বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি

দেশের অর্থনীতিতে বড় ধাক্কার শঙ্কা

জিডিপির প্রবৃদ্ধি ব্যাহত হবে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা হ মূল্যবৃদ্ধিতে রাজস্ব আহরণে ভাটার টান ধরবে হ কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের মুনাফা কমবে ২০%
সাখাওয়াত হোসেন
  ০৭ আগস্ট ২০২২, ০০:০০

জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে রাজস্ব আহরণে পড়বে ভাটা। ফলে এবার বাজেটে যে পরিমাণ রাজস্ব আহরণের টার্গেট রয়েছে, তা পূরণ করা অসম্ভব হবে। এতে বাজেট ঘাটতি বাড়বে। আর এ ঘাটতি পূরণে সরকারের ব্যাংকব্যবস্থা থেকে ঋণ গ্রহণ বাড়বে। ব্যাহত হবে বেসরকারি খাত। যা দেশের অর্থনীতির জন্য বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়াবে।

অর্থনীতিবিদরা এসব আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, জ্বালানি একটি স্পর্শকাতর পণ্য। যার মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব অর্থনীতিতে সুদূরপ্রসারী। জীবনযাত্রাকে এটি নানাভাবে প্রভাবিত করে। জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসহ সবকিছুর দাম বাড়বে। বাড়বে পরিবহণ ভাড়া। বর্তমানে কৃষি খাতে ডিজেলের ব্যবহার ১৬ শতাংশ। ডিজেলের দাম বাড়ায় সেচের খরচ বৃদ্ধির সঙ্গে পালস্না দিয়ে বাড়বে কৃষিপণ্যের উৎপাদন খরচ। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে খাদ্যশস্যসহ সব ধরনের পণ্যে। আয় না বাড়ায় এ পর্যায়ে ভোক্তার ক্রয়ক্ষমতা কমে যাবে। তখন বাধ্য হয়ে তারা ব্যয় সংকোচন করবে। ফলে মানুষের ভোগ ব্যয় হ্রাস পাবে। সংকুচিত হবে অর্থনীতি। আর অর্থনীতি সংকুচিত হলে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট ও আয়কর আহরণে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। ব্যাহত হবে জিডিপির প্রবৃদ্ধি।

সংশ্লিষ্টরা জানান, করোনাকালে দেশের অর্থনীতিতে ঈর্ষণীয় সাফল্য হয়েছে, প্রবৃদ্ধির চাকা অব্যাহত ছিল। অথচ প্রতিবেশী দেশ ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশে প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক হয়েছে। ভারতের অর্থনীতির বিপর্যয়ের জন্য করোনা পরিস্থিতি যতটা না দায়ী, তার চেয়ে বেশি দায়ী করা হয় জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিকে। ব্যাপক সমালোচনার পর ভারত সরকার তেলের দাম সংশোধন করে। অথচ তা থেকে শিক্ষা না নিয়ে উলটো দেশে জ্বালানির দাম বাড়ানো হয়েছে। যা কোনোভাবেই ঠিক হয়নি বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদসহ সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।

তাদের ভাষ্য, কৃষি ও শিল্পের উৎপাদন জ্বালানির সঙ্গে যুক্ত। এতে পণ্যমূল্যের ক্রয়ক্ষমতার হিসেবে মানুষের বেতনের অবমূল্যায়ন ঘটবে। অর্থাৎ মানুষের আয় আরেক দফা কমবে। এমনিতেই বেকারত্ব, নতুন দারিদ্র্যে সাধারণ মানুষ কষ্টে আছে। নিম্নবিত্ত এবং প্রান্তিক মানুষের ক্ষুধার কষ্টও শুরু হয়েছে। জ্বালানি তেলের দাম আরেক দফা বাড়ানোর ফলে তাদের দুর্ভোগ আরও

ভয়াবহ রূপ নেবে।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক ঊর্ধ্বতন পরিচালক ডক্টর জায়েদ বখত বলেন, 'এমনিতেই অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতির চাপ রয়েছে। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর ফলে এই চাপ আরও বাড়বে।' অর্থনীতির ঝুঁকি এড়াতে এই সময় জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো ঠিক হয়নি বলে মনে করেন তিনি।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও ক্যাবের উপদেষ্টা ডক্টর এম শামসুল আলম বলেন, 'তেলের দাম বাড়ার ফলে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পাবে। কমবে ভোগ ব্যয়। সংকুচিত হবে অর্থনীতি। এর ফলে সামগ্রিকভাবে দেশের অর্থনীতি ঝুঁকির মধ্যে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।' নিত্যপণ্যসহ সবকিছুর দাম যখন আকাশছোঁয়া, তখন কোন যুক্তিতে এ সময়ে তেলের দাম বাড়ানো হলো তা বোধগাম্য নয়- মন্তব্য করেন এই বিশেষজ্ঞ।

কৃষি খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশে সাধারণত আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে নিয়মিত বৃষ্টি হলেও এবারের চিত্র পুরোপুরিই ভিন্ন। মধ্য শ্রাবণ পেরিয়ে গেলেও বৃষ্টির দেখা নেই। টানা তাপপ্রবাহে মাঠ ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। বৃষ্টি না হওয়ায় আমন ধানের চারা রোপণ নিয়ে বিপাকে পড়া লাখ লাখ কৃষক সেচযন্ত্রের সাহায্যে জমি তৈরি করছেন। এতে খরচ বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। ঠিক এ সময় এক লাফে ডিজেলের দাম লিটার প্রতি ৩৪ টাকা বাড়ায় কৃষকরা চোখে অন্ধকার দেখছেন।

কৃষকরা জানান, বীজতলা তৈরির শুরুতে পানি সেচের যে টাকা খরচ হচ্ছিল তাতেই লোকসানে পড়ার আশঙ্কা ছিল। এখন ডিজেলের আকাশচুম্বী দাম বাড়ায় লোকসানের ধাক্কা তারা সামাল দিতে পারবে কি না তা নিয়ে দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে। অনেক কৃষকের ভাষ্য, দেশে চলমান খরা পরিস্থিতিতে ডিজেলের দাম বাড়বে জানলে অনেকেই আমনের বীজতলা তৈরিরই ঝুঁকি নিতেন না। তবে এ পর্যায়ে এসে তারা মরণ ফাঁদে পড়েছে।

কৃষিবিদদের ধারণা, ডিজেলের দাম বাড়ায় আমন ধান ঘরে তুলতে সেচ বাবদ কৃষকদের বাড়তি খরচ হবে প্রায় সাড়ে ৭শ' কোটি টাকার মতো। কারণ দেশের ৭০ শতাংশ জমির চাষ ডিজেলচালিত সেচযন্ত্রনির্ভর। বোরো চাষে এ খরচ আরও বাড়বে। কারণ দেশে ধান উৎপাদনে মোট সেচের ৯৩ ভাগ সেচই প্রয়োজন বোরো মৌসুমে। এই সেচের জন্য ব্যবহৃত সেচযন্ত্রের অধিকাংশ ডিজেলচালিত। ফলে এবার বোরো চাষের উৎপাদন ব্যয়ও বেড়ে যাবে। ফলে বিঘাপ্রতি সেচের জন্য বাড়তি খরচ জুগিয়ে কৃষকের ধান বিক্রিতে ২০ শতাংশ মুনাফা কমবে। এতে সামগ্রিকভাবে গ্রামীণ অর্থনীতিতে ভয়াবহ নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়ানোর আগে যদি এর প্রতিক্রিয়ার বিষয়টি গভীরভাবে বিবেচনা করা হতো তাহলে সরকার হয়তো এই আত্মঘাতী সিদ্ধান্তটি নাও নিতে পারত। একবার তেলের দাম বাড়িয়ে পরে কমানোর অতীত কোনো নজির না থাকায় আগামীতে ফসল উৎপাদনে উচ্চমূল্যে ডিজেল কিনে সেচ কাজ চালানোর বিষয়টি স্থায়ী রূপ নেবে। এতে মোটা চালের দাম ৬০/৭০ টাকা এবং চিকন চালের দাম একশ' টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তারা।

জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে পরিবহণ খরচ ট্রাক প্রতি ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা বাড়বে। এর প্রভাব পড়বে খাদ্যসহ সব ধরনের ভোগ্য পণ্যে। যার আলামত এরইমধ্যে বাজারে দেখা দিয়েছে। তেলের দাম বাড়ার পর ২৪ ঘণ্টা পার না হতেই নিত্যপণ্যের বাজার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। জিনিসপত্রের দাম আরও কয়েকগুণ বাড়বে এ আশঙ্কায় অনেকে অবৈধ মজুতদারিতে নেমেছে। পরিবহণ খরচ বাড়ার অযুহাতে প্রতি কেজি চাল এক থেকে দুই টাকা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজধানীর সর্ববৃহৎ পাইকারি চালের বাজার বাবুবাজার ও কদমতলী বাজারে ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।

বাবুবাজারের পাইকারি চাল বিক্রেতা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, 'তেলের দাম বাড়ায় বেড়েছে চালের দামও। কারণ ট্রাক প্রতি পরিবহণ খরচ তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকা বেড়েছে। টাঙ্গাইলের গোপালপুর থেকে ৩০০ বস্তা চাল আনতে ট্রাক প্রতি ভাড়া ছিল ১১ হাজার টাকা। তেলের দাম বাড়ার কারণে তা এখন বেড়ে দাঁড়িছে ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকা। রাজধানীতে কুষ্টিয়া থেকে ৩০০ বস্তা চালের পরিবহণ খরচ ছিল ১৮ হাজার টাকা। বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১/২২ হাজারে।

জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় শুধু চাল নয় অন্যান্য পণ্যের ওপরও এর প্রভাব পড়বে টর্নেডোর মতো। এতে প্রান্তিক কৃষক থেকে মধ্যবিত্তরা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হবেন। নতুন করে নিম্ন-মধ্যবিত্ত অনেকেই হতদরিদ্রের সারিতে নেমে আসার শঙ্কা করছেন অর্থনীতিবিদরা।

এদিকে শুক্রবার রাতে জ্বালানি তেলের দামবৃদ্ধির ঘোষণার পর নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। খাদ্যপণ্যসহ জীবনযাত্রার সব খরচ নিশ্চিত বাড়বে জেনে সংসারের বাজেট আর কীভাবে কতটা কাটছাঁট করা যায় সে চেষ্টা করছেন। সারা জীবনের সঞ্চিত অর্থ দিয়ে বাড়তি খরচ কতদিন সামাল দেওয়া যাবে তা ভেবে অনেকের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে।

রাজধানীর কাফরুলের বাসিন্দা স্কুল শিক্ষিকা মনিরা ইসলাম জানান, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এখন সংসারের খরচ নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। তার আশঙ্কা, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম এবার আরও উচ্চলাফে বাড়বে। সুতরাং সংসারের মৌলিক চাহিদা মেটানো তার জন্য কঠিন হয়ে পড়বে।

এই স্কুল শিক্ষিকার ভাষ্য, 'আমরা যারা সাধারণ মধ্যবিত্ত তাদের সমস্যা প্রকট। আমরা আমাদের সমস্যাগুলো মুখ ফুটে বলতে পারি না। আমাদের যেটা বেসিক নিড বা অতি জরুরি পণ্য সেটা কেনাও অনেক কমিয়ে আনতে হবে। কারণ আমাদের আয় তো বাড়েনি। বরং ক্ষেত্র বিশেষে কমেছে। নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি পাওয়ায় আগেই ভালোমন্দ খাওয়া ছেড়ে দিয়েছি। এখন মনে হয় পেট ভরে ভাত-রুটি খাওয়াও বন্ধ করে দিতে হবে'।

গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের নির্বাহী পরিচালক অর্থনীতিবিদ ফাহমিদা খাতুন বলেন, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে অর্থনীতি এমনিতেই সংকুচিত। এর ওপর জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতি বাড়াবে। যা দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়াবে।

সার্বিকভাবে দেখা যায়, একটা বাজারে যখন সরবরাহের চাইতে চাহিদা বেশি, তখন জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়। তেলের মূল্যবৃদ্ধির সুযোগে অনেকে সেটা মজুত করে রাখে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সেটাও মজুত করে। তখন বাজারে একটা কৃত্রিম চাপ সৃষ্টি হয়। এবং যখন এই মূল্যস্ফীতির চাপ মানুষের ওপর দিয়ে পড়ে, সামগ্রিকভাবে মানুষের আয়ের ওপর চাপ পড়ে- যোগ করেন এই অর্থনীতিবিদ।

এদিকে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির কারণে বাস-লঞ্চসহ বিভিন্ন গণপরিবহণে যে বিশাল অঙ্কের ভাড়া বাড়বে সে চাপে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠবে বলে মনে করেন অর্থনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। তারা জানান, জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধিতে পরিবহণ মালিকদের কোনো ক্ষতি হবে না। কারণ, তারা ভাড়া বাড়িয়ে নিজেদের খরচ সমন্বয় করে নিবেন। ফলে শেষ পর্যন্ত জ্বালানির এই মূল্যবৃদ্ধির খেসারত গণপরিবহণের যাত্রীদেরই দিতে হবে।

অন্যদিকে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধিতে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে দেশীয় পণ্য প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। কারণ দেশীয় ও রপ্তানিমুখী শিল্পের উৎপাদন খরচ বাড়বে। এর প্রভাবে বৃদ্ধি পাবে পণ্যের দাম। বিপাকে পড়বে রপ্তানিমুখী শিল্প। দেশীয় উদ্যোক্তারা বাজারে পণ্যের দাম বাড়াতে পারলেও রপ্তানিকারকরা তা পারবেন না। বিদেশি ক্রেতারা পণ্যের দাম বাড়াবে না। দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিলে তারা অন্য দেশে চলে যেতে পারে। এই অবস্থায় রপ্তানিমুখী শিল্প আবার নতুন করে সংকটে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

রপ্তানিমুখী শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা জানান, ডিজেলের দামের কারণে প্রতি টনে খরচ বেড়েছে ৩৪ হাজার টাকা। পরিবহণে বছরে প্রায় ১০ লাখ টন ডিজেল ব্যবহৃত হয়। এ হিসাবে এ খাতে খরচ বাড়বে ৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। অন্যান্য শিল্পের পণ্য পরিবহণে প্রায় ১২ লাখ টন ডিজেল ব্যবহৃত হয়। এ খাতে বাড়বে ৪ হাজার কোটি টাকার বেশি। বেসরকারি খাতে অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠান বিদু্যতের জন্য ডিজেল ব্যবহার করে। এতে বছরে ব্যবহৃত হয় প্রায় ২ লাখ টন। এ হিসাবে খরচ বাড়বে বছরে ৬৮০ কোটি টাকা। শিল্পে ডিজেল ব্যবহৃত হয় প্রায় ৪ লাখ ৬৩ হাজার টন। এ খাতে খরচ বাড়বে ১ হাজার ৫৭৪ কোটি টাকা। সব মিলে দেশের শিল্প খাতে বাড়তি খরচ হবে ৯ হাজার ৬৫৪ কোটি টাকা।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ নিটওয়্যার প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম যায়যায়দিনকে বলেন, প্রতিনিয়ত পোশাকের উৎপাদন খরচ বাড়ছে। উলটোদিকে ক্রেতারা পণ্যের দাম কমাচ্ছে। এতে গার্মেন্টগুলো টিকে থাকতে হিমশিম খাচ্ছে। এ অবস্থায় জ্বালানির দাম বাড়িয়ে দেশের শিল্প ও রপ্তানি খাতকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটাতে হলে ডিজেলের দাম আগের অবস্থায় নিয়ে যেতে হবে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় পণ্য পরিবহণ ও গণপরিবহণ ব্যয়, কৃষি ও শিল্প উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাবে। এতে দেশের প্রায় সব নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বেড়ে যাবে। বাড়িভাড়া বাড়বে। ফলে লাখ লাখ মানুষ নতুন করে দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাবে। এতে বাধ্য হয়ে মধ্যবিত্ত, সীমিত ও নিম্ন আয়ের মানুষদের তাদের খাদ্য বাজেট কমাতে হবে। শিক্ষা ও চিকিৎসা খাতে ব্যয় কাটছাঁট করতে হবে, নারী ও শিশুর চিকিৎসা আরও সংকুচিত হয়ে যাবে, তাদের ঋণ বেড়ে যাবে। যা দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য অশনিসংকেত বলে মন্তব্য করেন তিনি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে