সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে ঋণ গ্রহীতাদের

ধামরাইয়ে সমবায় সমিতির আড়ালে প্রতারণার ফাঁদ

ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি
  ২৯ মার্চ ২০২৪, ০০:০০

ঢাকার ধামরাইয়ে সমবায় সমিতির মালিকদের প্রতারণার ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। অল্প সুদের প্রলোভন দিয়ে ঋণ দেওয়ার সময় ব্যাংক চেকে স্বাক্ষর নিয়ে তারপর ওই চেক অন্য কারও হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। আর ওইসব চেকে ইচ্ছামতো টাকার অঙ্ক বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে গ্রাহকের নামে মামলা। এতে ধামরাইয়ে এক নারী ২ মাস ৩ দিন জেল খেটেছে। আর সাটুরিয়ার 'রূপসী বাংলা ঋণ দান সমবায় সমিতি'তে ব্যাংক চেক রেখে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নেওয়া গোলাম মোস্তফার ব্যাংক চেকে ৩৫ লাখ ৫০ হাজার টাকার অঙ্ক বসিয়ে মামলার করার জন্য দেওয়া হয়েছে উকিল নোটিশ। নোটিশটি পাঠিয়েছেন ধামরাইয়ের আমতা ইউনিয়নের নান্দেশ্বরী গ্রামের রহিজ উদ্দিনের ছেলে ব্যবসায়ী সোহরাব হোসেন।

বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয়রা সমিতিতে রাখা ব্যাংক চেক কিভাবে ওই ব্যবসায়ীর কাছে গেল তা খতিয়ে দেখার দাবি জানিয়েছেন।

জানা গেছে, ধামরাইয়ের উপজেলা সমবায় অফিস থেকে 'গণজাগরণ সঞ্চয় ও লোনদান সমবায় সমিতি লি.' নামে রেজিস্ট্রেশন নিয়ে নওগাঁও গ্রামের মৃত আমান উলস্নাহর ছেলে আসাদ উলস্নাহ নওগাঁও বাজারে একটি অফিস নিয়ে কার্যক্রম শুরু করেন। এরপর ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা লোন দিতেন। আর লোনের বিপরীতে গ্রাহকের সই স্বাক্ষর করা ব্যাংক চেক নিতেন। এরপর ওই ব্যাংক চেকে ইচ্ছামতো অঙ্ক বসিয়ে দেন আদালতে মামলা। একই প্রতারণার ফাঁদে পড়েছেন ধামরাইয়ের পার্শ্ববর্তী সাটুরিয়া গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদের ছেলে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী গোলাম মোস্তফা। তিনি 'রূপসী বাংলা ঋণ দান সমবায় সমিতি' থেকে শর্ত মোতাবেক স্বাক্ষর করা ন্যাশনাল ব্যাংক সাটুরিয়া শাখার (টাকার অঙ্ক লেখা ছাড়া) চেক বইয়ের ৩৪৫২৫০৩ পাতা সমিতির অফিসের কর্মকর্তা ও মালিক মো. আয়নাল হকের কাছে জমা দিয়ে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নেন। চেক গ্রহণকালে বইয়ের মুড়িতে স্বাক্ষর করেন আয়নাল হক। পরে মোস্তফা ওই ঋণের টাকা পরিশোধ করে ঋণের বিপরীতে রাখা চেক ফেরত চান। এতে গ্রহীতার দেওয়া চেক খুঁজে পান না বলে জানান আয়নাল হক। প্রায় সপ্তাহ খানেক ঘোরাঘুরির পর জানতে পারেন জামানত রাখা চেকে অঙ্ক বসানো হয়েছে ৩৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা। দ্রম্নত ৩৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা না দিলে মামলার হুমকি দিয়ে উকিল নোটিশ পাঠানো হয় তার কাছে।

ভুক্তভোগী গোলাম মোস্তফা জানান, 'আমি সমিতিতে ব্যাংক চেক রেখে লোন নিলাম ৫০ হাজার টাকা। আর সেই চেক কীভাবে ধামরাইয়ের ওই ব্যবসায়ীর হাতে গেল আর কীভাবে বসানো হলো ৩৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এতে তিনি অবাক হন এবং যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা সমবায় অফিস ও আদালতে মামলা করেন।

এ ব্যাপারে রূপসী বাংলা সমবায় সমিতির মালিক ও কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করে তার বক্তব্য পাওয়া য়ায়নি। তবে অভিযুক্ত ৩৫ লাখ ৫০ হাজার টাকার দাবিদার সোহরাব হোসেন জানান, 'আমার কাছে জমি বিক্রির কথা বলে টাকা নিয়ে এই চেক তিনি নিজেই দিয়েছেন।'

এ বিষয়ে উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা ফিরোজুল আলম জানান, 'রূপসী বাংলা সমবায় সমিতি'র আয়নাল হকসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে চেক জালিয়াতির অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে