দিনাজপুর চিরিরবন্দর উপজেলায় শিক্ষা অফিসারের কার্যালয় হতে বিনামূল্যে সরকারি বই বিতরণে উপজেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান ও প্রতিনিধি শিক্ষকদের কাছে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, ১ জানুয়ারী সারাদেশে সরকারের নির্দেশনায় বিনামূল্যে বই বিতরণ করা হবে। সেই সরকারি বই উপজেলা শিক্ষা অফিস হতে সংগ্রহ করার সময় প্রতেক বেসরকারি কিন্ডারগার্টেন স্কুল প্রধান ও পরিচালকদের কাছে এক হাজার টাকা ও সরকারি প্রার্থমিক বিদ্যালেয়ের প্রধান শিক্ষকদের কাছে ৫০ টাকা চা নাস্তা খাবার জন্য নেওয়া হয়েছে।
মেহের হোসেন রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুলের বই নিতে আসা প্রতিনিধি রাসেল ইসলাম বলেন, 'আমাদের স্কুলের বই নিতে উপজেলা শিক্ষা অফিসে যাই। অফিসের অফিস সহকারী এক হাজার টাকা চান। পরে ৫০০ টাকা দিয়ে বই আনি।' নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক বেসরকারি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের পরিচালক বলেন, উপজেলায় প্রায় ৮০টি কিন্ডারগার্টেন স্কুল আছে। সরকারি বই নিতে উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার সাজ্জাদ হোসেনের নির্দেশনায় অফিস সহকারী শাহজাহান ১ হাজার টাকা করে নেন। টাকা না দিলে বই দেবে না এমন কথায় বাধ্য হয়ে টাকা দিয়ে বই নিয়ে আসেন।
আউলিয়া পুকুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাসান আলী বলেন, স্কুলের বই নেওয়ার জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারী শাহজাহান ৫০ টাকা করে নিয়েছেন। এবার তবুও কম নিয়েছে। গতবার বেশি নিয়েছিলেন।
উপজেলা শিক্ষা অফিসারে অফিস সহকারী শাহজাহান বলেন, 'আমাকে এটিও স্যার টাকা তুলতে বলেছেন, আমি তুলছি। তবে সবাই ১ হাজার টাকা করে দেয়নি।'
উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার সাজ্জাদ হোসেনে সরকারি বই দিয়ে টাকা নেয়ার কথা শিকার করে বলেন, 'আমরা কোন প্রতিষ্ঠান প্রধান বা বেসরকারি কিন্ডারগার্টেন স্কুলে পরিচালক বা প্রধান শিক্ষকদের কাছে জোর করে টাকা দাবি করিনি। অফিসে অফিস সহকারীরা কাজ করছেন। তাদের জন্য চা নাস্তা খাবার বাবদ বেসরকারি কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলো কেউ একশ', দুইশ', ৫০০ টাকা দিয়েছে। কেউ আবার দেয়নি। কেউ আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।' সরকারি প্রাইমারি স্কুল থেকে বই দিয়ে টাকা নিছেন কেন জানতে ছাইলে তিনি বলেন, 'যারা বইয়ের বিতরণের জন্য কাজ করে তাদের খাবারের জন্য সরকারি কোন বরাদ্দ থাকে না তাই নেওয়া হয়েছে।'
চিরিরবন্দর বেসরকারি কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও মেহের হোসেন রেসিডেন্সিয়াল স্কুলের অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান বলেন, উপজেলা শিক্ষা অফিস প্রতিবার সরকারি বই দেওয়ার সময় টাকা নেয়। এবারো টাকা দিয়ে বই নিতে হয়েছে।'
চিরিরবন্দর উপজেলা শিক্ষা অফিসার মিনারা বেগম বলেন, 'বই দেওয়ার নাম করে টাকা নেওয়া হয়েছে শুনেছি। তবে আমার কাছে কোন প্রতিষ্ঠানের পরিচালক বা প্রধান শিক্ষক কিছু জানাননি। অভিযোগ করলে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'