আজকের যায়যায়দিন

মৌলভীবাজারের বাইক্কাবিলে ভিন দেশ থেকে আসা হাজার হাজার অতিথি পাখির কলকাকলীতে মুখরিত হয়েছে। পাখির কিচিরমিচিরে এক অদ্ভুত পরিবেশ তৈরি হয় বিলজুড়ে। বৃহস্পতিবার মাছের ভান্ডারখ্যাত জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার হাইল হাওড়ের এই অভয়াশ্রমে গেলে এমন দৃশ্য ক্যামেরায় ধরা পড়ে।

ভূমি মন্ত্রণালয়ের মালিকানাধীন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় পরিচালিত বিলে পুরো জানুয়ারি মাসজুড়ে পৃথিবীর দক্ষিণাঞ্চলের অস্ট্রেলিয়া, সাইবেরিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশ থেকে বালিহাঁস, খয়রা কাস্তে চরা, তিলা লালসা, গেওয়ালা বাটান, পিয়াং হাঁস, পাতি তিলা হাঁস, নীলমাথা হাঁস, উত্তরে লেঞ্জা হাঁস, গিরিয়া হাঁস, উত্তরে খুন্তিহাঁস, মরচে রং ভূতিহাঁস, মেটেমাথা টিটি, কালালেজ জৌরালি, বিল বাটান, পাতিসবুজলা, বন বাটান, পাতিচ্যাগা, ছোট ডুবুরি, বড় পানকৌড়ি, ছোট পানকৌড়িসহ নানা প্রজাতির বিভিন্ন রংয়ের পাখি অতিথি হয়ে আসে।

স্থানীয়রা জানান, বিল সংরক্ষণের অভাব, রাতের আঁধারে মৎস্য চুরি ও অতিথি পাখি নিধনের ফলে দিন দিন পাখির সংখ্যা কমে আসছে। খোদ মৎস্য অফিস ও জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের কিছু কর্মকর্তা মাছ চুরি ও পাখি নিধনের বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

বাইক্কায় কমলগঞ্জ, শ্রীমঙ্গল ও বরুনা থেকে আসা অর্ধ ডজন পর্যটক বলেন, 'এখানকার পরিবেশ মনোরম। পাশের হিজল বন ও বিলের জলে বিছানো শাপলা ফুলের সঙ্গে পাখিরা পলক তুলে এসে ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত হয়ে যেন আয়েশে রয়েছে। হঠাৎ এক সঙ্গে রঙিন ডানা তুলে আকাশে ভর করে বিচরণ করে তারা। এ সময়টাকে আমরা অনেক আনন্দে কাটাই।'

অভিযানেও প্রতিকার মিলছে না জীববৈচিত্র্যে বিরূপ প্রভাব / টাঙ্গাইলের পাহাড়ি টিলা হচ্ছে সমতল ভূমি!

মৌলভীবাজার শহর থেকে আসা পাখিপ্রেমী মামুনুর রশীদ মহসীন বলেন, 'অতিথিদের পলকে পলকে ডানা মেলে আকাশে উড়াটা দেখতে এসেছি। সেটা পেয়েছিও।' তিনি আরও বলেন, মাছ শিকার আর পাখি নিধন বন্ধ না হলে অতিথিরা জলাশয় থেকে হারিয়ে যাবে।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলী রাজিব মাহমুদ মিঠুন বলেন, 'জলাশয়ে আগে কী হয়েছে জানি না। আমি আসার পর থেকে সার্বক্ষণিক তদারকি করা হচ্ছে।'

২০০৩ সালে ভূমি মন্ত্রণালয় বিলটিকে মাছের অভয়াশ্রমের জলাশয় ঘোষণা করে। প্রায় ১শ হেক্টর আয়তনের এই জলাভূমিতে পাখি ছাড়াও রয়েছে দেশীয় প্রজাতির বোয়াল, রুই, শোল, চিংড়ি, কই, পাবদা, চিতলসহ নানা প্রজাতির মাছ।