শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

শেষ মুহূর্তে জমজমাট প্রচারণা

স্বদেশ ডেস্ক
  ০৬ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা শেষ হয়েছে শুক্রবার সকাল ৮টায়। শেষ মুহূর্তে ব্যস্ত সময় পার করেছেন প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকরা। শেষবারের মতো ছুটে গেছেন ভোটারদের কাছে। ব্যালটে নিজের পক্ষে সিল নিতে ভোটারদের মন জয় করতেও চেষ্টা করেছেন নানাভাবে। সারা দেশ থেকে প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে বিস্তারিত খবর-

ভেড়ামারা (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি জানান, কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার বাহাদুরপুর হাইস্কুল মাঠে বৃহস্পতিবার নৌকা প্রতীকের নির্বাচনী জনসভা অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের সভাপতি ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, 'আমার নির্বাচনী এলাকায় ইতোমধ্যে আওয়ামী স্বতন্ত্র প্রার্থী মাঝে মধ্যে তার গুন্ডাবাহিনী দিয়ে আক্রমণ করার চেষ্টা চালাচ্ছে। প্রশাসন যদি শক্ত হাতে দমন না করে, তাহলে নির্বাচনের দিন পরিস্থিতি সামাল দিতে পারবে না। নির্বাচনে গুন্ডাবাহিনী দমনে প্রশাসন নিষ্ক্রিয়তা দেখালে ভোটারদের নিয়ে ভোটের দিন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হবে।'

হাসানুল হক ইনু আরও বলেন, 'প্রশাসন যদি নিষ্ক্রিয়তা দেখায়, তাহলে আমি ভোটারদের নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনব এবং নির্বিঘ্নে ভোট হওয়ার ব্যবস্থা করব।'

জাসদ নেতা গোলাম ফারুক মাস্টারের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন জেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলিম স্বপন, ভেড়ামারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শফিউল ইসলাম কুব্বাত, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম, মিরপুর পৌরসভার মেয়র হাজ্বী এনামুল হক মালিথা, সংসদ সদস্য প্রার্থী হাসানুল হক ইনু এমপির ছেলে প্রকৌশলী আশফাকুল হক শোমিত, মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আতাহার আলী, ভেড়ামারা উপজেলা জাসদের সভাপতি এমদাদুল ইসলাম আতা, সাধারণ সম্পাদক এস এম আনছার আলী, পৌর মেয়র আনোয়ারুল কবীর টুটুল, ভেড়ামারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রওশন জামিল সিদ্দিক রাসেল, সাবেক কোষাধ্যক্ষ শরিফুজ্জামান নবাব, সাবেক প্রচার সম্পাদক শওকত আলম বকুল, চাঁদগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হাফিজ তপন, কুষ্টিয়া জেলা জাসদের সাংগঠনিক সম্পাদক অশিত কুমার সিংহ রায়, কৃষিবিষয়ক সম্পাদক বশির উদ্দিন বাচ্চু, মোকারিমপুর ইউনিয়ন জাসদের সাধারণ সম্পাদক বেনজির আহমেদ বেনু প্রমুখ।

কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি জানান, ঢাকার কেরানীগঞ্জে বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগ আয়োজিত নির্বাচনী পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। পথসভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ঢাকা-২ আসনের নৌকার প্রার্থী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, 'বিএনপি নির্বাচনে না এসে নিশ্চয়ই ভুল করেছে। কোনো রাজনৈতিক দল যদি জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ততা হারায়, সেই রাজনৈতিক দল আর টিকে থাকতে পারে না।'

তিনি আরও বলেন, 'বিএনপি ভোটারদের নয়, বিশ্বাস করে বিদেশি শক্তিকে। তারা দেশকে ধ্বংস করতে বিদেশিদের দ্বারস্থ হচ্ছে। বিএনপি যত আগুন সন্ত্রাস করবে সরকার ততই কঠোর হবে।'

কামরুল ইসলাম বলেন, 'সুষ্ঠু নির্বাচনের বারবার ঘোষণা দেওয়ার পরও বিএনপি আসেনি। জ্বালাও পোড়াও করছে। তাদের দাবি প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ করে নির্বাচন। পদত্যাগ করলে সাংবিধানিক সংকট হতো। বিএনপি আইন মানে না বিচারও মানে না। নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করতে চায়। এখন আবার বলছে নির্বাচন হবে কিন্তু সরকার টিকবে না।'

এ সময় উপস্থিত ছিলেন কেরানীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ, কেরানীগঞ্জ মডেল থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইউসুফ আলী চৌধুরী সেলিম, সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসেন বিপস্নব, সহসভাপতি শফিউল আজম খান বারকু, কেরানীগঞ্জ উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আলো বেগম ও বাস্তা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশকর আলী প্রমুখ।

কালিয়া (নড়াইল) প্রতিনিধি জানান, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রচারণার শেষ দিনে বৃহস্পতিবার জনসভা করেছেন নড়াইল-১ আসনের নৌকার প্রার্থী বি এম কবিরুল হক মুক্তি।

নড়াইল সদর উপজেলার আগদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে এ জনসভার আয়োজন করা হয়। জনসভায় সভাপতিত্ব করেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অচীন চক্রবর্তী। প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বি এম কবিরুল হক মুক্তি।

বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. নিজাম উদ্দীন খান নিলু, কালিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হারুনার রশীদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সম্পাদক সৈয়দ মোহম্মদ আলী, সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান তোফায়েল মাহামুদ, কলোড়া ইউপি চেয়ারম্যান আশীষ বিশ্বাস, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ফরহাদ হোসেন প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে কবিরুল হক মুক্তি বলেন, '৭ তারিখের নির্বাচন দেশ রক্ষার নির্বাচন। মুক্তিযুদ্ধ এবং অসাম্প্রদায়িক চেতনায় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা এ দেশকে নিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে আবারও গভীর ষড়যন্ত্র চলছে।'

নির্বাচনের শেষ প্রচারণার জনসভায় জনতার ঢল নামে। দুপুরের পর থেকে বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রাম-গঞ্জের নেতাকর্মীসহ আম জনতা বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে জনসভাস্থলে জড়ো হতে থাকেন। বিকাল ৪টা বাজার আগেই মাঠ লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়।

আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪, (কসবা-আখাউড়া) আসনে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকসহ তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে মাঠের চিত্র ভিন্ন। প্রচার-প্রচারণা ও গণসংযোগে সরব আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। হেভিওয়েট আনিসুল হকের আসনে অপর দুই প্রার্থী হলেন এনপিপি'র প্রার্থী শাহীন খান (আম) ও তরিকত ফেডারেশনের প্রার্থী ছৈয়দ জাফরুল কুদ্দুছ (ফুলের মালা)।

শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকলেও গণসংযোগ আর সভা সমাবেশে ব্যস্ত সময় পার করছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। প্রতীক পেয়েই তিনি এলাকায় গণসংযোগ শুরু করেন। বেশ কয়েকটি বড় জনসভাসহ পথসভা করেছেন। প্রতিটি সভায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ বিপুল সংখ্যক সাধারণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন। তিনি ১০ বছর জনগণের সেবা করেছেন দাবি করে ভোটারদের কেন্দ্র গিয়ে নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার অনুরোধ করেন।

এদিকে নৌকার বিজয়ে একাট্টা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। প্রতিটি নির্বাচনী ওয়ার্ডে শতাধিক নেতাকর্মীর সমন্বয়ে কেন্দ্র কমিটি গঠন করা হয়েছে। গঠন করা হয়েছে একটি প্রচার সেল কমিটি। এসব কমিটির সদস্যরা এবং সিনিয়র নেতারা নিজ নিজ এলাকায় ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে আনিসুল হকের সালাম পৌঁছে দিচ্ছেন। ভোট কেন্দ্রে গিয়ে নৌকা প্রতীকে ভোট দেওয়ার অনুরোধ করছেন। শহর থেকে গ্রামের অলিগলি সর্বত্র নৌকার পোস্টার ও ব্যানার শোভা পাচ্ছে।

চন্দনাইশ (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি জানান, চট্টগ্রাম-১৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল জব্বার চৌধুরীর ট্রাক প্রতীকের সমর্থনে উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার চন্দনাইশে কয়েক হাজার ভোটার ও সমর্থক নিয়ে এই উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় আব্দুল জব্বার চৌধুরী বলেন, 'আপনারা সবাই ৭ তারিখ সুশৃঙ্খলভাবে নির্ভয়ে নিজ নিজ কেন্দ্রে গিয়ে ভোট প্রদান করবেন। ভোট সম্পূর্ণ সুষ্ঠু হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পুরোদমে মাঠে থাকবে।

তিনি আরও বলেন, 'আমি আশা করব বিগত দিনে যারা জনপ্রতিনিধি হয়ে জনগনের পাশে ছিলেন না আপনারা ভোট প্রদানের মাধ্যমে তাদের প্রতিহত করবেন। আমি তিন বার উপজেলা চেয়ারম্যান থাকাকালীন কোনো দুর্নীতি করিনি। সব সময় সর্বোচ্চ সেবা দিতে চেষ্টা করেছি। সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে ভালো কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ পুরস্কৃৃত হয়েছি।'

উঠান বৈঠকে সভাপতি ছিলেন হাশিমপুর ইউনিয়নের সাবেক সফল চেয়ারম্যান আব্দুল মন্নান। গাছবাড়ীয়া সরকারি কলেজের সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি মাঈনুদ্দিন বাপ্পীর সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান, সাবেক হাশিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী, কাউন্সিলর মোজাম্মেল হক চৌধুরী, সাবেক ভিপি শেখ টিপু চৌধুরী, সাবেক আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা আবুল কালাম চৌধুরী, আবু ছৈয়দ চৌধুরী, সাবেক উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি চৌধুরী আমির মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, চন্দনাইশ উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আলমগীরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম, হাশিমপুর ইউপি সদস্য হেলাল উদ্দিন, ২ নম্বর ফজলুল করিম আয়ুব, গোলাম নবী চৌধুরী, আব্দুল মন্নান এনি, আওয়ামী লীগ নেতা ইয়াছিন চৌধুরী দুলাল প্রমুখ।

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি জানান, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়া-১ দৌলতপুর আসনের ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী অধ্যাপক নাজমুল হুদা পটল বিশ্বাস দৌলতপুর উপজেলার সর্বত্র বিরামহীন গণসংযোগ, পথসভা, উঠান বৈঠক, মতবিনিময় সভা করে তৃণমূল ভোটারদের মনে জায়গা করে নিয়েছেন।

জানতে চাইলে অধ্যাপক নাজমুল হুদা পটল বিশ্বাস বলেন, 'আমরা সন্ত্রাসের রাজনীতি করি না, আমরা লুটপাটের রাজনীতি করি না, আমরা বালুখোর নই। দৌলতপুরের মানুষ পরপর দু'জন এমপি সাহেবের আমল দেখেছে। আমরা তাদের উত্তরসূরি হতে চাই না। আমরা চাই, জনতার এমপি হয়ে জনগণের পাশে থাকতে। আমরা মনে করি, ঈগল পাখি জয়লাভ করলে, দৌলতপুরের ৬ লাখ মানুষই এমপি হবেন।'

দেবিদ্বার (কুমিলস্না) প্রতিনিধি জানান, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে কুমিলস্না-৪ (দেবিদ্বার) আসনের সংসদ সদস্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ঈগল প্রতীক আবুল কালাম আজাদের নির্বাচনী উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার দেবিদ্বার উপজেলার বড়শালঘর হাইস্কুল মাঠে এ আয়োজন করা হয়।

এ সময় আবুল কালাম আজাদ বলেন, 'স্মার্ট ও উন্নত দেবিদ্বার গড়ে তুলতে আপনাদের পাশে থেকে কাজ করতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমি আপনাদের কাছে ঈগল প্রতীক নিয়ে একজন প্রার্থী হয়ে এসেছি। আপনারাও আমাকে ভালোবেসে বুকে টেনে নিয়েছেন, আজকের যে মানুষের উপস্থিতি তা প্রমাণ করেছেন। চারদিকে ঈগল প্রতীকের জয়জয়কার।'

তিনি আরও বলেন, 'আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি, দুর্দিনে যেভাবে আপনারা আমার পাশে ছিলেন, সাহস জুগিয়েছেন আমিও আপনাদের পাশে থাকব, আপনারা সবার আগে আমাকে পাশে পাবেন।'

বীর মুক্তিযোদ্ধা সামসুল হকের সভাপতিত্বে এ সময় বক্তব্য রাখেন, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক ইকবাল হোসেন রাজু, কুমিলস্না উত্তর জেলা যুবলীগের প্রতিষ্ঠাকালীন সাধারণ সম্পাদক আবদুল আলিম, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এজাজ মাহমুদ, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য কালীপদ মজুমদার, দেবিদ্বার পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কাশেম সওদাগর, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য হাজি তুহিন, বড়শালঘর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জহিরুল ইসলাম জারু, বড়শালঘন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য মো. ইউনুছ মাস্টার, উপজেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক কাউছার হায়দার প্রমুখ।

ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি জানান, কুড়িগ্রাম-২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. হামিদুল হক খন্দকার (ট্রাক মার্কা) কান্নাজড়িত কণ্ঠে সবার কাছে ভোট চাইলেন।

বৃহস্পতিবার ফুলবাড়ী উপজেলার কাচারী মাঠের এক বিশাল নির্বাচনী জনসভায় প্রার্থী হিসেবে বক্তৃতাদানকালে সমবেত হাজার হাজার কর্মী-সর্মথককে দেখে তিনি আবেগাপস্নুত হয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে সবার কাছে তার ট্রাক প্রতীকে ভোট চান।

তিনি এ সময় বলেন, 'আমি ফুলবাড়ী উপজেলার মানুষ। আমি ফুলবাড়ী জছিমিঞা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম। আমি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দাঁড়িয়েছি। একজন সংসদ সদস্যের অনেক পাওয়ার। তিনি এলাকার অনেক উন্নয়ন করতে পারেন। কিন্তু কুড়িগ্রাম-২ আসনের সংসদ সদস্য কেন যে কাজ করে না বুঝি না।'

তিনি আরও বলেন, 'আপনারা প্রত্যেকে হামিদুল হিসেবে সবাইকে আমার ট্রাক মার্কায় নিজে ভোট দেবেন এবং অন্যকে ভোট দেওয়ার প্রচার করবেন। এবার ভোট ভয়হীন হবে। কোনো সমস্যা হবে না। সবাই ভোট কেন্দ্রে গিয়ে আমার ট্রাক মার্কায় ভোট দেবেন। আমি সংসদ সদস্য নির্বাচিত এলাকার উন্নয়নে কাজ করব।'

গফরগাঁও (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি জানান, ময়মনসিংহ-১০ আসনে টানা তৃতীয়বারের মতো নৌকা নিয়ে লড়ছেন ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল। বিরামহীন নির্বাচনী প্রচারণায় একদন্ড অবসর নেই। বৃহস্পতিবার দিনভর প্রচারণা চালিয়ে রাতে ছুটে গেছেন প্রান্তিক মানুষের কাছে। ফাহমী গোলন্দাজের নির্বাচনী প্রচারণার সারাদিনের রোজনামচায় এমনটাই দেখা গেল। নৌকার সমর্থনে পাড়া, মহলস্না, গ্রাম আর নগরে যেন উৎসব জমে উঠেছে। জোয়ারের মতো ভেঙে পড়েছে মানুষের স্রোত।

প্রতিদিনই আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। লিফলেট বিতরণসহ ভোটের দিন কেন্দ্রে গিয়ে নৌকায় ভোট দিতে আহ্বান জানাচ্ছেন।

সরেজমিন দেখা গেছে, মাঠ দাপিয়ে যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীসহ ১৫টি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও পৌরসভার কাউন্সিলররা দলবল নিয়ে গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

নিজের অবস্থান সম্পর্কে ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত 'স্মার্ট বাংলাদেশ' বিনির্মাণে সম্পৃক্ত থাকার শপথ নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা করে যাচ্ছি। আমার এলাকার সব নাগরিকের মুখে হাসি ফুটাতে চাই, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির প্রতীক হয়ে উঠুক প্রিয় গফরগাঁও। নিত্যদিন জনগণের খোঁজখবর নেওয়া আমার দায়িত্ব বলেই নৌকার গণ জোয়ারের পরও মাঠে ময়দানে ছুটে যাচ্ছি আমার নির্বাচনী এলাকার মানুষের মাঝে। তাদের সুখ, দুঃখ, আর হাসি-আনন্দের মাঝে আমি বেঁচে থাকতে চাই।'

গঙ্গাচড়া (রংপুর) প্রতিনিধি জানান, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রংপুরের গঙ্গাচড়ায় উপজেলায় প্রায় ছয়শ' মিটারের মধ্যে রংপর-১ আসনের স্বতন্ত্র দুই প্রার্থী মশিউর রহমান রাঙ্গা ও আসাদুজ্জামান বাবলু পথসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে একই সঙ্গে শুরু হয় রাঙ্গা ও বাবলুর পথসভা দু'টি। উপজেলার সদরে হাজী দেলওয়ার হোসেন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সংলগ্ন মাঠে অনুষ্ঠিত হয় স্বতন্ত্র প্রার্থী রাঙ্গার ট্রাক প্রতীকের পথ সভা। জাতীয় পার্টির সাবেক সভাপতি নুর আমিনের সভাপত্বিতে আলী আরিফ সরকার রিজুর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ট্রাক প্রতীকের প্রার্থী মশিউর রহমান রাঙ্গা।

অপরদিকে আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী আসাদুজ্জামান বাবলুর কেটলি প্রতীকের পথসভাটি অনুষ্ঠিত হয় গঙ্গাচড়া বাজার সংলগ্ন মরহুম আব্দুল জব্বার হাজীর চাতালে। উপজেলা জাতীয় পার্টির সাবেক সভাপতি আনোয়ারুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও আল আমিন লিটনের সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কেটলি প্রতীকের প্রার্থী আসাদুজ্জামান বাবলু।

এ সময় গঙ্গাচড়া ইউনিয়ন পরিষদের মাঠে, বাজার জিরো পয়েন্টে, থানার মোড়ে আসাদুজ্জামান বাবলুর পথসভার আলোচনা প্রজেক্টরের মাধ্যমে দেখানো হয়। আর সেখানে দলবদ্ধ হয়ে সাধারণ মানুষ মনোযোগের সঙ্গে দেখেছেন।

দুই স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকেরা নিজ নিজ প্রতীক ট্রাক ও কেটলির স্স্নোগান দিয়ে দলে দলে পথসভায় যোগ দিতে দেখা যায়। উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী দলের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দকে ট্রাক এবং কেটলি প্রতীকের পক্ষে পথসভায় অংশ গ্রহণ করে বক্তৃতা প্রদান করতে দেখা যায়। এদিকে একই সঙ্গে দুই প্রার্থীর পথসভার কারণে সংঘাত এড়াতে ব্যস্ততায় সময় কাটাতে দেখা যায় পুলিশ প্রশাসনকে।

রংপুর প্রতিনিধি জানান, রংপুর-৩ (রংপুর সদর ও আংশিক সিটি) আসনে তৃতীয় লিঙ্গের স্বতন্ত্র প্রার্থী আনোয়ারা ইসলাম রানী (ঈগল) ভোটযুদ্ধে জয়লাভে অপ্রতিরোধ্য গতিতে ছুটছেন। পাড়া মহলস্না থেকে শুরু করে এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে। কোনো এলাকা বাদ দিচ্ছেন না তিনি। সুষ্ঠু শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণ ও অন্যায় কিছু না হলে লক্ষাধিক ভোটের ব্যবধানে জয়ী হওয়ার আশা করেছেন। বৃহস্পতিবার নগরীর প্রেস ক্লাব চত্বরে গণসংযোগকালে সাংবাদিকদের কাছে এমন আশার কথা জানিয়েছেন তিনি।

রানী বলেন, 'ভোটের পরিবেশ নিয়ে আস্থা ও শঙ্কা দুটোই আছে। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ভোটের পরিবেশ ভালো আছে। যদিও আমার ওপর ছোটোখাটো একটা হামলা, পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে একবার মিছিলে বাঁধা দেওয়ার মতো বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে।' এছাড়া তেমন কিছু হয়নি বলে রানীর অভিযোগ।

তিনি নির্বাচিত হলে কৃষিভিত্তিক শিল্প কলকারখানা ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি উন্নয়নের ২১টি প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। তিনি জানান, 'যেখানেই যাচ্ছে ভোটারদের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। ভোটাররা তাকে জানিয়েছেন, ভোট দিতে যাওয়ার ইচ্ছে ছিল না। শুধু আপনাকে ভোট দেওয়ার জন্য যাব।'

রংপুর-৩ আসনে অন্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা হলেন, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির আব্দুর রহমান রেজু (একতারা), বাংলাদেশ কংগ্রেসের একরামুল হক (ডাব), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সহিদুল ইসলাম (মশাল) ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির শফিউল আলম (আম)।

হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি জানান, চট্টগ্রাম-৫ হাটহাজারী আসনে প্রস্তুত রয়েছেন আট প্রতীকের আট প্রার্থী। তবে আট প্রার্থী নির্বাচনে থাকলেও সাধারণ ভোটারদের মুখে মুখে ত্রিমুখী লড়াই হবে এ আসনে। আসনটিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উত্তর জেলার সভাপতি এম এ সালাম দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিলেও জাতীয় পার্টির সঙ্গে সমন্বয় করার কারণে প্রতিবারের ন্যায় টিকিট পেয়ে যায় ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। এ আসনে জোটের হয়ে টানা চতুর্থবার নির্বাচন করছেন তিনি। তবে এবারের চিত্র কিছুটা ভিন্ন। নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিলেও স্বতন্ত্র থেকে মাঠে আছেন আওয়ামী লীগের দুই নেতা। কেটলি প্রতীক নিয়ে ছাত্রলীগ চবির সাবেক সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী ও ঈগল প্রতীক নিয়ে উত্তর জেলা যুবলীগের সহসভাপতি নাছির হায়দার করিম বাবুল। সাধারণ ভোটারদের মতে ঈগলের জমজমাট প্রচারণা না থাকলেও লাঙ্গলের সঙ্গে প্রচারণায় সমানে সমান আছেন কেটলি। অপরদিকে একইতালে আছেন ইসলামী ফ্রন্টের মোমবাতি প্রতীকের অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোখতার আহমেদ। শুরুতে স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজাহান চৌধুরীর মনোনয়ন যাছাইয়ে বাতিল পরে ইসিতেও তা বহাল এবং উচ্চ আদালত থেকে প্রার্থিতা ফিরে পেয়ে মাঠে নামলে উপজেলা আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী তার পক্ষে অবস্থান নেন। প্রচার-প্রচারণায় অনেককে পাশে দেখা যায়। লিফলেট বিলি করে ভোট চান কেটলি প্রতীকে।

এ ছাড়াও প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন চবি ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি নাজিম উদ্দিন, তিনি সোনালি আঁশ নিয়ে লড়বেন। ইসলামিক ফ্রন্টের চেয়ার প্রতীকে আছেন অধ্যাপক ছৈয়দ হাফেজ আহমদ, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির একতারা প্রতীকে কাজী মহসিন চৌধুরী, প্রচার-প্রচারণা এমনকি কোথাও কোনো লিফলেট চোখে না পড়লেও মাঠে আছেন বিএনএফে'র টেলিভিশন প্রতীকের আবু শামসুদ্দীন।

কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সিরাজগঞ্জ-১ (কাজিপুর) আসনে এবারও নৌকার পালে হাওয়া জোরেসোরেই বইছে। এই আসনে ভোট যুদ্ধে লড়ছেন চার চারজন প্রার্থী। তারা হলেন নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য প্রকৌশলী তানভীর শাকিল জয়, জাসদের সাইফুল ইসলাম মশাল প্রতীক, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) সবুজ আলী চাকলাদার এবং নোঙ্গর প্রতীকে নিয়ে লড়ছেন জহুরুল ইসলাম।

কাজিপুরের ১২টি ইউনিয়ন ও সিরাজগঞ্জে সদরের ৫ ইউনিয়নসহ কাজিপুর আসনের মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লক্ষ ৯৪ হাজার ৬৭২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লক্ষ ৯৫ হাজার ১১৫ জন, মহিলা ১ লক্ষ ৯৯ হাজার ৫৫৫ জন, তৃতীয় লিঙ্গের ২ জন।

পূর্বধলা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি জানান, নেত্রকোনার পূর্বধলায় প্রচারণার শেষ দিনে নৌকা মার্কার নির্বাচনী জনসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার উপজেলার বিশকাকুনী ইউনিয়নের সরিস্তলা ঈদগাহ মাঠে এ আয়োজন করা হয়।

সভায় নেত্রকোনা-৫ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আহমদ হোসেন বলেন, 'নৌকায় চড়ে স্বাধীনতা এসেছে, নৌকায় চড়ে দেশ স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তাই আগামী ৭ তারিখের নির্বাচনে সেই উন্নয়নের প্রতীক নৌকায় ভোট দেওয়ার ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।'

তিনি আরও বলেন, 'নির্বাচনী প্রচারণায় নৌকার পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের মানুষ উদগ্রীব হয়ে আছে নৌকায় ভোট দিতে। আমি আপনাদের ভোটে এমপি নির্বাচিত হয়ে আপনাদের সেবক হয়ে কাজ করতে চাই। পূর্বধলাকে মাদক, দুর্নীতিমুক্ত একটি মডেল উপজেলায় রূপান্তর করতে চাই।'

সভায় সভাপতিত্ব করেন বিশকাকুনী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আলতাব হোসেন। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস সাত্তার মাস্টার, লাল মিয়া মেম্বার, আব্দুল জব্বার, এরশাদ হোসেন, যুবলীগ নেতা মাহমুদুল হাসান রতন, শহিদুল ইসলাম খান, আব্দুল মোতালিব, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হাফেজ আবু হানিফ প্রমুখ। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শেখ রাজু আহমেদ রাজ্জাক সরকার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ গোলাম মোস্তফা, বিশকাকুনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম আল আমিন, বিশকাকুনী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কাশেম মন্ডল, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের উপ-মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক আহনাফ হোসেন, যুবলীগ নেতা এনামুল হক এন্ট্রেস প্রমুখ।

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি জানান, রাত পোহালেই অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচনে দিনাজপুরের ৬টি আসনের বিপরীতে ২৬জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও, ভোটের লড়াইয়ে ৬টি আসনের মধ্যে চারটিতে আওয়ামী লীগের বিপরীতে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্রের শক্ত লড়াইয়ের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

জানা গেছে, দিনাজপুরের ১৩টি উপজেলা নিয়ে গঠিত ৬টি আসনের মোট ভোটার ২৫ লাখ ৫৪ হাজার ৫৪৯ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ১২ লাখ ৫২ হাজার ৯৬৬ জন ও পুরুষ ভোটার ১৩ লাখ এক হাজার ৫৮৩ জন। ৬টি আসনের বিপরীতে ভোটে লড়ছে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, ওযার্কার্স পার্টি, এনপিপি, ইসলামী ঐক্যজোট, মুসলিম লীগ, জাসদ, তৃণমূল বিএনপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ মোট ২৬ জন প্রার্থী।

দিনাজপুর-১, দিনাজপুর-৩, দিনাজপুর-৪ ও দিনাজপুর-৬ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে শক্ত অবস্থানে লড়ছেন আওয়ামী লীগের সতন্ত্র প্রার্থীরা। দিনাজপুর-২ আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী নৌ-পরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এবং দিনাজপুর-৫ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার এমপির বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী নেই।

এর মধ্যে দিনাজপুর-৫ (পার্বতীপুর, ফুলবাড়ী) আসনে মোট ভোটার চার লাখ ৫০ হাজার ১৩৮ জন। এ আসন থেকে ভোটে লড়ছেন পাঁচজন প্রার্থী। এরা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত সাতবারের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার (নৌকা)। জাতীয় পার্টি মনোনীত নুরুল ইসলাম (লাঙ্গল), বাংলাদেশ ন্যাশনাল পিপলস পার্টি মনোনীত শওকত আলী (আম), স্বতন্ত্র হযরত আলী বেলাল (ট্রাক) ও ব্রিগেডিয়ার (অব.) তোজাম্মেল হক (ঈগল)।

তিতাস (কুমিলস্না) প্রতিনিধি জানান, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিলস্না-১ (দাউদ কান্দি-তিতাস) আসনে ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। প্রচার-প্রচারণা শেষে প্রার্থীরা তাদের এজেন্ট কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। কেন্দ্রে কেন্দ্রে প্রার্থীদের ভোটার তালিকা, ভোটার স্স্নিপসহ আনুষাঙ্গিক কাজকর্ম শেষ করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। হুমকি-ধামকি, অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ আর ভ্রাম্যমাণ আদালতে সরব ছিল নির্বাচনী প্রচারের দিনগুলো।

দাউদকান্দি উপজেলার একটি পৌরসভা, ১৫টি ইউনিয়ন ও তিতাস উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত কুমিলস্না-১ আসন। নতুন রূপে গঠিত হওয়া এ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৯ জন। যার মধ্যে তিতাসের ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৬২ হাজার ৭৪০ জন।

এ আসনে মোট ৮জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সবুর, জাতীয় পার্টির মনোনীত মোহাম্মদ আমির হোসেন ভূঁইয়া, স্বতন্ত্র প্রার্থী ঈগল প্রতীকে ব্যারিস্টার নাঈম হাসান। মূলত এই তিনজনের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়াও এ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে জাসদের বড়ুয়া মনোজিত ধীমন (মশাল), তৃণমূল বিএনপির সুলতান জিসান উদ্দিন (সোনালী আঁশ), ইসলামী ঐক্যজোটের মাওলানা নাছির উদ্দিন (মিনার), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া (ছড়ি) ও বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের জাকির হোসেন (ফুলের মালা)।

টঙ্গী (গাজীপুর) প্রতিনিধি জানান, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাজীপুর-২ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী জাহিদ আহসান রাসেলের নির্বাচনী পথসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার গাজীপুরের টঙ্গী সফি উদ্দিন সরকার একাডেমি এন্ড কলেজ মাঠে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, 'আমি দুই টার্মেই এলাকায় সততা নিয়ে কাজ করেছি, মন্ত্রণালয়েও সততার সঙ্গে কাজ করেছি। এ কারণেই আমাকে ভালোবেসে এলাকার মানুষ বারবার নির্বাচিত করেন। এবারও নৌকার পক্ষে আমি বহু সমর্থন পাচ্ছি। যেখানে যাচ্ছি পথসভা করলে তা জনসভা, জনসমুদ্র বা গণজোয়ারে পরিণত হচ্ছে। আমি বিশ্বাস করি এটা অব্যাহত থাকলে ৭ জানুয়ারি নৌকা বিপুল ভোটে বিজয়ী হবে।'

গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আজমত উলস্না খানের সভাপতিত্বে ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৪৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরুল ইসলাম নুরুর পরিচালনায় আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সাবেক মন্ত্রী পরিষদের সচিব কবির আনোয়ার, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউলস্নাহ মন্ডল, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ, সাবেক সহ-সভাপতি ওসমান আলী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান মতি, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী ইলিয়াস আহম্মেদ, অ্যাডভোকেট হেলাল উদ্দিন, আব্দুল আলীম মোলস্না, মজিবুর রহমান মোড়ল, জাতীয় শ্রমিক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক, আব্দুল রশিদ মিয়া, গাজীপুর মহানগর কৃষক লীগের সভাপতি হেলাল উদ্দিন, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক বিলস্নাল হোসেন, মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি মশিউর রহমান সরকার বাবু, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর গিয়াস উদ্দিন সরকার, আবুল হোসেন, হাজী বিলস্নাল হোসেন মোলস্না, জাহাঙ্গীর হোসেন, আমজাদ হোসেন, কাজী আবু বকর সিদ্দিক, আমির হামজা, মাজহারুল ইসলাম দিপু, খালেদুর রহমান রাসেল, গাজীপুর মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সিনিয়ার সহ-সভাপতি নুর মোহাম্মদ মামুন, মামুনুর রশীদ মোলস্না, ইব্রাহিম চৌধুরী, জাকির হোসেন, জসিম মাতব্বর প্রমুখ।

বগুড়া প্রতিনিধি জানান, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) আসনে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা শরিফুল ইসলাম জিন্নাহর নির্বাচনী সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার উপজেলার মাঝিহট্ট ইউনিয়নের মাঝিহট্ট দ্বিমুখী স্কুল মাঠে লাঙ্গল প্রতীককে বিজয়ের লক্ষে এই জনসভা অনুষ্ঠিত হয়।

মাঝিহট্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এসকেন্দার আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জিন্নাহ বলেন, 'আগামী ৭ জানুয়ারি আমাদের দেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমি লাঙ্গল প্রতীকে নির্বাচন করছি। এ পর্যন্ত আমি শিবগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তে জনসভা করেছি, গণসংযোগ করেছি, কর্মিসভা করেছি। ইতোমধ্যে মানুষের মাঝে উৎসাহ তৈরি হয়েছে। ৭ তারিখের জন্য মানুষ প্রস্তুত হচ্ছে। তারা কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেবে। আমি বিশ্বাস করি আগামী ৭ তারিখ নির্বাচনে এই উপজেলার মানুষ আমাকে লাঙ্গল প্রতীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে।'

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফিরোজ আহম্মেদ রিজু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আজিজুল হক, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রেজ্জাকুল ইসলাম রাজু, সৈয়দপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মোত্তালেব, ময়দানহাটা ইউপি চেয়ারম্যান আবু জাফর মন্ডল, রায়নগর ইউনি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শফি, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ছাত্তার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি এম এ লতিফ, গোলাম মোস্তফা খাঁন, মো. সিরাজুল ইসলাম, আবেদ আলী প্রমুখ।

কর্ণফুলী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি জানান, চট্টগ্রাম-১৩ আসনে (আনোয়ারা ও কর্ণফুলী) আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপির সমর্থনে গণমিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার উপজেলার চাতরী চৌমহনী বাজার থেকে মিছিলটি কর্ণফুলী টানেল সংযোগ সড়ক হয়ে কালাবিবির দীঘির মোড়ে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী অফিসে গিয়ে শেষ হয়। দক্ষিণ জেলা যুবলীগ নেতা ও তাসনিয়া এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মোজাম্মেল হকের নেতৃত্বে এই মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের এক হাজারের অধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে যুবলীগ নেতা মোজাম্মেল হক বলেন, 'আনোয়ারা কর্ণফুলীর অভিভাবক সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ গণমানুষের নেতা। মন্ত্রিত্ব ও ক্ষমতার অপব্যবহার তিনি কখনো করেননি। অবহেলিত দুই উপজেলাকে তিনি উন্নয়নে আলোকিত করেছেন। প্রতিটি বাড়িঘরে তার উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। প্রতি শুক্রবার নিজ এলাকায় জুমার নামাজ আদায় ও নিজ বাসভবনে সপ্তাহে দুই দিন সাধারণ মানুষের কথা শুনতেন। এমন মানুষটাকে পেয়ে আমরা গর্বিত। আগামী ৭ জানুয়ারি আমরা নিজ দায়িত্বে কেন্দ্রে কেন্দ্রে গিয়ে প্রিয় নেতার বিজয়ে কাজ করব।'

ঘাটাইল (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি জানান, টাঙ্গাইল-৩ ঘাটাইল আসনে ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জমজমাট প্রচারণা শেষ হয়েছে। এই উপজেলায় পুরুষ ভোটারের চেয়ে মহিলা ভোটার সংখ্যা বেশি। তাইতো তাদের ভোট আদায় করার জন্য বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রতিশ্রম্নতি দেওয়া হচ্ছে।

টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলা অন্যান্য উপজেলা থেকে সমৃদ্ধ হওয়ার কারণে সবার নজর এখন ঘাটাইল উপজেলার দিকে। এই আসনে ৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এর মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান।

ভোটের মাঠে তিনি যোগ্যতায় হেভিওয়েট প্রার্থী। তাকে বিপুল ভোটে জেতানোর জন্য নাট্য জগতের শিল্পী সমাজ আওয়ামী লীগসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা নির্ঘুম রাত কাটিয়ে ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনা করছেন। অপরদিকে হেভিওয়েট স্বতন্ত্র প্রার্থী ঈগল প্রতীক নিয়ে রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক ধর্মবিষয়ক সম্পাদক আমানুর রহমান খান রানা।

এছাড়াও জাতীয় পার্টি মনোনীত আব্দুল হালিম রনি লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে লড়ছেন, ১৪ দলীয় জোট বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল মনোনীত প্রার্থী চাঁকা প্রতীক নিয়ে কমরেড সাখাওয়াত হোসেন সৈকত, বিএনএম মনোনীত জাকির হোসেন নোঙ্গর প্রতীকে ও পিপলস পার্টির হাসান মামুন আম প্রতীক নিয়ে রয়েছেন।

নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার বিষয়ে সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইরতিজা হাসান জানান, 'সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমার সকল প্রস্তুতি প্রায় শেষের দিকে। ভোট কেন্দ্রে যদি কেউ কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটায় তাহলে কঠোর হস্তে দমন করা হবে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে