মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

মৌলভীবাজারে বর্ষিজোড়া ইকোপার্কে কোটি টাকার গাছ কাটার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল

স্টাফ রিপোর্টার, মৌলভীবাজার
  ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
মৌলভীবাজারে বর্ষিজোড়া ইকোপার্কে কোটি টাকার গাছ কাটার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল

মৌলভীবাজার শহরতলীর বর্ষিজোড়া ইকোপার্ক থেকে রাতের আধারে প্রতিনিয়ত প্রায় দেড় কোটি টাকার বৃক্ষ নিধনের ঘটনায় সংশিষ্ট তদন্ত কমিটি একটি প্রতিবেদন দাখিল করেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খোদ বিভাগীয় বন কর্মকর্তা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, 'চুরি হবার পাশাপাশি কিছু ঝড়ে পড়া গাছও ছিল। মোট ২০টির মতো বৃক্ষ কাটা গেছে।'

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ, সিলেট, (সদর দপ্তর, মৌলভীবাজার) এর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, চুরির ঘটনায় রেঞ্জ কর্মকর্তাসহ বন বিভাগের ২ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠিত হয়। মামলাও হয়েছে। প্রতিবেদন দাখিলের পর আমরা জবাব চেয়েছি তাদের কাছে। মূল বিষয়টি পরে জানা যাবে। মামলা কয়টা হয়েছে জানতে চাইলে বলেন, ৩/৪টি মামলা হয়েছে। কমিটির কাছে আমরা জানতে চেয়েছি বিষয়গুলো। কাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে এমনটি জানতে চাইলে তিনি আসামিদের নাম বলেননি এবং কবে নাগাদ জবাব আসতে পারে সেটাও বলেননি।

দীর্ঘদিন যাবৎ বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ, সিলেট, (সদর দপ্তর, মৌলভীবাজার) এর অধীন থাকা প্রায় দেড় কোটি টাকার মূল্যবান বৃক্ষ প্রতিনিয়ত কেটে পাচার করছে একটি সক্রিয় চক্র। বৃক্ষ চুরির ঘটনায় যায়যায়দিনে গেল ১০ ফেব্রম্নয়ারি 'মৌলভীবাজারের বর্ষিজোড়া ইকোপার্কে রাতের আধারে বৃক্ষ নিধন' শিরোনামে একটি প্রতিবেদন ছাপা হলে নড়েচড়ে বসে বনবিভাগ। এরপর থেকেই প্রতিবেদন দাখিল করতে কমিটিকে চাপ দেওয়া হয়।

বর্ষিজোড়া ইকোপার্কের গহিন বনে গেলে সরেজমিন দেখা যায়, ইকোপার্কের পেছনের মূল্যবান শাল গাছ কাটা হয়েছে। শুধু ওই স্থানের কাটা গাছ দেখে মনে হয়েছে, কিছু বৃক্ষ সম্প্রতি ও কিছু বৃক্ষ মাস ছয় আগের কাটা। এভাবে বনের বহু টিলায় গিয়ে দেখা যায়, বনের প্রায় ৩শ' গাছ উধাও হয়েছে। চালাক চোরেরা গাছ কেটে কোনো প্রমাণ রেখে যায়নি। বৃক্ষের ডাল-পালা তো দূরের কথা, কাটা স্থানের গাছের ছালও পাওয়া যায়নি। ওই বনে বেশি শাল গাছ থাকায় অনেকে এর নাম দিয়েছে শালবন। বনে দুইজন সশস্ত্র পাহারাদার থাকার পরও কিভাবে এত বৃক্ষ চুরি হয় এমন প্রশ্ন রেখেছেন স্থানীয়রা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি বলেন, পাহারাদারদের যোগসাজশে এসব বৃক্ষ চুরি হচ্ছে। তারা জানান, পুরনো একটি পূর্ণবয়স্ক চলিস্নশোর্ধ্ব শালের দাম এক লাখ টাকার ওপর। মধ্যবয়সি গাছ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের। এই হিসেবে ৩শ' বৃক্ষের দাম সর্বনিম্ন ৫০ হাজার টাকা করে ধরা হলে দাম পড়ে এক কোটি ৫০ লাখ টাকা।

ইকো পার্কের গোয়ালাবাড়ি এলাকার ফনি মালাকার বলেন, 'সারা বাগানেই গাছ কাটা হচ্ছে। কারা কাটে বলতে পারি না। আমরা সকালে কাজে যাই, রাতে বাড়ি ফিরি।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে