রোববার, ০৪ মে ২০২৫, ২১ বৈশাখ ১৪৩২

গৌরীপুরে নকল ফ্রম্নট জুস কারখানার সন্ধান

কারখানা সিলগালা জরিমানা ও জেল
গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
  ০৬ মার্চ ২০২৫, ০০:০০
গৌরীপুরে নকল ফ্রম্নট জুস কারখানার সন্ধান

বাইরে থেকে দেখলে মনে হয় কোন একটি সাদামাটা গোডাউন। দেখে বুঝার উপায় নেই চারপাশে টিনের বেড়ার আড়ালে তৈরি হচ্ছে বিষাক্ত কেমিক্যালের শিশু খাদ্য ফ্রম্নট জুস ও কোমল পানীয়।

ময়মনসিংহের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) এর তথ্যের ভিত্তিতে গৌরীপুর সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সুনন্দা সরকার প্রমা মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার ডৌহাখলা ইউনিয়নের রুকনাকান্দা গ্রামে অবস্থিত সন্দেহভাজন এই কারখানায় অভিযান চালান। নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না তিনি, সেখানে উপস্থিত সবাই হতভম্ব বনে যান। বিশাল কারখানায় স্তরে স্তরে সাজানো নামীদামী ব্রান্ডের ম্যাংগো জুসের বোতল। তৈরির অপেক্ষায় আরও হাজারো বোতল, বিশাল ড্রাম ভর্তি জুস, কিন্তু পুরো কারখানায় তলস্নাশি করেও অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি একটি আমের। তারা সম্পূর্ণ কেমিক্যাল দিয়ে দিনের পর দিন তৈরি করছে ম্যাংগো জুস। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এম সাজ্জাদুল হাসান, গৌরীপুর অস্থায়ী সেনা ক্যাম্পের ইনচার্জ মেজর শাদমান, গৌরীপুর থানার পুলিশ, এনএসআইয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিএসটিআইয়ের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ।

আটক করা হয়েছে অবৈধ এই কারখানার মালিক দুলাল উদ্দিন আহমেদকে (৪৩)। তিনি গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলার গোমনা গ্রামের মৃত আফাজ উদ্দিনের ছেলে। দীর্ঘদিন যাবত তিনি গৌরীপুর ও আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় বিষাক্ত কেমিক্যাল দিয়ে তৈরি করছেন ফ্রম্নট জুস ও চাবান পানীয়। গ্রামের বাজারগুলোই তার প্রধান টার্গেট। রোজা ও ঈদে ফ্রম্নট জুসের চাহিদা থাকে বেশি, তাই রোজার একমাস আগে থেকেই উৎপাদন বৃদ্ধি করেছেন। হাজার হাজার বোতল জুস প্রতিদিন বাজারে সরবরাহ করেন তিনি।

বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্র্ড‌স এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউট (বিএসটিআই) ময়মনসিংহ মাঠ কর্মকর্তা প্রকৌশলী শাওন কুমার ধর আবীর জানান- এই কারখানাটি বিএসটিআইয়ের অনুমোদনের জন্য কোন আবেদনই করেনি, তারপরও তাঁরা মোড়কে বিএসটিআইয়ের লগো ব্যবহার করছে, যা শাস্তি যোগ্য অপরাধ।

এসিল্যান্ড এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সুনন্দা সরকার প্রমা জানান- ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কারখানার মালিক দুলাল উদ্দিন আহমেদকে এক লাখ টাকা জরিমানা ও তিন মাসের কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। কারখানাটি ময়মনসিংহ বিএসটিআইয়ের তত্বাবধানে সীলগালা করে দেওয়া হয়। ইউএনও সাজ্জাদুল হাসান বলেন- এখানে সম্পূর্ণ বিষাক্ত কেমিক্যাল দিয়ে ফ্রম্নট জুস তৈরি করা হচ্ছিল, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে এসিল্যান্ড প্রথমে অভিযান চালায়। জব্দকৃত সহস্রাধিক জুসের বোতল, জুস উৎপাদনের কেমিক্যাল, রং বিনষ্ট করে, অবৈধ কারখানাটি স্থায়ীভাবে সীলগালা করা হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে