দিনাজপুরের পার্বতীপুরে মধ্যপাড়া খনিতে রেকর্ড পরিমাণ পাথর উৎপাদন হয়েছে। খনিতে প্রতিমাসে গড়ে এক লাখ ২৩ হাজার মে. টন পাথর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে চলতি সালের অক্টোবর মাসে রেকর্ড পরিমাণ অর্থাৎ প্রায় দেড়লাখ মে. টন পাথর উৎপাদন করা হয়। এর আগে কখনই এক মাসে এত বিপুল পরিমাণ পাথর উৎপাদন হয়নি। খনির উৎপাদনকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জিটিসি খনি ভূগর্ভে বিশ্বমানের অত্যাধুনিক মাইনিং ইকু্যইবমেন্ট বসানোর পাশাপাশি ইউরোপিয়ান সুদক্ষ প্রকৌশলীদল ও দক্ষ খনি শ্রমিকদের নিরলস প্রচেষ্টায় এটা সম্ভব হয়েছে।
অন্য দিকে খনি ইয়ার্ডে প্রায় ১০ লাখ ৩০ হাজার মে. টন পাথরের মজুদ গড়ে উঠেছে। এরমধ্যে রেলপথে ব্যবহৃত বস্নাস্ট এবং নদীশাসন কাজে ব্যবহৃত বোল্ডার রয়েছে প্রায় সাড়ে আট লাখ মে. টন। এই দুই সাইজের পাথর বিক্রি একেবারেই কমে যাওয়ায় অর্থসংকটে পড়েছে খনি কর্তৃপক্ষ। ধারদেনা করে ঠিকাদারের বিল ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনভাতা দিতে হচ্ছে। দ্রম্নত এসব পাথর বিক্রীতে গতি বাড়াতে না পারলে স্থানীয়ভাবে কিছুদিনের মধ্যে খনির উৎপাদনও বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। খনিটি বন্ধ হয়ে গেলে জিটিসির অধীনে খনিতে কর্মরত প্রায় এক হাজার শ্রমিক, কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মহীন হয়ে পড়বে। পাশাপাশি খনি কর্তৃপক্ষের লোকসানের পালস্না ভারী হবে এবং খনি রক্ষণাবেক্ষণ করতে গিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জিটিসিকেও মোটা অঙ্কের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।
জানা গেছে, মধ্যপাড়া খনি থেকে ৫-২০ (৩-৪) মিমি, ২০-৪০ মিমি, ৪০-৬০ মিমি (বস্নাস্ট), ৬০-৮০ মিমি ও বোল্ডার এই পাঁচটি সাইজে পাথর উত্তোলন করা হয়। এছাড়াও বাইপ্রডাক্ট হিসেবে ০-৫ মিমি/স্টোন ডাস্ট উৎপাদিত হয়। ৫-২০ মিমি, ২০-৪০ মিমি পাথরের মজুদ শেষ। ৬০-৮০ মিমি ও স্টোন ডাস্ট রয়েছে প্রায় এক লাখ ৮০ হাজার মে. টন। এগুলোর ক্রেতা রয়েছে। সমস্যা দেখা দিয়েছে রেলপথে ব্যবহৃত বস্নাস্ট এবং নদীশাসনের কাজে ব্যবহৃত বোল্ডার নিয়ে। এসব পাথরের বিক্রি একবারে কমে গেছে। বস্নাস্ট ও বোল্ডারের অন্যতম ক্রেতা বাংলাদেশ রেলওয়ে ও পানি উন্নয়ন বোর্ড। সরকারি নির্দেশনা থাকার পরও এ দুই প্রতিষ্ঠান মধ্যপাড়ার পাথর ঠিকমতো ব্যবহার করতে চায় না। এ জন্য সরকারের উচ্চ মহলের জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণ প্রয়োজন বলে খনির একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান।
মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পান লিমিটেডের (এমজিএমসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফজলুর রহমান জানান, বস্নাস্ট ও বোল্ডার নিয়ে তারা সমস্যায় পড়েছেন। রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কয়েকদফা বৈঠক হয়েছে। শিগগির তারা পাথর নিতে পারে বলে আশ্বস্ত করেছে।