বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১

পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী 'সাকরাইন' উৎসব আজ

যাযাদি রিপোর্ট
  ১৪ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
সাকরাইন উপলক্ষে শনিবার পুরান ঢাকায় ঘুড়ির্ যালির আয়োজন করা হয় -স্টার মেইল

সারাদিন ঘুড়ি ওড়ানোর পাশাপাশি সন্ধ্যায় বর্ণিল আতশবাজি ও রংবেরঙের ফানুসে ছেয়ে যাবে বুড়িগঙ্গা তীরবর্তী পুরান ঢাকার আকাশ। প্রতি বছর পৌষসংক্রান্তিতে ঐতিহ্যবাহী 'সাকরাইন উৎসব' ঘিরে এমনই আয়োজনে মেতে ওঠেন পুরান ঢাকার বাসিন্দারা। উৎসবের মূল আকর্ষণ ঘুড়ি ওড়ানো। এবারও এর ব্যতিক্রম হচ্ছে না। আজ রোববার অনুষ্ঠিত হবে এই উৎসব।

সাকরাইনে ভোরে সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে পুরান ঢাকার বাড়িগুলোর ছাদ থেকে শুরু হয় ঘুড়ি ওড়ানো। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আকাশ ছেয়ে যায় নানা রঙের ঘুড়িতে। আর সন্ধ্যার পর শুরু হয় আতশবাজি, আগুনের খেলা। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলতে থাকে এই কাটাকাটির খেলা। ঘরে ফেরার আগে যার ঘুড়ি টিকে থাকে; সে হয় বিজয়ী। ছাদেই আয়োজন করা হয় পোলাওসহ রকমারি রান্না।

শনিবার পুরান ঢাকার লক্ষ্ণীবাজার, নারিন্দা, ওয়ারী, সূত্রাপুর ও শাঁখারীবাজারসহ বিভিন্ন জায়গায় স্থায়ী দোকানের পাশাপাশি বসেছে ঘুড়ির অস্থায়ী দোকান। অলিগলি ও প্রধান সড়কের পাশে ফুটপাতেও বিক্রেতারা নানা রঙের ঘুড়ির পসরা সাজিয়ে বসেছেন। একাধিক বিক্রেতা জানান, এবার সাকরাইনের আগে ঘুড়ির বেচাকেনা বেশ ভালো।

ঘুড়ি বিক্রেতা অসীম সাহা বলেন, এবার সাকরাইনে মোটামুটি ভালোই বেচাকেনা হচ্ছে। তবে এ বছর ঘুড়ি, নাটাই ও সুতার দাম কিছুটা বেড়েছে। অন্যান্য বছরের মতো এবারও চশমাদার, কাউটাদার, পঙ্খিরাজ, প্রজাপতি, চক্ষুদার, বোয়াদার, পান, চ্যাপলা, নৌকা, ঈগল, সাদা ঘুড়ি, চারবোয়া, দুই বোয়া, টেক্কা, লাভ ঘুড়ি, মালাদার, দাবা ঘুড়ি, বাদুর, চিল, অ্যাংরি বার্ডসহ নানা নামের ঘুড়ি বাজারে এসেছে।

পুরান ঢাকার বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা যায়, সাধারণ ঘুড়ি প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে ৫ টাকা থেকে ৫০ টাকায়। বিদেশি ও নকশা করা ঘুড়ি বিক্রি হচ্ছে প্রতিটি ১৫০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকায়। একেকটি নাটাই মানভেদে ১৫০ টাকা থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর মাঞ্জা দেওয়া সুতা বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ৬০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকায়।

শাঁখারীবাজারের এক ঘুড়ি বিক্রেতা জানালেন, এ বছর ঘুড়ির দোকান আগের চেয়ে বেড়েছে। এবার ছোট-বড় মিলিয়ে ১২০টির মতো দোকান বসেছে।

চার বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে লালবাগ থেকে ঘুড়ি কিনতে আসা শরিফুল ইসলাম বলেন, 'সাকরাইনের আগে প্রতিবার ঘুড়ি কিনতে এখানে আসি। আমরা প্রায় ১ হাজার ২০০ টাকার চক্ষুধার, লাভ ও গোলচৌখ ঘুড়ি ও নাটাই কিনেছি।'

প্রাচীন উৎসবের মধ্যে পুরান ঢাকার সাকরাইন অন্যতম। এটা গোটা দেশে পালিত না হলেও সাকরাইন ঐক্য এবং বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবে দেখা হয়। শুধু ঢাকাতেই নয়; দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে পৌষসংক্রান্তির এই উৎসব পালনের রীতি চালু রয়েছে। নেপালে একে বলে মাঘি, থাইল্যান্ডে সংক্রান, লাওসে পি মা লাও, মিয়ানমারে থিং ইয়ান, কম্বোডিয়ায় মহাসংক্রান্তি ও ভারতে মকরসংক্রান্তি।

এদিকে শনিবার পৌষ সংক্রান্তি ও সাকরাইন উপলক্ষে ঘুড়ির্ যালির আয়োজন করে বাংলাদেশ ঘুড়ি ফেডারেশন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে