সোমবার, ০৫ মে ২০২৫, ২২ বৈশাখ ১৪৩২

লেবুর দামে আগুন ৫ টাকার লেবু এখন ২৫

যাযাদি ডেস্ক
  ০৩ মার্চ ২০২৫, ০০:০০
লেবুর দামে আগুন ৫ টাকার লেবু এখন ২৫
লেবুর দামে আগুন ৫ টাকার লেবু এখন ২৫

পবিত্র রমজান মাস শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সিলেটে লেবুর দাম বেড়ে গেছে। ১০ দিন আগে যে লেবুর দাম ছিল ৫ টাকা, এখন সেটি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়। তবে অন্যান্য সবজির দাম স্থিতিশীল আছে।

শনিবার রাতে নগরের বন্দরবাজার, আম্বরখানা, রিকাবিবাজার ও মদিনা মার্কেট এলাকা ঘুরে এমন চড়া দামে লেবু বিক্রি হতে দেখা যায়। বিক্রেতারা জানান, ইফতারের সময় ধনী-গরিবনির্বিশেষে সবার কাছে লেবুর শরবতের বেশ চাহিদা থাকে। তবে বাজারে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম। এ কারণে দাম একলাফে কয়েক গুণ বেড়েছে।

বাজার ঘুরে জানা গেছে, দেড় সপ্তাহ আগে মাঝারি আকারের লেবু প্রতি হালির দাম ছিল ১৫ থেকে ২০ টাকা। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮০ টাকা। অন্যদিকে বড় আকারের লেবু প্রতি হালি এখন বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকায়। আগে তা ছিল ৩০ থেকে ৫০ টাকা।

রিকাবিবাজার এলাকার সবজি ব্যবসায়ী মো. হেলাল মিয়া বলেন, বাজারে সব ব্যবসায়ীর লেবু শেষ হয়ে গেছে। সন্ধ্যার পর তিনি ১০০টি লেবু এনেছিলেন। এখন আছে মাত্র এক হালি। পাইকারি বাজারে লেবুর দাম বেড়ে যাওয়ায় খুচরা বাজারে একলাফে কয়েক গুণ বেড়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

বন্দরবাজার এলাকার ভ্রাম্যমাণ সবজি বিক্রেতা মো. আছলম জানান, এখন লেবুর মৌসুম নয়, তাই বাজারে বেশি লেবুর সরবরাহ নেই। চাহিদা সত্ত্বেও ক্রেতারা লেবু পাচ্ছেন না। এ কারণেই লেবুর দাম এখন চড়া।

একাধিক ক্রেতা বলেন, তুলনামূলকভাবে বাজারে সবজির সরবরাহ বেশি থাকায় রমজানে দাম এবার সেই অর্থে বাড়েনি। তবে লেবুর দাম চড়া। স্থানীয় প্রশাসন একটু তদারকি করলে লেবুর দামও সহনীয় পর্যায়ে থাকবে।

মদিনা মার্কেট সবজির বাজারে কথা হয় পাঠানটুলা এলাকার বাসিন্দা মোজাম্মেল হকের সঙ্গে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, 'দেড় সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি হালি লেবুর দাম দ্বিগুণের বেশি বেড়ে গেছে। স্থানীয় প্রশাসন সঠিকভাবে বাজার তদারকি করলে এভাবে হুট করে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়াতে পারতেন না।'

যোগাযোগ করলে সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ বলেন, রমজান মাসে কেউ যেন অন্যায্যভাবে দাম বাড়াতে না পারেন, সে জন্য জেলা প্রশাসন নিয়মিত বাজার তদারকি করবে। লেবুর দাম বাড়ার বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।

খুলনায় এক লেবু ১৫ টাকা

\হএদিকে, খুলনার বাজারে বেগুন, শসা ও লেবু চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে লেবুর দাম বেড়েছে পাঁচগুণ। খুচরা বাজারে একটি লেবু বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকায়। রমজানকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত দামে পণ্য বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। অন্যদিকে বিক্রেতারা বলছেন, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম হওয়ায় দাম বেড়েছে।

রোববার খুলনা নগরীর মিস্ত্রিপাড়া, জোড়াকল বাজার, নতুন বাজার, গলস্নামারি বাজার ও পাইকারি বাজার ঘুরে এমনটা জানা গেছে।

পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, পাইকারি বাজারে ১০০ লেবু ৭০০-৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কেজিপ্রতি বেগুন ৬০-৭০ টাকায় এবং শসা ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে খুচরা পর্যায়ে লেবুর ধরণ ও আকারভেদে ৫০-৬০ টাকা হালি দরে বিক্রি হচ্ছে। বেগুন আকারভেদে ৯০-১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। শসা বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা কেজি দরে।

নতুন বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদ বলেন, গত এক সপ্তাহ হলো পাইকারি বাজারে লেবু, শসা ও বেগুনের দাম বেড়েছে। এক সপ্তাহ আগে এক হালি লেবু ১৫ টাকায় বিক্রি করেছি। এখন এক হালি লেবু ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি করছি।'

গলস্নামারি বাজারের বিক্রেতা সবুজ শিকদার বলেন, বেশি দামে লেবু ক্রেতারা নিতে চান না। তাই লেবু কম এনেছি। সবকিছুর দাম কিছুটা বেড়েছে। আমরা পাইকারি বাজার থেকে ক্রয় করে সামান্য লাভে বিক্রি করি।

মিস্ত্রিপাড়া বাজারে আসা ক্রেতা শফিকুল আলম বলেন, 'রোজার মাসে বেগুন, শসা ও লেবুর চাহিদা বেশি থাকে। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দাম বৃদ্ধি করেছেন ব্যবসায়ীরা। সাধারণ মানুষরা শুধু ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি হই।'

নিরালা এলাকার বাসিন্দা আবু বক্কর বলেন, 'রোজায় বেশিরভাগ মধ্যবিত্ত পরিবার লেবুর শরবত দিয়ে ইফতার করে। কিন্তু এবার লেবুর দাম বেশির কারণে ইফতার থেকে লেবুর শরবত বাদ দিতে হবে। এক হালি লেবুর দাম ডিমের দামের থেকেও বেশি। বাজার নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্টদের সুনজর দেওয়া দরকার।'

এদিকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, বেগুন, শসা ও লেবু চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম। এজন্য দাম বেড়েছ। শীতকালীন সবজি শেষ হচ্ছে। বেগুন, শসার ও লেবুর সরবরাহ বাড়লে দাম কমবে।##

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে