সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

ধুনটে নদীর গতিপথ বন্ধ করে অবৈধভাবে বালু বিক্রি!

ভেস্তে যাচ্ছে সরকারি প্রকল্প ভাঙনের কবলে ফসলি জমি
ধুনট (বগুড়া) প্রতিনিধি
  ১৫ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
বগুড়ার ধুনটে ইছামতি নদীর গতিপথ বন্ধ করে অবৈধভাবে কাটা হচ্ছে পাড়ের বালু ও মাটি -যাযাদি

বগুড়ার ধুনটে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নদী খনন প্রকল্পের বালু ও মাটি ট্রাকযোগে অবৈধভাবে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে এদিকে যেমন সরকারের কোটি কোটি টাকার প্রকল্প ভেস্তে যাচ্ছে, তেমনি নদীর দুই পাড়ের ফসলি জমি ভাঙনের কবলে পড়তে যাচ্ছে। তবে এসব বিষয়ে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না ভূমি মালিকরা।

জানা গেছে, ধুনট উপজেলার বাঙ্গালী ও ইছামতি নদীর নাব্য ফেরাতে সরকার কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নদী খনন প্রকল্পের কাজ হাতে নেয়। গত এক বছর আগে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানগুলো ওইসব নদী খনন করে বালু ও মাটি দিয়ে নদীর দুই পাড় বেঁধে দেয়। যাতে নদীর তীরবর্তী ফসলি জমিগুলো ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা পায়। কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালী ভূমিদসু্যরা ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উত্তোলনকৃত বাঙ্গালী ও ইছামতি নদীর দুই পাড়ের বালু এবং মাটি অবৈধভাবে বিক্রি করে আসছে।

সরেজমিন ধুনট পৌর এলাকার জিঞ্জিরতলা-দাসপাড়া গ্রামের ইছমতি নদীর ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, এক্সেভেটর মেশিন দিয়ে দিনে দুপুরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নদী খনন প্রকল্পের বালু ও মাটি বিক্রি করা হচ্ছে। অবৈধভাবে বালু ও মাটি বিক্রির জন্য ইছামতি নদীর মধ্যে রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। একারণে নদী পানি শূন্য হয়ে পড়ায় ভাটিতে অবস্থিত হাজারো হেক্টর ফসলি জমিতে পানি সেচ দেওয়া নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ধুনট পৌর এলাকার জিঞ্জরতলা গ্রামের সাবেক কাউন্সিলর আলামিন তরফদারের নেতৃত্বে অবৈধভাবে বালু ও মাটি বিক্রি করা হচ্ছে। গত তিন দিন প্রায় ৩শ' গাড়ি বালু বিক্রি করা হয়েছে। প্রতি গাড়ি বালু ও মাটির দাম নেওয়া হচ্ছে ৬শ' টাকা করে।

এ বিষয়ে ধুনট পৌরসভার জিঞ্জরতলা গ্রামের কৃষক মোহাম্মদ আলী, সোনা মিয়া, দাসপাড়া গ্রামের ফটিক চন্দ্র দাস ও নির্মল চন্দ্র দাস জানান, 'নদীর দুই পাড়ে আমাদের কৃষি জমি রয়েছে। জমি চাষাবাদ করে আমাদের সংসার চলে। কিন্তু নদীর মধ্যে রাস্তা বানিয়ে পানি প্রবাহ বন্ধ করে বালু বিক্রি করা হচ্ছে। এ কারণে ভাটিতে নদীর পানি শূন্য হওয়ায় আমাদের ফসলি জমিতে পানি সেচ দিতে পারছি না। এছাড়া নদী পাড়ের বালু ও মাটি বিক্রি করায় আমাদের কৃষি জমিগুলো আগামী বর্ষা মৌসুমেই ভাঙনের কবলে পড়তে যাচ্ছে। এ বিষয়ে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার মেলেনি।'

তবে এ বিষয়ে অভিযুক্ত সাবেক পৌর কাউন্সিলর আলামিন তরফদার বলেন, 'সব ম্যানেজ করেই বালু ও মাটি বিক্রি করা হচ্ছে।'

এ বিষয়ে ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশিক খান বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে দ্রম্নত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে