বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শিশুকে দত্তক না পেয়ে বাবা-ভাইকে নির্যাতন!

বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
  ২৮ মার্চ ২০২৩, ০০:০০

ফরিদপুরের মধুখালীতে সন্তানকে দত্তক না দেওয়ায় বাবা ও তার ভাইকে স্কুলে নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার ৯ দিন পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হয়। গত ১৭ মার্চ মধুখালী উপজেলার জাহাপুর ইউনিয়নের আড়ুয়াকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ক্লাসরুমে এ ঘটনা ঘটে।

মেয়েকে দত্তক না দেওয়ায় স্কুলের শিক্ষক লিপি আক্তারের নির্দেশে নির্যাতন চালানো হয় বলে দাবি করেছেন নির্যাতনের শিকার ইয়ামিন মৃধা। নির্যাতনের শিকার ইয়ামিন মৃধা বাদী হয়ে ২০ মার্চ ঘটনার মূল হোতা মো. কুতুবউদ্দিন, ফয়সাল ও জহিরুলসহ অজ্ঞাত ৮ থেকে ১০ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন।

জানা যায়, ইয়ামিন তার ছেলেমেয়েকে নিয়ে মাঝকান্দি এলাকায় ভাড়া থাকেন। মেয়েটি আড়ুয়াকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী।

নির্যাতনের শিকার ইয়ামিন মৃধা জানান, 'আমার মেয়ে ইভাকে স্কুলে ভর্তি করার পর থেকে ওই স্কুলের সহকারী শিক্ষক লিপি আক্তার নিঃসন্তান হওয়ায় ইভাকে দত্তক নেওয়ার চেষ্টা করেন। মাস দুই আগে ইভাকে ওই শিক্ষক আমাকে না বলে তার বাড়িতে নিয়ে প্রায় সপ্তাহ খানেক রাখেন। নির্যাতনের ঘটনার তিনদিন আগে ইভাকে পুনরায় তার বাড়িতে নিয়ে যান। আমরা খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে জানতে পারি ওই শিক্ষকের ফরিদপুরের বাসায় ইভা আছে। পরে শিক্ষক লিপি আক্তারকে ফোন দিলে তিনি শুক্রবার (১৭ মার্চ) আমাকে ও ছেলেকে স্কুলে যেতে বলেন। প্রথমে ছেলেকে স্কুলে পাঠালে তাকে আটকে রেখে আমাকে যেতে বলেন। আমি স্কুলে যাওয়ার পর কুতুব উদ্দিনসহ আসামিরা মেয়েকে স্ট্যাম্পে লিখে দিতে বলেন। তাদের কথায় রাজি না হওয়ায় আমাদের ওপর নির্যাতন চালান তারা।'

তবে সহকারী শিক্ষক লিপি আক্তার তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি দশরথ চন্দ্র দাস বলেন, 'স্কুলে এত বড় একটা ঘটনা ঘটলেও তা প্রধান শিক্ষক আমাকে জানাননি। তবে বাবা-ছেলেকে স্কুলের মধ্যে মারধরের একটি ভিডিও আমি শনিবার দেখেছি। এ রকম খারাপ কাজ যারা করেছে তাদের কঠিন শাস্তির আওতায় আনা হোক।'

প্রধান শিক্ষক মো. কবিরুজ্জামান বলেন, 'বাবা-ছেলেকে পেটানোর ঘটনা জানার পর পুলিশকে খবর দিই। পুলিশ তাদের নিয়ে যায়। এমন ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে আমার জানা ছিল না।' উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম বলেন, এ ব্যাপারে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য বা শিক্ষকরা জড়িত আছেন কিনা সেটাও খতিয়ে দেখা হবে। মধুখালী থানার ওসি শহিদুল ইসলাম জানান, মামলার পরপরই মো. কুতুবউদ্দিন নামের আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়। পরে আদালত থেকে জামিন নিয়ে তিনি ছাড়া পান। মামলার আরও দুই আসামিও জামিনে আছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে