সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের পক্ষে নয় বিএনপি

সাবিহউদ্দিন আহমেদের স্মরণসভায় ফখরুল
যাযাদি রিপোর্ট
  ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের পক্ষে নয় বিএনপি। এ বিষয়ে জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে। যেটা কোনো ইসু্যই নয়, সে ইসু্য সামনে এনে নতুন করে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।

শনিবার বিকালে রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে বিএনপি নেতা সাবিহউদ্দিন আহমেদের দ্বিতীয় মৃতু্যবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভায় যোগ দিয়ে বের হওয়ার পথে জাতীয় পার্টি ইসু্যতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

জাতীয় পার্টির কার্যালয় ভাঙচুর ও দলটি নিষিদ্ধের যে দাবি উঠেছে, এ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার আমরা কারা? জনগণ এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।'

তিনি বলেন, 'এটা তো আরেকটি চক্রান্ত শুরু হয়েছে। দেশে একটি অনিশ্চিয়তা, অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির জন্য এসব কথা বলা হচ্ছে। যেটা কোনো ইসু্যই না, সেটাকে ইসু্য বানানো হচ্ছে।'

কূটনীতিক সাবিহউদ্দিন আহমেদের স্মরণসভায় তার বর্ণাঢ্য জীবন-কর্ম তুলে ধরা হয় এবং জানানো হয়, তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা। কূটনীতিকের পরিবারের পক্ষ থেকে এই স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। ২০২২ সালের ৩১ অক্টোবর গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সাবিহউদ্দিন আহমেদ। তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। ২০০১ সালে খালেদা জিয়ার

শাসনামলে সাবিহউদ্দিন আহমেদ যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার ছিলেন।

সভায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, 'সাবিহউদ্দিন ছিলেন প্রকৃত জাতীয়তাবাদী। দেশ ও জনগণের প্রশ্নের কোনো আপস করেন নেই। এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর। আমরা হারিয়েছি, সাবিহউদ্দিন আহমেদ, সিরাজুল ইসলাম সবুজসহ আরও অনেককে। তাদের মধ্যে সাবিহ অনন্য। আমরা তার পরিবারের জন্য দোয়া করি।'

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, 'সাবিহসহ আমরা যারা ছাত্ররাজনীতি শুরু করেছিলাম, আমাদের একটা লক্ষ্য ছিল- এই সমাজটাকে পরিবর্তন করব, আমরা বদলে দেব। সেটা সেই সময় সম্ভব হয়নি। সরকারি চাকরিতে গেলেও সাবিহ কখনো সেই লক্ষ্য থেকে সরে যায়নি। সাবিহ যেখানেই ছিল, সেখানেই দেশের জন্য কাজ করেছে, জনগণের জন্য কাজ করেছে। সবচেয়ে বেশি মনে পড়ে যে, যখন তিনি খালেদা জিয়ার সঙ্গে কাজ করেছেন। তখন তিনি সবচেয়ে বেশি দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করেছেন।'

শেখ হাসিনার শাসনমালে সাবিহউদ্দিন সরকারের রোষানলে নির্যাতিত হওয়ার ঘটনা তুলে ধরেন বলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'ওই সময় তার ওপরে প্রচন্ড আক্রমণও হয়েছিল, রিয়াজ রহমানের গুলি লেগেছিল, সাবিহউদ্দিন আহমেদের গাড়িটি পুড়িয়ে দিয়েছিল, আক্রমণ হয়েছিল। এই সময়গুলো আমরা পার করেছি। বহুবারই বিভিন্ন গ্রেপ্তার হওয়ার মুহূর্ত থেকে বেরিয়ে এসেছে। সে ভিকটিম হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু হয়নি। তার চলে যাওয়াটা আমাদের জন্য কষ্টকর। আমরা যারা এক সঙ্গে ছিলাম, তাদের কাছে এটা বেদনার। সাবিহর ছবিটা এখানে দেখে আতকে উঠলাম।'

অধ্যাপক মাহবুব উলস্নাহ বলেন, সাবিহ শেষ দিন পর্যন্ত দেশের কথা ভেবেছেন, দশের কথা ভেবেছেন। তার মধ্যে স্বার্থপরতা ছিল। দেশপ্রেমের প্রশ্নের কোনো আপস তিনি করেননি।

সাবিহউদ্দিন বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের ওপর স্মৃতিচারণ করেন প্রবীণ সাংবাদিক শফিক রেহমান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জহির উদ্দিন স্বপন, জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম, সাবিহউদ্দিন আহমেদের ছোট ভাই সালাহউদ্দিন আহমেদসহ অবসরপ্রাপ্ত কূটনীতিক, ব্যাংকার, অর্থনীতিবিদসহ বিভিন্ন পেশার নাগরিকরা। সাবিহউদ্দিনের সহধর্মিণী রওনক আহমেদ, ছেলে সাইয়াব আহমেদ, বিএনপি মহাসচিবের সহধর্মিণী রাহাত আরা বেগমসহ নিকট স্বজনরাও ছিলেন স্মরণসভায়।

সীমান্তে বাংলাদেশিদের নির্যাতনের প্রতিবাদ করেনি আওয়ামী লীগ : রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, গত দেড় দশক ধরে সীমান্তে বাংলাদেশের মানুষ নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হলেও আওয়ামী লীগ কখনো প্রতিবাদ করেনি। উল্টো প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে নতজানু সম্পর্ক রেখেছিলেন শেখ হাসিনা।

শনিবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাবেক সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক-বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) জহুর কমান্ডো, কর্নেল (অব.) আব্দুল হক, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) আইয়ুব, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) হাসিনুর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) নওয়াজ, রিয়ার এডমিরাল (অব.) মুস্তাফিজুর রহমান, কমান্ডার (অব.) মোস্তফা সহিদ, এয়ার কমোডর (অব.) শফিক, এয়ার কমোডর (অব.) শাহ শাহে আলম, স্কোয়াড্রন লিডার (অব.) আকতার হাফিজ খান, স্কোয়াড্রন লিডার (অব.) শফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে