রাজধানী উত্তরার হাই কেয়ার জেনারেল হাসপাতালে জালাল উদ্দিন সরকার (৫৪) নামের এক রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে স্বজন ও ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।
আজ (শনিবার) সকাল ১১ টায় উত্তরা ৭ নম্বর সেক্টরের লেক ড্রাইভ রোডে অবস্থিত হাই কেয়ার জেনারেল হাসপাতালের সামনে মানববন্ধনটি অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় মৃত জালাল উদ্দিন সরকারের পরিবারের সদস্যরা দায়িত্বরত চিকিৎসকসহ ও হাসপাতালটির চেয়ারম্যান ডা. লুৎফুন নাহার সুমি, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এন খান ইমরান ও প্রতিষ্ঠানটির জেনারেল ম্যানেজার ওমর ফারুকসহ অজ্ঞাতনামা অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখা মৃত জালাল উদ্দিন সরকারের ছেলে সোহাগ সরকার বলেন, আমার বাবা নিজে পায়ে হেটে এই হাসপাতালে আসছিল। উনারা (হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ) অবহেলা করে আমার বাবাকে মেরে ফেলছে। আমি আমার বাবা হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই।
মানববন্ধনে জালাল উদ্দিনের অপর এক নারী স্বজন সাংবাদিকদের জানায়, এই হাসপাতালে আমার চাচা হাড়ের অপারেশন করাতে এসে কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে মারা গেছে। যারা আমার চাচাকে মেরে ফেলছে আমরা তাদের বিচার চাই।
বক্তব্যে মৃত জালাল উদ্দিনের ভাতিজা রুবেল সরকার বলেন, আমার চাচার মৃত্যুর পেছনে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায় রয়েছে। তারা বাইরে থেকে ডাক্তার ভাড়া করে এনে আমার চাচাকে ভুল চিকিৎসা দিয়ে মেরে ফেলছে।
আমার চাচাকে মেরে ফেলার পেছনে যারা জড়িত তাদের প্রত্যেকের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। এ সময় ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা উত্তরা পশ্চিম থানার সামনে দাঁড়িয়ে জড়িতদের বিচারের দাবি জানান।
জানতে চাইলে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে উত্তরা পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আ. রহিম মোল্লা এ বিষয়ে সাংবাদিকদের বলেন, জালাল উদ্দিনের মৃত্যুর কারণ নির্ণয়ের জন্য লাশ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয় এবং বর্তমানে তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত আছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে আমরা ব্যবস্থা নিব।
উল্লেখ্য, গত ২৩ জুন কোমড়ের হাড়ের অপারেশন করাতে উত্তরার হাই কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন গাজীপুরের বাসিন্দা জালাল উদ্দিন সরকার।
২৪ জুন কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. হোজাইফা আহম্মেদের তত্বাবধানে অপারেশন শেষে জালাল উদ্দিনকে ঘুমে ঔষধ প্রয়োগ করা হলে স্বজনদের দাবি তার আর জ্ঞান ফেরেনি।
এ নিয়ে ১ জুলাই রোগীর স্বজনরা মৃত্যুর শঙ্কা প্রকাশ করলে রোগী জীবিত আছে জানিয়ে জালাল উদ্দিনের স্বজনদের আশ্বস্ত করেন চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে পরদিন সন্ধ্যায় জালাল উদ্দিনকে মৃত ঘোষণা করে উত্তরা হাই কেয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এরপরই ভুল চিকিৎসা ও অবহেলায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগ তোলেন মৃত জালাল উদ্দিনের স্বজনরা।