গত কয়েক বছর ধরে বন্ধ রয়েছে হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলা পাবলিক লাইব্রেরি। বছরের পর বছর ধরে বন্ধ থাকায় পাবলিক লাইব্রেরীর মূল্যবান বইপত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বন্ধ থাকার কারনে আগ্রহীরা এখানে এসে কিংবা এখান থেকে নিয়ে গিয়ে বই পড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কবে চালু হবে তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিদিষ্ট করে বলতে পারে না।
জানা যায়, ২০১৮ সালে মাধবপুরের তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তামোখলেছুর রহমান উপজেলা পাবলিক লাইব্রেরীটি প্রতিষ্ঠা করেন। হবিগঞ্জের সাবেক জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হাসান মুরাদ এটি উদ্বোধন করেন। অল্প কিছু বই নিয়ে লাইব্রেরিটি যাত্রা শুরু করলেও পরে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি প্রায় ৩ লাখ টাকা মূল্যের দেশী বিদেশী লেখকদের লেখা মানসম্মত বই প্রদান করেন। একই সঙ্গে লাইব্রেরিতে বসে বই পড়ার সুবিধার্থে রিডিং টেবিল ও বসার জন্য বেশকিছু চেয়ারও ব্যবস্থা করেন। শুরুতেই লাইব্রেরিটি পাঠকদের পদচারণায় বেশ জমজমাট থাকলেও ধীরে ধীরে এটির কার্যক্রম স্থিমিত হয়ে পড়ে। ২০২০ সালে একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়।
শুরুর দিকে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১০০ টাকা ও অন্যদের কাছ থেকে ২০০ টাকা করে সদস্য ফি নিয়ে লাইব্রেরিটির কার্যক্রম চালু হয়। তখন রাতারাতি এটির সদস্য সংখ্যা ৯০০ ছাড়িয়ে যায়। তখন আরও কিছু বই কেনা হয়। বইয়ের সংখ্যাও তখন ৫০০ ছাড়িয়ে যায়। ২০২০ সালের ১৮ মার্চ করোনা পরিস্থিতিতে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা হলে উপজেলা পাবলিক লাইব্রেরিটিও বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর আজ পর্যৗল্প পুনরায় চালু করার কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এই দীর্ঘসময়ে লাইব্রেরিটিতে থাকা মূল্যবান বইপত্রের কি পরিনতি হয়েছে তা জানে না কেউ। বর্তমানে ধুলো ময়লা আর আবর্জনায় একাকার ও বেহাল দশা লাইব্রেরিটির।
উপজেলা পাবলিক লাইব্রেরিতে শুরুর দিকে লাইব্রেরিয়ান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন মির্জা হাসান আলী। একটি সূত্র জানিয়েছে লাইব্রেরিয়ানের জন্য ৩ হাজার টাকা সম্মানী নির্ধারণ করে কর্তৃপক্ষ। কয়েকমাস সম্মানীর টাকা দেওয়া হলেও পরে তহবিল না থাকায় তার সম্মানী প্রদানও বন্ধ হয়ে যায়। এ অবস্থায়ও মির্জা হাসান লাইব্রেরিটির দায়িত্ব পালন করে গেছেন।
মির্জা হাসান জানান, 'মূলত লাইব্রেরিটির মাধ্যমে তরুণ প্রজম্মের মধ্যে পাঠ্যাভ্যাস গড়ে তোলার ও জ্ঞান বিকাশের লক্ষ্যেই এটির সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে ফেলি।'
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ বিন কাশেম জানান, 'আমি কিছুদিন আগে মাধবপুরে যোগদান করেছি। উপজেলা পাবলিক লাইব্রেরির বিষয়ে আমি খোঁজখবর নিয়ে দেখব।'