অবৈধভাবে দখল করা খালগুলো হাউজিং ব্যবসায়ীদের নিজ খরচে ফেরত দিতে হবে জানিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, এর জন্য সরকার কোনো টাকা খরচ করবে না। যে নামেই হাউজিং ব্যবসা করেন না কেন, আপনারা মালিকরা কিন্তু একই। অবৈধ কাজের জন্য সিটি করপোরেশন কোনো নোটিশ দেবে না।
শনিবার সকালে বসিলা প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ কনসোর্টিয়াম ও বুড়িগঙ্গা নদী মোর্চা আয়োজিত বুড়িগঙ্গা নদী উৎসব-২০২১ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
আতিকুল ইসলাম বলেন, 'এই নদীতে আগে জাল ফেললে মাছ পাওয়া যেত। আর এখন পাওয়া যায় শুধু বালু। কী জন্য এই বালু আসবে। নদী, খাল ও ড্রেনের কম্বিনেশন আছে। ড্রেনের পানি যাবে খালে, খালের পানি যাবে নদীতে, এটাই কিন্তু হওয়ার দরকার ছিল। পানি জমতে জায়গা লাগবে তো। কিন্তু বর্তমানে পানি জমার কোনো জায়গা নেই। কারণ সব জায়গা আমরা নিজেরাই ব্যবসার জন্য বড় বড় বুলডোজার ও ড্রেজারের মাধ্যমে ভরাট করেছি।'
মেয়র বলেন, 'আপনারা যারা ড্রেজার লাগিয়ে বালু ভরাট করতে থাকবেন, বালু যতদূর পর্যন্ত গড়াবে ততটুটু পর্যন্ত আপনাদের জায়গা হয়ে যাবে, এটা হতে পারে না। আপনাদের বিরুদ্ধে কেউ কোনো কোর্ট-কাচারি
করতে পারে না। সুতরাং তারা বাধ্য হয়ে আপনাদের কাছে ওই জমি বিক্রি করে দিচ্ছে। খাল-নদী যাই হোক না কেন, আপনারা কাউকে তোয়াক্কা করছেন না।
আতিকুল ইসলাম বলেন, 'ইস্টার্ন হাউজিংসহ যারা ডেভেলপার আছেন তাদের ম্যাসেজ দিচ্ছি, আপনারা একটু একটু করে শহর দখল করে ফেলেছেন, এগুলো চলবে না। যতগুলো হাউজিংয়ে আছে, আপনারা নিজেরা টাকা দিয়ে যে ড্রেনগুলো করেছেন এগুলো উদ্ধার করে দেবেন। সরকার কোনো টাকা দেবে না। মোহাম্মদিয়া হাউজিং থেকে শুরু করে সব হাউজিং সুন্দর করে ডিজাইন করে। সেখানে খেলার মাঠ, বাজার, শ্মশানঘাট থেকে শুরু করে সব কিছু থাকে। যখন জমির দাম বেড়ে যায়, ওই খেলার মাঠ ও বাজার বিক্রি করে দেন।'
সব হাউজিংয়ের বিরুদ্ধে কোর্টে গিয়ে মামলা করার অনুরোধ জানিয়ে মেয়র বলেন, 'যেসব হাউজিং খেলার মাঠ দেখিয়ে পরে সেগুলো বিক্রি করে দিয়েছেন, আমরা তাদের বিরুদ্ধে কোর্টে বিচার চাইব। যে ডিজাইনে আমাদের কাছে জমি বিক্রি করা হয়েছিল, সেই ডিজাইন আমাদেরকে ফেরত দিতে হবে। তোমরা ব্যবসার জন্য আমাদের সঙ্গে চিট করেছ। এর জন্য আমাদের সবাইকে প্রতিবাদ করতে হবে। '
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সভাপতি সুলতানা কামালের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের (এনআরসিসি) চেয়ারম্যান এ এস এম আলী কবীর, ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান, ঢাকা উত্তর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, ঢাকা দক্ষিণ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, ইউএসএআইডি বাংলাদেশের প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট স্পেশালিস্ট-সিভিল সোসাইটি অ্যাডভাইজর সুমনা বিনতে মাসুদ, কাউন্টারপার্ট ইন্টারন্যাশনালের প্রোমোটিং অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড রাইটস (পার) প্রকল্পের ডেপুটি চিফ অব পার্টি শাহিদ হোসেন, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ জামিল, স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডক্টর আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার প্রমুখ।