্যে জি-সিরিজ থেকে প্রকাশ পেয়েছে। বাকি গানগুলোর রেকর্ড আস্তে ধীরে মিউজিক ভিডিও করে ছাড়ব।

নতুন কোনো গান প্রকাশ্যে এসেছে?

এর মধ্যে কিছুদিন আগে আইপিডিসি-তে 'আমাদের গান'-এ জয়বাংলা, কোরাস গান করেছি। আর টিভি প্রোগ্রাম তো আছেই। এতে নতুন পুরাতন মিলিয়েই গান করছি। এর মধ্যে পুরনো একটি গান নতুন করে গাইলাম- 'সে যে কেন এলো না, কিছু ভালো লাগে না'। এ গানটি কম্পোজিশন করেছেন ইমন সাহা।

আপনার বাবার অপ্রকাশিত গান কেমন আছে?

আব্বুর অপ্রকাশিত গান বলতে আমার জন্য লেখাগুলোই ছিল। এর মধ্যে সর্বশেষ রোজিনা ম্যাডামের 'ফিরে দেখা' সিনেমায় পেস্ন-ব্যাক প্রকাশ পেয়েছে। আরেকটি সর্বশেষ পেস্ন-ব্যাক হিসেবে আছে অরুণা বিশ্বাস পরিচালিত 'অসম্ভব' সিনেমাতেই। এ ছাড়া অন্য কোনো গান অপ্রকাশিত নেই। এটাই ছিল আব্বুর লেখা ফিল্মের জন্য সর্বশেষ গান।

এখন যেসব গান হচ্ছে কেমন মনে করেন?

কালের বিবর্তনে আসলে সব কিছুতেই পরিবর্তন আসে। মিউজিকেও পরিবর্তন এসেছে। এখন হাইটেক এর যুগ। গান শোনার চাইতে দেখানোই হচ্ছে বেশি। এই ভিউনির্ভর গানকে আমি মেনে নিতে পারি না। ভিউ দিয়ে আসলে গানের জনপ্রিয়তাকে যাচাই করা যায় না। ভিউ নানা কারণেই হতে পারে। আজকাল তো ইউটিউবে উল্টাপাল্টাও হচ্ছে। এজন্য আমাকে অনেকে ব্যাক ডেটেড বলেন। কিন্তু এটাই ফ্যাক্ট। আমি মনে করি, যেটার জন্য যেমন মানানসই সেটার প্রকাশও সেভাবে হওয়া উচিত। অথচ এখন সবকিছুকেই জগাখিচুরি বানিয়ে ফেলা হচ্ছে। যেটা অডিওর জন্য মানানসই দেখানো হচ্ছে ভিডিওতে, নাটকে। গান তো দেখার বিষয় না। আগে যেসব গান কালজয়ী হয়েছে সবই রেডিও, গ্রামোফোন রেকর্ড, সিডি-ক্যাসেটের গান। রেডিওতেও তো অনেক গান পপুলার হয়েছে। এখন তো চলতি পথে কেউ গান শোনেই না।

এখনকার সুরকারদের কেমন মনে হয়?

এখন প্রচুর সুরকার থাকলেও কয়জনকে কোয়ালিটি সুরকার বলবেন। অথচ আব্বুদের সময়ে কী বাঘা-বাঘা মিউজিক ডিরেক্টর ছিলেন- খন্দকার নরুল আলম, আলম খান, আলাউদ্দীন আলী, আনোয়ার পারভেজ, সত্য সাহা, সুবল দাস, শেখ সাদী, আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। ইমতিয়াজ চাচা মারা যাওয়ার পর আমাদের সঙ্গীতাঙ্গনে বড় শূন্যতার সৃষ্টি হয়ে গেছে। এখন তার মানের সুরকার কল্পনাও করা যায় না। শওকত আলী ইমন, ইমন সাহারা আছেন। তবে তাদের লেভেলের নয়। আমাদের ভালো ভালো সিঙ্গার আছে। কিন্তু কোয়ালিটি মিউজিক ডিরেক্টরের অভাবে তাদের কাজে লাগানো যাচ্ছে না। কোয়ালিটি গীতি কবিরও অভাব রয়েছে। এ কারণে এখনকার গানগুলো জনপ্রিয় হতে পারছে না। গান তো এই সময়েও ভালো হয়েছে। 'প্রিয়তমা' ছবিতে কোনাল আর বালামের গানটির কথাই ধরেন। তবে এগুলো এক্সসেপশনাল।

এ দেশ থেকে কি দেশের গান উঠেই গেল?

আসলে আমাদের মধ্যে দেশ প্রেমটাই কমে গেছে। এখন দেশের গান বলতে যা হচ্ছে সবই মার্চ মাস কেন্দ্রিক। কিংবা ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের মাস কেন্দ্রিক। এ ছাড়া সারা বছর দেশের গান বলতে হয়ই না। আগে তো সারা বছরই দেশের গান হতো। এখন শুধু মার্চ মাস বা ১৬ ডিসেম্বর এলেই লাল-সবুজ শাড়ি পড়ে দেশের গান গাওয়া হয়। দেশের গান এখন হয়ে গেছে মৌসুমি দেশপ্রেমের গান।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে