কক্সবাজারের উখিয়ায় রাতের আঁধারে দুর্বৃত্তের হামলায় আহত বৌদ্ধ ভিক্ষু শ্রীমৎ ধর্মজ্যোতি-(৭০) মারা গেছেন। বুধবার রাত ৩টায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান বলে জানিয়েছে তার পরিবার।

শ্রীমৎ ধর্মজ্যোতি উখিয়ার হলদিয়াপালং ইউনিয়নের মরিচ্যা শ্রাবস্তি বৌদ্ধবিহারের অধ্যক্ষ ছিলেন। গত সোমবার সকালে বৌদ্ধবিহারের একটি কক্ষ থেকে ধর্মজ্যোতিকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা সন্তোষ বড়ুয়া বলেন, রোববার রাতে কে বা কারা ছুরিকাঘাত করে রক্তাক্ত অবস্থায় ভিক্ষুকে ফেলে রেখে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রামে পাঠানো হয়।'

নিহতের ভিক্ষুর ছেলে সুমন বড়ুয়া বলেন, '১৬-১৭ বছর আগে ধর্ম পালনের উদ্দেশে সংসার ত্যাগ করেন বাবা। গত সাত বছর ধরে তিনি মরিচ্যার শ্রাবস্তি বিহারের অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছিলেন। তার সঙ্গে কারও শত্রম্নতা ছিল না।' এ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবি জানান তিনি।

মরিচ্যা শ্রাবস্তি বৌদ্ধবিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি মিলন বড়ুয়া বলেন, 'টাকার লোভে এলাকার উচ্ছৃঙ্খল দুর্বৃত্তরা পূর্বপরিকল্পিত এই ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে।' এদিকে বুধবার শ্রাবস্তি বৌদ্ধমন্দিরের ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরী।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী বলেন, 'বৌদ্ধ ভিক্ষুর প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করছি। আশা করছি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দ্রম্নতই তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনবে।' উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, 'ঘটনাটি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। অপরাধীদের দ্রম্নত আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।

রোহিঙ্গা মাঝি নিহত: এদিকে, বৃহস্পতিবার সকালে কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে সাব মাঝি এবাদুলস্নাহ-(৩৫) নিহত হয়েছেন। কুতুপালংয়ের ওয়ান ওয়েস্ট ক্যাম্পের এ/৯ বস্নকে এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। নিহত এবাদুলস্নাহ ওই বস্নকের লাল মোহাম্মদের ছেলে।

জানা গেছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে মিয়ানমার সরকার কর্তৃক তাদের ওপর চালানো নির্যাতনের তথ্য সংগ্রহ করছে। এরই অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার আদালতের প্রধান কৌঁসুলি করিম আসাদ আহমাদ খানের নেতৃত্বে প্রতিনিধিরা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তথ্য সংগ্রহ করছিলেন। এ সময় ক্যাম্পের একটি বস্নকের সাব মাঝি এবাদুলস্নাহকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।

উখিয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী জানান, সন্ত্রাসীরা ছুরিকাঘাতে এবাদুলস্নাহকে হত্যা করে পালিয়ে গেছে। মরদেহ উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।