শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার নুরপুর ইউনিয়নের কমিউনিটি ক্লিনিক নানা সমস্যায় জর্জরিত। ক্লিনিকের জরাজীর্ণ ভবন আর দেয়ালের রং ফিকে হয়ে গেছে। বৃষ্টি হলেই ছাদ দিয়ে পানি পড়ে। ভেতরে বাথরুম থাকলেও নেই পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা। ক্লিনিকের নিজস্ব সীমানা প্রাচীরও নেই। ভবনের বেশ কয়েক জায়গায় ফাটল ধরেছে, মৃদু কম্পনেই পুরো ভবন কেঁপে ওঠে। গত বছর ভূমিকম্পে ক্লিনিকের বিল্ডিংয়ে কয়েক জায়গায় ফাটল ধরেছে।
এদিকে, দেশে কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্যসেবা গ্রামপর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। স্বাস্থ্য সহকারীরা তাদের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার আলোকে কমিউনিটি ক্লিনিকে সেবা প্রদান করছেন। তারা দেশের তৃণমূল পর্যায়ে দরিদ্র মানুষের কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিচ্ছেন।
জানা যায়, গত ২০০০ সালে ৫ শতক জায়গার ওপর নির্মিত হয়েছিল নুরপুর কমিউনিটি ক্লিনিক। ডিজিটাল যুগে এসেও এ ইউনিয়নের নসরতপুর,
নুরপুর, নোয়াহাটি, চন্ডিপুর, বারলাইরা, শ্রীরামপুরসহ ৬টি গ্রামের মানুষের চিকিৎসার ভরসাস্থল এ ক্লিনিক। করোনাকালে যখন সর্দিজ্বর কাশি নিয়ে মানুষ ডাক্তার ও চিকিৎসা সংকটে ভুগছিলেন, এ কমিউনিটি ক্লিনিকটি অত্র অঞ্চলের মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) মোছা. মাহমুদা খাতুন জানান, 'গত দুই বছর ধরেই আমরা এ ভবনে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে আসছি। বিভিন্ন গ্রাম থেকে মানুষজন ওষুধ নিতে আসেন, আমরা সবাইকেই সেবা দেওয়ার চেষ্টা করি। এ ক্লিনিকের ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে আছে, কখন যে ভেঙে দুর্ঘটনা ঘটে তার ঠিক নেই। ক্লিনিকটি সংস্কারের জন্য কয়েক দফা লিখিত আবেদন করা হয়েছে। আবেদন করার পর এ বছর একাধিক তদন্ত টিম এসে ক্লিনিক পরিদর্শন করে গেছেন, কিন্তু ঠিক কী কারণে সংস্কার হয় না, কিংবা ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করা হয় না এটা কর্তৃপক্ষই ভালো বলতে পারবেন।'
ক্লিনিকের সিজি গ্রম্নপের সদস্য এস এইচ টিটু জানান, 'আমাদের অঞ্চলের হাজারো মানুষের চিকিৎসাকেন্দ্র এ ক্লিনিক, কিন্তু ঝুঁকি নিয়ে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন ক্লিনিকের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও কর্মীরা। আমি এ ক্লিনিকটি ভেঙে পুনর্নির্মাণ করার দাবি জানাই।'
সেবা নিতে আসা নুরপুর গ্রামের মিনারা বেগম জানান, আমরা বয়স্ক মানুষ, চাইলেও দূরে গিয়ে ডাক্তার দেখাতে পারি না। পুরো পরিবারের অসুখ-বিসুখে এ ক্লিনিকেই আসি। কিন্তু বর্ষার মৌসুমে ক্লিনিকে আসা যাওয়া করতে সমস্যা হয়।
এ বিষয়ে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. দেলোয়ার হোসেন জানান, 'আমার অধীনে ২৬টি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। ইতোমধ্যে যেসব কমিউনিটি ক্লিনিকের পুনর্নির্মাণ কিংবা সংস্কার করা দরকার সেগুলোর তালিকা সিবিএইচসিতে পাঠানো হয়েছে। এ তালিকায় নুরপুর কমিউনিটি ক্লিনিকটিও রয়েছে। আশা করছি শিগগিরই এটির উন্নয়ন কাজের অনুমোদন পাওয়া যাবে।
Copyright JaiJaiDin ©2022
Design and developed by Orangebd