বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
নীলফামারী জেনারেল হাসপাতাল

৫ বছরেও কাজে আসেনি ৩০ কোটি ৫০ লাখ টাকার ভবন

এসএ প্রিন্স, নীলফামারী
  ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
নীলফামারীতে জেনারেল হাসপাতালটির একটি নতুন ভবন ৫ বছরেও কাজে আসেনি -যাযাদি

নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালটি চিকিৎসাসেবার একমাত্র ভরসা জেলার ২২ লাখ মানুষের। ২৫০ শয্যার হাসপাতালটির কার্যক্রম চলছে ১৫০ শয্যা দিয়ে। প্রতিনিয়ত রোগীর চাপে শয্যা সংকটে ভোগান্তি বাড়লেও পাঁচ বছরের অধিক সময় ধরে পড়ে আছে ৩০ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত নতুন একটি ভবন।

২০১১ সালে জেলার সদর হাসপাতালটি ১০০ শয্যা থেকে জেনারেল হাসপাতাল হিসেবে ২৫০ শয্যায় উন্নীত হয়। এরপর শয্যা বাড়াতে ২০১৩ সালে ৩০ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে নতুন একটি ভবন নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। সে বছরের ২৫ জুলাই নির্মাণকাজ শুরু হলে সমাপ্তে পেরিয়ে যায় পাঁচ বছরের অধিক সময়। আটতলা ভিত্তির ছয়তলা নির্মাণকাজ শেষে ২০১৯ সালের ৯ এপ্রিল হস্তান্তর হয়। এরপর থেকে শুধু আসবাবপত্র আর শয্যার অভাবে পাঁচ বছরের অধিক সময় পড়ে আছে ভবনটি। ফলে পুরাতন ১০০ শয্যার অবকাঠামোতে আরও ৫০ শয্যা বৃদ্ধি করে ১৫০ শয্যায় গাদাগাদি করে চলে চিকিৎসা সেবা।

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, হাসপাতালের ১০০ শয্যার পুরাতন দ্বিতল একটি ভবনে চলছে রোগীর চিকিৎসা কার্যক্রম। রোগীর চাপ বাড়ায় ওই অবকাঠামোতে বৃদ্ধি করা হয়েছে আরও ৫০টি শয্যা। এরপরও শয্যা সংকটে ওয়ার্ডের মেঝে এবং বারান্দায় ঠাঁই হয়েছে আগত রোগীর। এমন চিত্রটি প্রতিদিনের বলে জানান কর্মকর্তারা। পুরাতন ওই ভবনটির পাশে দাঁড়িয়ে আছে সাত তলার একটি নতুন ভবন। আটতলা ভিত্তির ছয়তলা নির্মাণ করা হয় প্রথম দফায়। এরপর সম্প্রতি উন্নীত হয় সাত তলায়। নতুন ওই ভবনের প্রথম এবং দ্বিতীয় তলায় আউটডোর এবং অফিসিয়াল কিছু কার্যক্রম পরিলক্ষিত হয়। আসবাবপত্র এবং শয্যার অভাবে চালু হয়নি সেখানে নির্মিত বিভিন্ন ওয়ার্ড।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালে কর্মরত এক সেবিকা বলেন, '২৫০ শয্যার এ হাসপাতালে এখন ১৫০ খানা বিছানা আছে। অতিরিক্ত রোগীর চাঁদর নেই, কম্বল নেই, খাট নেই। এজন্য বারান্দা এবং মেঝেতে রোগী রাখতে হচ্ছে। এতে করে রোগীর যেমন ভোগান্তি তেমনি কর্তব্যরতরা নানা সমস্যায় পড়েন'।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মো. আবু আল হাজ্জাজ জানান, নতুন ভবনের হস্তান্তরের কিছুদিন পর করোনা মহামারী শুরু হয়। তখন ওই নতুন ভবনে আইসোলেশন সেন্টার করা হয়েছিল। এ সময় সেটিতে সেণ্ট্রাল অক্সিজেন ব্যবস্থা চালু করা হয়। এখন নতুন ভবনে জরুরি বিভাগ, ফার্মেসি, টিকিট কাউন্টারসহ কয়েকটি বিভাগ চালু করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় বিছানাসহ আসবাবপত্র ও যন্ত্রপাতি স্থাপন না হওয়ায় সেখানে রোগী নেওয়া যাচ্ছে না।

তিনি বলেন, 'ভবনটির ছয় তলা পর্যন্ত কাজ শেষে সপ্তম তলার কাজ চলমান আছে। অষ্টম তলার বরাদ্দ হলে সেখানে ৪০টি কেবিন হবে। সপ্তম তলায় থাকবে তিনটি ইউনিট। এর মধ্যে ১০ শয্যার আইসিইউ বেড, ২০ বেডের আইসোলেশন ওয়ার্ড ও ১০ শয্যার কিডনি ডায়ালোসিস বেড থাকবে। সব মিলে নতুন ভবনে ৮০টি শয্যার জন্য আসবাবপত্রসহ অন্যান্য মালামাল ক্রয়ের টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে ইতোমধ্যে। আশা করছি, আগামী মাসের মধ্যে সেটি চালু করা সম্ভব হবে'।

রোগীর চাপের বিষয়ে বলেন, 'বহির্বিভাগে প্রতিদিন গড়ে এক হাজার রোগী দেখতে হয়। জরুরি বিভাগেও প্রতিদিন গড়ে ২৫০ থেকে ৩০০ রোগী দেখতে হয়। ৫৮ জন চিকিৎসকের পদে কর্মরত আছেন ২৭ জন। সেবিকা সমস্যা না থাকলেও সংকট আছে পরিচ্ছন্নতা কর্মীর। এ পদে ৪৪ জনের স্থলে আছেন ২২ জন'।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে