শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১

৭ জানুয়ারির ভোট ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে

গণভবনে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী
যাযাদি রিপোর্ট
  ১০ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়েয় পর মঙ্গলবার গণভবনে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছে হাত নেড়ে নেতাকর্মীদের অভিবাদন জানান -ফোকাস বাংলা

জনগণের অংশগ্রহণে অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন হয়েছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের কথা ইতিহাসে 'স্বর্ণাক্ষরে' লেখা থাকবে।

মঙ্গলবার গণভবনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের পাশাপাশি দেশের সর্বস্তরের নাগরিকদের সঙ্গে নির্বাচন পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

দেশের জনগণকে অভিনন্দন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, "মুষ্টিমেয় খুনি এবং যুদ্ধাপরাধীদের দল ছাড়া এদেশে সকল মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন হয়েছে। জনগণের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হয়েছে।

তিনি বলেন, "এত দলের মধ্যে দুই চারটা দল অংশগ্রহণ না করলে কিছু আসে যায় না। জনগণ অংশগ্রহণ করেছে সেটাই সব থেকে বড়। এ নির্বাচনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে জনগণে অংশগ্রহণ করেছে। ১২০ বছরের বয়স্ক বুড়ো মানুষও ভোট দিতে গেছেন। এর থেকে বড় কথা আর কি হতে পারে।"

দশম সংসদ নির্বাচনের মতো এবারও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে ভোট বর্জন করে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টিসহ নিবন্ধিত ২৮টি দল ৭ জানুয়ারি ভোটে অংশ নেয়। তাতে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে টানা চতুর্থ মেয়াদে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ।

নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, "অত্যন্ত কঠোরভাবে শৃঙ্খলা রক্ষা করে তারাই নির্বাচন অনুষ্ঠিত করেছেন। সুশৃঙ্খল নির্বাচন অনুষ্ঠান করার জন্য আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা, প্রশাসন, নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে যারা জড়িত, সকলকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন।

"এ ধরনের চমৎকার নির্বাচন উপহার দেওয়ার জন্য সকলকে অভিনন্দন জানাই। বাংলাদেশের ইতিহাসে এটা স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। আর যারা নির্বাচনে হ

অংশগ্রহণ করে নাই, আমি জানি, তাদের নেতাকর্মীরা এখন হতাশায় ভোগছে।"

ভোট বর্জনকারীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "হতাশার কিছু নেই, আপনারা তো এ দেশেরই জনগণ। হয়তো আপনাদের ওপর ওহি নাজিল হয়েছে। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করে দিয়েছি, ডিজিটালের সুবাদেই ওহি নাজিল হয়। নিজেরা লন্ডনে বসে আয়েশ করে পায়েস খায়, আর এখানে কর্মীদের মাঠে নামায়। মাঠে নামায় আগুন দিয়ে মানুষ পোড়াতে।"

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর দেশের পরিস্থিতি তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, "৭৫ এর পর নির্বাচন মানে কি আমি দেখেছি, নির্বাচন মানে ছিল নামেই নির্বাচন। ভোট চুরি, ভোট ডাকাতি, ভোটার লিস্টের মিথ্যা নাম দেওয়া, আর সংবিধান লঙ্ঘন করে, সেনা আইন লংঘন করে যারা ক্ষমতায় ছিল, তাদের পকেট থেকে রাজনৈতিক দল বের হতো।

তিনি বলেন, "ওই দল মাটি মানুষের কথা বলার জন্য গঠিত না। ক্ষমতার উচ্চ আসনে বসে গঠিত রাজনৈতিক দল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সেই দল না। আওয়ামী লীগ হচ্ছে মানুষের অধিকারের কথা বলার জন্য, যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল না, তখনই আওয়ামী লীগের সৃষ্টি। জনগণের স্বার্থে, জনগণের কল্যাণে, জনগণের অধিকার রক্ষায় আওয়ামী লীগের সৃষ্টি।"

বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, "সৃষ্টির লগ্ন থেকে আওয়ামী লীগ জনগণের স্বার্থে কাজ করে গেছে। আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার জন্য বারবার অনেকেই এসেছে, আইয়ুব খানও চেষ্টা করেছে, ইয়াহিয়া খানও চেষ্টা করেছে, জিয়াউর রহমান চেষ্টা করেছে, এরশাদ চেষ্টা করেছে। জিয়াউর রহমান যেমন হত্যাকান্ড চালিয়েছে, সেভাবে খালেদা জিয়াও হত্যাকান্ড চালিয়ে আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে।"

বাংলাদেশের মানুষ কোনো অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয় না- মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "৯৬ সালে খালেদা জিয়া ভোটারবিহীন নির্বাচন করেছিল, শত চেষ্টা করেও ভোটার আনতে পারে নাই। তারপর সিল মেরে, বাক্স ভরে সবকিছু করেছিল, সারা জায়গায় আর্মি নামিয়েছিল, পুলিশ নামিয়েছিল, সব নামিয়েছিল। তারপরও সে নির্বাচন হয়নি এবং জনগণ মেনে নেয়নি। ১৫ ফেব্রম্নয়ারি নির্বাচন হয়েছিল, ৩০ মার্চ খালেদা জিয়া ভোটচুরির অপরাধ নিয়ে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিল।"

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নির্বাচন যাতে না হয় তার জন্য বিএনপি নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করেছিল। মুরুব্বিদের পরামর্শে চললে বাংলাদেশের আর চলা লাগবে না। এটাই হলো বাস্তবতা। যদি সৎ পরামর্শ হয়, সেটা ভালো কথা। নির্বাচন হতে দেবে না, এসব হুমকি-ধামকি গেল কোথায়?

শেখ হাসিনা বলেন, 'বিএনপি এবার নির্বাচন হতেই দেবে না। তাদের লক্ষ্য ছিল নির্বাচন হতে দেবে না। তাদের কিছু মুরুব্বি আছে তারাই সে পরামর্শ দেয়। এমন অবস্থা সৃষ্টি করবে যাতে নির্বাচন না হয়, কিন্তু বাংলাদেশের মানুষকে তারা চিনে নাই। '৭১ সালের ৭ মার্চ জাতির পিতা বলেছিলেন, কেউ দাবায় রাখতে পারবা না। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে এ দেশের মানুষ এটাই প্রমাণ করেছে।'

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করা হয়। স্বাধীনতায় লাখো শহীদের যে অবদান, সেটাই ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা হয়। ইতিহাস বিকৃতি করা হয়। এটাই হচ্ছে জাতির সবচেয়ে দুর্ভাগ্য।

তিনি বলেন, '৭৫ এর পর নির্বাচন মানে কি আমি দেখেছি, নির্বাচন নামেই নির্বাচন। ভোট চুরি, ভোট ডাকাতি, ভোটার লিস্টে মিথ্যা নাম দেওয়া, সংবিধান লঙ্ঘন করে, সেনা আইন লঙ্ঘন করে যারা ক্ষমতায় ছিল তাদের পকেট থেকে রাজনৈতিক দল বের হতো, এই দল মাটি মানুষের কথা বলে না। ক্ষমতার উচ্চ আসনে বসে গঠিত রাজনৈতিক দল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সেই দল না। আওয়ামী লীগ হচ্ছে মানুষের অধিকারের কথা বলার জন্য, যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল না তখনই আওয়ামী লীগের সৃষ্টি। জনগণের স্বার্থে, জনগণের কল্যাণে, জনগণের অধিকার রক্ষায় আওয়ামী লীগের সৃষ্টি। সৃষ্টির শুরু থেকে আওয়ামী লীগ জনগণের স্বার্থে কাজ করে গেছে। আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার জন্য বারবার অনেকেই এসেছে, আইয়ুব খানও চেষ্টা করেছে, ইয়াহিয়া খানও চেষ্টা করেছে, জিয়াউর রহমান চেষ্টা করেছে, এরশাদ চেষ্টা করেছে। জিয়াউর রহমান যেমন হত্যাকান্ড চালিয়েছেন, কীভাবে খালেদা জিয়াও হত্যাকান্ড চালিয়ে আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মীর ওপর নির্মমতা করেছে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, শুধু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী নয়, এ দেশের প্রতিটি শ্রেণির মানুষ আজ তাদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত। একটা মানুষের মধ্যে মনুষ্যত্ব থাকলে কোনোদিন এভাবে মানুষ পুড়িয়ে মারতে পারে না। ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি ভেবেছিল একেবারে ক্ষমতায় চলে যাবে, এ নির্বাচনে মাত্র ৩০টা সিট পায়। এরপর থেকে তারা জানে বাংলাদেশের মানুষ সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতি, মানুষ হত্যা- এগুলো পছন্দ করে না। তাদের প্রত্যাখ্যান করেছিল। যে কারণে তারা কোনো নির্বাচনে আসতে চায়নি।

বাংলাদেশের মানুষ কোনো অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয় না- জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, '৯৬ সালে খালেদা জিয়া ভোটারবিহীন নির্বাচন করেছিল, শত চেষ্টা করেও ভোটার আনতে পারেনি। তারপর সিল মেরে, বাক্স ভরে যা কিছু করেছিল, সব জায়গায় আর্মি নামিয়েছিল, পুলিশ নামিয়েছিল, সব নামিয়েছিল। তারপরও সেই নির্বাচন হয়নি এবং জনগণ মেনে নেয়নি। ১৫ ফেব্রম্নয়ারি (১১৯৬) নির্বাচন হয়েছিল, ৩০ মার্চ খালেদা জিয়া ভোটচুরির অপরাধ নিয়ে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিল। নিশ্চয়ই এ কথা জনগণ ভুলে যায়নি। ২০০৬ সালের নির্বাচনেও এক কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার দিয়ে নির্বাচন করতে চেয়েছিল। সেই নির্বাচনেও ভোট চুরির অপরাধে টিকতে পারেনি। ইমার্জেন্সি ডিক্লেয়ার হয়, খালেদা জিয়াও যায়, তার নির্বাচনও যায়। এদের তাও শিক্ষা হয় না, লজ্জা হয় না।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে