মহামারি করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কেবিনে প্রবেশের ক্ষেত্রে সতর্কতা জোরদার করা হয়েছে। তার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা জানার জন্য বেশকিছু নতুন পরীক্ষা করতে দেওয়া হয়েছে। শনিবার দুপুরে আল্ট্রাসনোগ্রাম, ইসিজি, বস্নাড সুগার, সোডিয়াম, হিমোগেস্নাবিন ও করোনা টেস্টসহ বেশ কিছু পরীক্ষা করতে দেওয়া হয়। এসব পরীক্ষার রেজাল্ট পর্যবেক্ষণ করে খালেদা জিয়ার পরবর্তী চিকিৎসা ও বাসায় ফেরার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বোর্ডের এক চিকিৎসক জানান, হঠাৎ
করোনাভাইরাস বেড়ে যাওয়ায় তাদের মধ্যে বড় শঙ্কা কাজ করছে। হাসপাতালে প্রচুর কোভিড রোগী আসা যাওয়া করছে। কেবিনেও নার্স, স্টাফ, আয়া, ক্লিনারসহ অনেকেই যাচ্ছেন। তাদের কাছ থেকে সংক্রমিত হতে পারেন। বোর্ড এজন্যই খালেদা জিয়াকে বাসায় রেখে চিকিৎসার চিন্তা করছেন। কিন্তু তার শারীরিক অবস্থা স্বস্তিদায়ক নয়। আজ ভালো তো কাল খারাপ। নতুন আরও কতগুলো টেস্ট দেওয়া হয়েছে। মোটামুটি ঝুঁকিমুক্ত হলেই বাসায় যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে। আপাতত নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হবে খালেদা জিয়াকে।
তিনি জানান, মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী খালেদা জিয়ার কেবিনে চলাচল একেবারে সীমিত করা হয়েছে। কেবিনে প্রবেশের আগে নার্স ও স্টাফদেরও তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হচ্ছে। বাইরে থেকে কাউকে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে চিকিৎসকদের সূত্র জানায়, বিএনপি চেয়ারপারসনের ডায়াবেটিস কখনো নিয়ন্ত্রণে ছিল না। ইনসুলিন দিয়ে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। সবমিলিয়ে ঝুঁকিমুক্ত বলা যাবে না। এইজন্য কেবিনে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সিসিইউ'র সাপোর্টও রাখা হয়েছে। ইলেক্ট্ররাইল ইমব্যালেন্স অর্থাৎ খনিজে অসমতা দেখা দিচ্ছে মাঝেমধ্যে। এজন্য শরীর প্রচন্ড দুর্বল হয়ে যায়। রুচি কমে যায়।
সূত্রটি আরও বলেন, ম্যাডাম হাসপাতালে থাকতে চান না। তিনি বাসায় যেতে চান। কারণও আছে, এই বয়সের একজন মানুষকে টানা হাসপাতলের বিছানায় থাকা ভীষণ যন্ত্রণার। চিকিৎসা সম্পূর্ণ না করে বাসায় আনলে তো আবারও হাসপাতালে নিতে হবে। বারেবারে নেওয়া-আনা উনার জন্য ক্ষতি। কারণ করোনা বাড়ছে চারদিকে।
প্রসঙ্গত, লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত খালেদা জিয়াকে গত ১৩ নভেম্বর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওইদিন তাকে হাসপাতালের সিসিইউতে নেয়া হয়। গত ৯ জানুয়ারি তাকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়। এভার কেয়ারের চিকিৎসক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১০ জনের একটি বিশেষ মেডিকেল টিম তার চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন। ৭৭ বছর বয়সি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস ছাড়াও অনেক বছর ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন।
Copyright JaiJaiDin ©2022
Design and developed by Orangebd