সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
ক্যাকটাস, সাকুলেন্ট ও এডিনিয়ামের ফার্মে ভাগ্য বদল

পুঠিয়ায় গড়ে উঠেছে মরুর দেশের গাছ

মোহাম্মদ আলী, পুঠিয়া (রাজশাহী)
  ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০
রাজশাহীর পুঠিয়ায় সৌন্দর্যবর্ধক গাছ সাকুলেন্ট, ক্যাকটাস এবং এডেনিয়ামের ফার্ম -যাযাদি

রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার শিলমাড়িয়া ইউনিয়নের সাতবাড়িয়া গ্রামের পঙ্কজ কুমার মহন্ত। ইতোমধ্যে রাজশাহী কলেজ থেকে সমাজবিজ্ঞান বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি সম্পন্ন করেছেন। শখের বসে বাগান করতেন। লেখাপড়ার পাশাপাশি সৌন্দর্যবর্ধক গাছ সাকুলেন্ট, ক্যাকটাস এবং এডেনিয়াম তৈরি এবং বিক্রি করাকে দিয়েছেন বাণিজ্যিক রূপ। চাহিদা ও দাম ভালো থাকায় তার বার্ষিক আয় প্রায় ৫০ হাজার টাকা। পঙ্কজ কেউরাজোরা তার পৈত্রিক ৩০ শতক জমির ওপর তৈরি করেছেন এই ফার্ম। তিনি ভারত, থাইল্যান্ড ও চীন থেকে আমদানিকারকদের মাধ্যমে চারা সংগ্রহ করেন।

নিজের ফার্মে সৌন্দর্যবর্ধক গাছ সাকুলেন্ট, ক্যাকটাস এবং এডেনিয়াম চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী হয়ে উঠেছেন পঙ্কজ। বাজারে বাড়তে থাকা চাহিদা এবং ভালো দামের কারণে এগিয়ে আসছেন অনেক বেকার যুবক। এই সৌন্দর্যবর্ধক গাছ চাষের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি অর্থনৈতিক উন্নয়নে সঠিক দিকনির্দেশনা এবং সরকারি সহায়তা চান তারা। আর পঙ্কজের পুরো ব্যবসাই অনলাইন ভিত্তিক।

বর্তমানে বাগানের পলি হাউসের নিচে কিছুটা উঁচু চৌকির ওপর চাষ করেছেন প্রায় ৩০০ প্রজাতির ৪০ হাজারের বেশি সাকুলেন্ট, ক্যাকটাস এবং এডেনিয়াম। তাই নিজের বাগানের নাম রেখেছেন 'সাকুলেন্ট প্যারাডাইস'। সাকুলেন্ট এক বিশেষ ধরনের উদ্ভিদ, যা পানি সংগ্রহ করে শরীরে জমা রাখে। এজন্য তাদের পাতা বেশ পুরু ও রসালো হয়। দক্ষিণ আফ্রিকা সাকুলেন্ট প্রজাতির উদ্ভিদের জন্য বিখ্যাত। আমাদের দেশে বাসাবাড়ির সজ্জার জন্য কিংবা বাগানের জন্য এর জনপ্রিয়তা বেড়েছে।

সর্বনিম্ন ২০০ থেকে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা দামের গাছ আছে তার বাগানে। আর সাকুলেন্টের দাম ২৫০ থেকে ১ হাজার ৫০ টাকা। তবে সহজ শর্তে ঋণ ও সরকারি পৃষ্টপোষকতা পেলে এর চাষ আরও বাড়বে বলে দাবি স্থানীয়দের।

উদ্যোক্তা ও চাষি পঙ্কজ কুমার মহন্ত জানান, ছোটবেলা থেকে গাছাপালার প্রতি তার আলাদা একটা আকর্ষণ ছিল। শহরে লেখাপড়ার সময় ক্যাকটাস, সাকুলেন্ট সম্পর্কে জানতে পারেন। তখন থেকেই ক্যাকটাস, সাকুলেন্ট সংগ্রহ করা শুরু করেন। এখন তার ফার্মে ২৫০ থেকে ৩০০ প্রজাতির সাকুলেন্ট এবং ১৫০ থেকে ২০০ প্রজাতির ক্যাকটাস আছে। এবং সাকুলেন্টের একক ফার্ম হিসেবে এটা বাংলাদেশের মধ্যে সবচেয়ে। তার এ অর্জনের পেছনে এখানকার কৃষি কর্মকর্তাদের সার্বক্ষণিক সাহায্য ও সহযোগিতার বড় অবদান রয়েছে বলে তিনি জানান।

তিনি আরও বলেন, এগুলো বিক্রি করার সবচেয়ে উপযোগী মাধ্যম হলো অনলাইন। আর বর্তমানে এটা অফলাইনেও ভালো বিক্রি হয়। অনেকেই বাইরে থেকে ফার্ম দেখতে আসেন।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবির মাহামুদ জানান, পঙ্কজের এই ফার্মের তদারকি করেন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা। এই ফার্ম দেখে এলাকার অনেক তরুণ যুবক উদ্যোক্তা হিসেবে আগ্রহ প্রকাশ করছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে