বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ৩১ বৈশাখ ১৪৩২
স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ

দুর্নীতি একেবারে নির্মূল সম্ভব নয়, আগামীতে কমে আসবে

যাযাদি রিপোর্ট
  ১৬ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
দুর্নীতি একেবারে নির্মূল সম্ভব নয়, আগামীতে কমে আসবে
দুর্নীতি একেবারে নির্মূল সম্ভব নয়, আগামীতে কমে আসবে

দুর্নীতি একেবারে নির্মূল করা হয়ত সম্ভব নয়- এমন মন্তব্য করে অন্তর্র্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ বলেছেন, প্রেসিডেন্টও দুর্নীতি করেন। তবে প্রিন্সিপালটা ঠিক করতে পারলে দুর্নীতির এই জায়গাটা অনেকটা সীমিত হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, মূলনীতি যদি আমরা ঠিক করে দিয়ে যেতে পারি এবং সেই ধারাবাহিকতায় চলতে থাকলে আমার বিশ্বাস আগামীতে দুর্নীতি কমে আসবে।

1

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার অফিসকক্ষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন।

দুর্নীতি বন্ধে কী ধরনের পদক্ষেপ নেবেন- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বলেন, ফাঁকফোকর দিয়ে যে দুর্নীতি হয়েছে, সেটা হয়ে গেছে। কিন্তু আগামীতে এমন হলে আমার নজরে নিয়ে আসবেন।

তিনি আরও বলেন, আমাদের সামনে 'টাস্ক' অনেক বড়। অনেকদিনের জঞ্জাল জমে আছে। এটা এক-দুই দিনে ঠিক হবে না। সবার সহযোগিতা থাকলে এটা ধাপে ধাপে সমাধান হবে।

হাসান আরিফ বলেন, কোনো পদক্ষেপ সঠিক হয়নি- এমন বিবেচনা থাকলে সেটা আমাদের জানালে আমরা পুনরায় বিবেচনা করব। প্রতিটি জায়গায়ই পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কোথায় বাজেট কত এবং কতদূর অগ্রসর হয়েছে, সেগুলোতে নজরদারি করা হবে।

তিনি বলেন, যখনই আমার কাছে ফাইল নিয়ে আসা হয় (বিশেষত প্রকল্পের ফাইল) সেগুলো আমি নিজে খুঁটিনাটি দেখে এরপর সই করি। অভিযোগ আছে, যে প্রকল্প হচ্ছে দুর্নীতি ও অপচয়ের একটা জায়গা, কেউ যদি এসে বলে প্রকল্পের সবকিছু ঠিক আছে স্যার, সই করে দেন; তাহলেও কিন্তু আমি সই করি না।

এই উপদেষ্টা আরও বলেন, আমরা যদি আইন অনুযায়ী কাজ করি, তাহলে কিন্তু দুর্নীতি অটোমেটিক্যালি থাকবে না। আইনে আছে যে, আপনি ১০০ টাকার কাজের ১০০ টাকারই কাজ করবেন। কিন্তু আমি যদি ৩০ টাকা ভাগাভাগি করে নেই, তাহলে সেখানে থাকল মাত্র ৭০ টাকা। আইনে তো এমন বলা নেই যে, ১০০ টাকা দিলে আপনি ৭০ টাকার কাজ করবেন এবং বাকি ৩০ টাকা দিয়ে আনন্দ-ফূর্তি করবেন। সুতরাং, আমরা যদি আইনের মধ্য থেকে কাজ করি, তাহলে দুর্নীতিতে বড় একটা বাধা আসবে। আইন থেকে বিচু্যত হলেই এটি প্রশ্নবিদ্ধ হবে।

তিনি বলেন, যেখানে একটি বড় বাজেট থাকে এবং কর্মকান্ড থাকে, সেখানে দুর্নীতির সুযোগ তৈরি হয়ে যায়। পথ খুলে যায়। সে জায়গাগুলো বন্ধ করা আমাদের জরুরি প্রয়োজন। যারা সরাসরি দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত, তাদের ব্যাপারে কী পদক্ষেপ নেওয়া যায়, সেগুলো আমরা দেখে ব্যবস্থা নেব।

দেশের চলমান পরিস্থিতিতে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে (সিইও) ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে বলে জানান স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ প্রোগ্রাম চলমান রয়েছে। মাঝখানে যেহেতু একটা বিরতি ছিল। অনেক জায়গাতেই মেয়র নেই। ডেঙ্গু বিশেষ করে ঢাকা সিটিতে যেহেতু ফোকাস থাকে, প্রোগ্রাম চলমান রয়েছে। যেহেতু এখন নতুন করে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, সিটি করপোরেশনের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসারকে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, যেখানে যা প্রয়োজন সেটা করবে।

তিনি আরও বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে তিনটি বিষয় রয়েছে। প্রথমটি হচ্ছে কাজে গতিশীলতা আনয়ন করা। দ্বিতীয়ত রেজাল্ট ওরিয়েন্টেড গতিশীলতা আনা। সিটি করপোরেশন থেকে ডেঙ্গুর বিষয়ে যারা কাজ করছেন, তাদের সঙ্গে বসব, প্রিভেন্টিভ মেজার কি নেওয়া যায়, এখানে গণমাধ্যমের একটা বিশেষ অবদান রয়েছে। সিটি করপোরেশন থেকে না হয় বিভিন্ন ডোবা নালায় ওষুধ ছিটানো হলো, বাসা বাড়ির ছাদে, জানালার টবে যে পানি জমে, সেখানে নাগরিক সচেতনতা প্রয়োজন। এই সচেতনতার জন্য গণমাধ্যমের সহযোগিতা প্রয়োজন।

স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বলেন, প্রিভেনটিভ মেজর শক্তিশালী হলে যারা অসুস্থ আছেন, তাদের চিকিৎসা সীমিত হয়ে আসবে। হেলথ সেক্টরের সঙ্গে ক্লোজ কো-অর্ডিনেশন প্রয়োজন। এখন যেহেতু ডেঙ্গু সেই পর্যায়ে নেই, আমাদের যেন সেই ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে না হয়, কোভিডের সময় আমরা যে আস্ফালন শুনেছিলাম, আমাদের কাছে ৫০ কোটি মাথা ধরার ট্যাবলেট রয়েছে, যেটা দিয়ে আমরা করোনা মোকাবিলা করব, সেই অবস্থা যেন আর না হয়। সে বিষয়ে আমরা সচেতন রয়েছি। হেলথ সেক্টরের সঙ্গে আমরা কো-অর্ডিনেট করব। ডেঙ্গু বিষয়ে সবারই উদ্বিগ্নতা রয়েছে, এটা যে কারও হতে পারে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে