সৈয়দপুরসহ নীলফামারী জেলা-উপজেলাগুলোর হাট-বাজারে সয়লাব হয়ে গেছে কেমিক্যাল ও ক্ষতিকর উপাদানে তৈরি মুখরোচক শিশুখাদ্যে। বিএসটিআইর অনুমোদনহীন এসব শিশু খাদ্যপণ্য ছড়িয়ে পড়ছে সর্বত্র। বর্তমানে এ ব্যবসা শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে। এ ঘটনায় স্থানীয় অভিভাবকরা ক্ষতিকর খাদ্যপণ্য বিপণন বন্ধের পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। সচেতন মহলও এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার তাগিদ দিয়েছেন। তাদের মতে, এসব চটকদার মোড়কের পণ্য সামগ্রী খেয়ে শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে পেটেরপীড়া, ডায়রিয়াসহ নানা অসুখে, যা শিশু স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এমনই ক্ষতিকর শিংশুখাদ্য খেয়ে অসুস্থ্য হয়ে পড়ায় প্রায়ই তাদের প্রাইভেট চিকিৎসক ও হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়। এসব অসুস্থতার জন্য অস্বাস্থ্যকর খাদ্য খাওয়াকে দায়ী বলে ধারণা পোষণ করছেন চিকিৎসকরা।
জানা যায়, সৈয়দপুর শহরের বিভিন্ন পাড়া-মহলস্ন্নায় এবং গ্রামাঞ্চলে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে লজেন্স, চুইংগাম, চাটনি, চানাচুর, চিপস, সন্দেস, ললিপপ, চিড়া, মুড়ির নাড়ু, কোমল পানীয়, জেলি জুসসহ বিভিন্ন পণ্য তৈরির ছোট-বড় অসংখ্য ফ্যাক্টরি। অভিযোগ রয়েছে, এসব ফ্যাক্টরিতে দেশের নামি-দামি কোম্পানির নকল মোড়কে তাদের তৈরি নিম্নমানের বিস্কিট, চানাচুর, চিপস, চকলেট, ললিপপসহ ফাস্টফুড প্যাকেট করে সৈয়দপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করছেন। এমনকি এসব ফ্যাক্টরিতে মানহীন ও অস্বাস্থ্যকর পণ্য তৈরি হলেও অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের নেই কোনো বৈধ অনুমোদন। এসব প্রতিষ্ঠানের মালিকরা প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে ওইসব পণ্য তৈরি করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। তৈরি করা এসব পণ্য আকর্ষণীয় মোড়কে পলিপ্যাকে প্যাকেটজাত করে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে হাট-বাজারে। এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী ও ফ্যাক্টরি মালিক এসব পণ্য বাজারজাত করে আং্গুল ফুলে কলাগাছ হলেও স্বাস্থ্যঝুঁকির হুমকিতে পড়ছে কোমলমতি শিশুরা।
মুখরোচক এসব শিশু খাদ্যের চাহিদা প্রচুর থাকায় এখানকার অসাধু উৎপাদনকারী বিএসটিআই ও অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন ছাড়াই ক্ষতিকর এসব উৎপাদন করে তা বিক্রি করছেন নির্বিঘ্নে। এসব নিম্নমানের পণ্যের বেচাকেনা বাড়াতে খুচরা ব্যবসায়ীদের আকৃষ্ট করতে লাভজনক লোভনীয় নানা অফারও রেখেছে তাদের উৎপাদিত পণ্যে।
সৈয়দপুর শহরের বিশিষ্ট শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আবু আহমেদ মর্তুজা সংবাদকর্মীদের জানান, রঙ মেশানো আর্কষণীয় মুখরোচক বিভিন্ন শিশুখাদ্য শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এসব খাদ্য খেলে পেটেরপীড়া, ডায়রিয়াসহ পরিপাকতন্ত্র মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর প্রভাবে ক্যানসার, কিডনি ও চর্মরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাসহ জীবননাশের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
স্থানীয় সূধীমহল প্রশাসনের আশু নজরদারি কামনা করে অভিযান চালিয়ে এসব রঙ মেশানো ও নিম্নমানের খাদ্য বাজারজাত বন্ধ করে জন-স্বাস্থ্যকে হুমকির হাত থেকে রক্ষার দাবি জানিয়েছেন।