দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় আর্থিক শৃঙ্খলা ফেরাতে বেশকিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, ভর্তি পরীক্ষার আয়ের সর্বোচ্চ ৬০ শতাংশ ব্যয়, বাকি ৪০ শতাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলে জমা করতে হবে। এই আয় নিজস্ব আয়ের মধ্যে অবশ্যই দেখাতে হবে। এ ছাড়া আর্থিক শৃঙ্খলা আনতে শিগগির ৪১ দফার একটি নির্দেশনা পাঠাবে ইউজিসি। জানা গেছে, এ নির্দেশনাটি পরিপত্র হিসেবে জারি করা হবে, যাতে এসব নির্দেশনা অনুসরণ করতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বাধ্যবাধকতা তৈরি হয়।
গত সোমবার ইউজিসির পূর্ণ কমিশনের বাজেট বরাদ্দ সংক্রান্ত বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। ৪১ দফার নির্দেশনা আগামী কিছুদিনের মধ্যেই সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হবে বলে জানানো হয়েছে। মূলত জুনে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক বছরের বাজেট তৈরি হয়। একে সামনে রেখেই এই নির্দেশনা পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয় কমিশনের বৈঠকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট প্রণয়নের ক্ষেত্রে ভর্তির আয়সহ টিউশন ফি, পরীক্ষা ফি, ল্যাব টেস্ট, বিশেষ কোর্স, বেতন থেকে কর্তনাদি, সম্পত্তি থেকে লব্ধ অর্থ ইত্যাদি অবশ্য নিজস্ব আয় হিসাবে বাজেটে দেখাতে হবে বলে ওই নির্দেশনায় উলেস্নখ করা হবে বলে ইউজিসি সূত্রে জানা গেছে। আরও জানা গেছে, আগামী ১০ জুনের মধ্যে ৫০ বিশ্ববিদ্যালয়কে তাদের চলতি অর্থবছরের
সংশোধিত ও আগামী অর্থবছরের (২০২২-২৩) প্রাথমিক বাজেট প্রস্তাবনা পাঠাতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
দেশের সবকটি বড় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার আবেদন ফি থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা আয় করে থাকে। যার বড় অংশই ভর্তি পরীক্ষাসংশ্লিষ্ট শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পকেটে যায়। দীর্ঘদিন ধরে ভর্তি পরীক্ষার আবেদন ফি নিয়ে অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিরুদ্ধে। এ খাতে বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কোটি কোটি টাকা আয় করে আসছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের প্রথমবর্ষে ভর্তি পরীক্ষার ফরম বিক্রির আয় থেকে উদ্বৃত্ত আট কোটি টাকা শিক্ষক-কর্মকর্তার মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারা করার অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্ত করছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।
জানা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথমবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য আবেদনকারীদের কাছ থেকে আয় করেছে ২৯ কোটি ৩ লাখ ৪৮ হাজার টাকা।
ইউজিসির সদস্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডক্টর মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, গত কয়েক বছর থেকে বাজেট পাসের আগে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে একটি গাইডলাইন দেওয়া হচ্ছে। কোন কোন খাতে বাজেটের অর্থ ব্যয় করা যাবে সেসব বিষয়ে দিকনির্দেশনা দ্রেওয়া হচ্ছে। তার আলোকে এবারও সেটি দেওয়া হবে। আগামী দুই-তিনদিনের মধ্যে এ সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করা হবে।
Copyright JaiJaiDin ©2022
Design and developed by Orangebd